শুটার মাসুদ বাহিনীর দৌরাত্ম্যে নিরাপত্তাহীনতায় সাংবাদিকরা

নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জে শুটার মাসুদ বাহিনীর দৌরাত্ম্যে নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছেন সাংবাদিকরা। দু’জন সাংবাদিকের ওপর হামলা ও গুলিবর্ষণের ঘটনার পরও তাদের কেউ গ্রেপ্তার হয়নি।
জানা যায়, উপজেলার বিভিন্ন স্থানে প্রতিদিন মোটরসাইকেল নিয়ে অস্ত্রের মহড়া দিচ্ছে শুটার মাসুদ বাহিনীর সদস্যরা। এতে আতঙ্কিত হয়ে পড়েছেন সাংবাদিকরা। রূপগঞ্জ প্রেস ক্লাবে এ বাহিনীর হামলার আশঙ্কাও করা হচ্ছে। তাদের মহড়ায় ভীত-সন্ত্রস্ত হয়ে পড়েছে সাধারণ মানুষ। কিন্তু প্রশাসন নির্বিকার। এ বাহিনীর বিরুদ্ধে অস্ত্রসহ বেশ কয়েকটি মামলা থাকার পরও পুলিশ তাদের গ্রেপ্তার করছে না। সাংবাদিক জাহাঙ্গীর মাহমুদ ও মীর শফিকুল ইসলামের ওপর হামলা, নির্যাতন ও গুলিবর্ষণের ঘটনার পর আরও বেপরোয়া উঠেছে তারা। এ বাহিনীর অব্যাহত হুমকির মুখে নিরাপত্তাহীনতায় রয়েছেন রূপগঞ্জের সাংবাদিকরা। 
রূপগঞ্জের কর্মরত সাংবাদিকদের পক্ষ থেকে রূপগঞ্জ প্রেস ক্লাবে হামলার আশঙ্কায় ও জীবনের নিরাপত্তা চেয়ে গত বুধবার রাতে বাংলাভিশন টেলিভিশনের রূপগঞ্জ প্রতিনিধি ও দৈনিক ইনকিলাব পত্রিকার স্টাফ রিপোর্টার খলিল সিকদার রূপগঞ্জ থানায় সাধারণ ডায়েরি করেছেন। 
খলিল সিকদার অভিযোগ করেন, ছাত্রদলের নাম ভাঙিয়ে মাসুদুর রহমান ওরফে কাইল্লা মাসুদ ওরফে শুটার মাসুদসহ তার বাহিনীর সদস্যরা এলাকায় ত্রাসের রাজত্ব কায়েম করছে। এ বাহিনীর অত্যাচারে অতিষ্ঠ হয়ে পড়েছে এলাকার সাধারণ মানুষ। ভয়ে কেউ প্রতিবাদটুকু করার সহাস পায় না। এ বাহিনীর সদস্যদের বিরুদ্ধে বিভিন্ন সময় বিভিন্ন অপরাধ নিয়ে সংবাদ প্রকাশ করায় এবং ২ লাখ টাকা চাঁদা না দেওয়ায় গত ১৭ নভেম্বর ও ১ ডিসেম্বর কালবেলার সাংবাদিক জাহাঙ্গীর মাহমুদের ওপর দুই দফা হামলা, নির্যাতন ও গুলিবর্ষণের ঘটনা ঘটায় শুটার মাসুদসহ তাঁর বাহিনীর সদস্যরা। এ ছাড়া ২৯ ডিসেম্বর রাতে নয়াদিগন্তের সাংবাদিক মীর শফিকুল ইসলামের ওপরও হামলা চালায় এ বাহিনীর সদস্যরা। এ ছাড়া বিভিন্ন স্থানে ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে তাদের বিরুদ্ধে রূপগঞ্জ থানায় তিনটি মামলা ও দুটি সাধারণ ডায়েরি করা হয়। 
পরে হামলা, নির্যাতন ও গুলিবর্ষণের ঘটনার প্রতিবাদে এবং হামলাকারীদের গ্রেপ্তারের দাবিতে গত মঙ্গলবার মানববন্ধন-বিক্ষোভ কর্মসূচি ঘিরে শুটার মাসুদসহ তার বাহিনীর সদস্যরা এলাকায় মহড়া দিয়ে জনমনে আতঙ্কের সৃষ্টি করে। এলাকায় মহড়া দিলেও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা তাদের গ্রেপ্তার করছে না। সন্ত্রাসীদের হুমকির মুখে নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছেন সাংবাদিকরা। 
তবে মাসুদুর রহমান ওরফে শুটার মাসুদের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি তার বিরুদ্ধে করা অভিযোগ সম্পূর্ণ মিথ্যা বলে দাবি করে। 
এ বিষয়ে নারায়ণগঞ্জ জেলা সহকারী পুলিশ সুপার (সি-সার্কেল) মেহেদী হাসান বলেন, সাংবাদিকদের ওপর হামলার ঘটনায় মামলার আসামিদের গ্রেপ্তার করতে অভিযান চলছে। তাদের শিগগির গ্রেপ্তার করে আইনের আওতায় আনা হবে।