চাল আমদানির পরও কমেনি দাম, বিক্রি হচ্ছে চড়া দামেই

ছবি: সমকাল
হাকিমপুর (দিনাজপুর) সংবাদদাতা
প্রকাশ: ০৭ ডিসেম্বর ২০২৪ | ১৭:১৩
দেশের বাজারে চালের দাম নিয়ন্ত্রণে রাখতে সরকার গেল মাসে চাল আমদানিতে শুল্ক প্রত্যাহার করে। ১১ নভেম্বর থেকে হিলি স্থলবন্দর দিয়ে শুরু হয় চাল আমদানি। দাম কমার আশায় ছিল নিম্ন ও মধ্যবিত্তরা। কিন্তু আমদানি শুরুর প্রায় একমাস হলেও পাইকারি ও খুচরা পর্যায়ে নেই এর প্রভাব। বাজারে আগের সেই চড়া দামে বিক্রি হচ্ছে সব ধরনের চাল।
আমদানিকৃত স্বর্ণা জাতের চাল ৫০ টাকার নিচে নামার কথা থাকলেও বন্দরে বিক্রি হচ্ছে ৫১-৫২ টাকায়। দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে আসা পাইকাররা জানান আমদানিকৃত চালের তুলনায় দেশীয় চালের দাম কম। তাই বন্দর থেকে চাল কিনতে আগ্রহ কম।
দেশের বাজারে চালের দাম সহনীয় রাখতে শুল্কমুক্ত চাল আমদানির উদ্যোগকে সাধুবাদ জানিয়ে ব্যসায়ীরা জানান, এমন উদ্যোগ আরও অন্তত দু-মাস আগে নিলে আমদানির সুফল মিলতো। কেননা নভেম্বর মাসে কৃষকের উৎপাদিত ধান ঘরে আসতে শুরু করে।
আমদানিকারকরা জানান, চালের শুল্ক প্রত্যাহার করায় এর সুযোগ নিয়েছে ভারতের রপ্তানিকারকরা। এমন উদ্যোগে ভারতের ব্যবসায়ীরা চালের মূল্য বৃদ্ধি করেছে। তাদের অভিযোগ, কোনও পণ্য আমদানির ক্ষেত্রে সরকার যখন কম মূল্যে ভোক্তাদের কাছে পৌঁছে দিতে আমদানিতে শর্ত শিথিল করে তখন ভারত সেই পণ্যের রপ্তানিমূল্য বাড়িয়ে দেয়। যার কারণে সরকার এমন উদ্যোগ নিলে এর সুফল ভোক্তা পর্যায়ে মিলে না। আগে তারা ৩৬০ ডলার মূল্যে চাল রপ্তানি করলেও বাংলাদেশ সরকার চালের শুল্ক মওকুফ করলে তারা টন প্রতি ৬০ ডলার দাম বাড়িয়ে দিয়েছে। অর্থাৎ ৪২০ ডলার মূল্যে চাল রপ্তানি করছে ভারতীয় ব্যবসায়ীরা।
হিলি স্থলবন্দরের চাল আমদানিকারক প্রতিষ্ঠান মেসার্স আফিফ এন্টারপ্রাইজের স্বত্বাধিকারী মোস্তাফিজুর রহমান মোস্তাক জানান, দেশের বাজারে চালের দাম নিয়ন্ত্রণে রাখতে সরকারের শুল্কমুক্ত চাল আমদানির উদ্যোগ নিঃসন্দেহে ভালো। কিন্তু আমদানিতে সরকার শুল্ক প্রত্যাহার করায় ভারত রপ্তানিমূল্য বাড়িয়ে দিয়েছে।
তিনি অভিযোগ করে বলেন, ভারত থেকে চাল আমদানি না করলে চাহিদার তুলনায় জোগান থাকবে না। ফলে ঘাটতি দেখা দেবে। সেই কথা ভেবে তারা বেশি দামে চাল রপ্তানি করছে। আগে ৩৪০ ডলার তাদের রপ্তানিমূল্য ছিল। এখন ৪২০-৪৩০ ডলার মূল্যে রপ্তানি করছে। ৩২০ ডলার মূল্যে চাল আমদানি করা গেলে দাম কেজিতে অন্তত ৬-৮ টাকা দাম কমতো।
হিলি স্থলবন্দরে চাল কিনতে আসা ব্যবসায়ী মুকিবুল ইসলাম জানান, আমদানির খবরে বন্দরে চাল কিনতে এসেছি। কিন্তু এখানে এসে দেখি দাম বেশি। স্বর্ণা জাতের চাল এখানে ৫২ টাকা। এর থেকে ভালো মানের দেশীয় স্বর্ণা-৫ জাতের চাল বাজারে ৫০ টাকায় পাওয়া যাচ্ছে। তাই চাল না কিনে ফিরে যাচ্ছি।
হিলি স্থলবন্দরের তথ্যমতে ১১ নভেম্বর থেকে এ পর্যন্ত ১৮ হাজার ৮৭৭ টন চাল আমদানি হয়েছে।
- বিষয় :
- হিলি স্থলবন্দর
- চাল আমদানি