ঢাকা শনিবার, ০৫ জুলাই ২০২৫

আধুনিক পদ্ধতিতে বোরো চাষ, কমবে খরচ

আধুনিক পদ্ধতিতে বোরো চাষ, কমবে খরচ

পলাশে আধুনিক পদ্ধতিতে বোরো ধানের বীজতলা তৈরি করেছে কৃষি বিভাগ সমকাল

পলাশ (নরসিংদী) প্রতিনিধি

প্রকাশ: ২৩ ডিসেম্বর ২০২৪ | ০০:২৪

নরসিংদীর পলাশে প্রথমবারের মতো আধুনিক পদ্ধতিতে বোরো ধানের চারা উৎপাদন করছে স্থানীয় কৃষি বিভাগ। গজারিয়া ইউনিয়নের নোয়াকান্দা গ্রামের মাঠে সমলয় পদ্ধতিতে ১৫০ বিঘা জমিতে হাইব্রিড জাতের ধান রোপণ করা হবে। এ পদ্ধতি অবলম্বনে ধানের উৎপাদন খরচ কমানোসহ শ্রমিক সংকট নিরসন ও কৃষক লাভবান হবেন বলে জানিয়েছেন কৃষি কর্মকর্তারা।
উপজেলা কৃষি বিভাগের তথ্যমতে, বৈরী আবহাওয়া থেকে সহজে বীজতলা রক্ষায় ট্রে পদ্ধতি (প্লাস্টিকের ফ্রেম) সহায়ক। এই পদ্ধতি কৃষকের মধ্যে সমন্বয়ের ভিত্তিতে চাষাবাদে আগ্রহ সৃষ্টি করবে এবং আধুনিক কৃষি যন্ত্রগুলো অল্প সময়ে অনেক বেশি কাজ করে। এগুলো পরিচালনার জন্য জনবল লাগে কম।
এ বছর প্রথম পলাশের নোয়াকান্দা গ্রামের ১২০ কৃষকের একটি গ্রুপ করে নতুন পদ্ধতিতে কৃষক ফারুক মিয়ার ৪৫ শতাংশ জমিতে এ বীজতলা তৈরি করা হচ্ছে। ২ হাজার ৩২০টি ট্রেতে ১০ কেজি করে ৬০ প্যাকেট বোরো ধানের বীজ ফেলা হয়েছে।
উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তা তাহমিনা আক্তার জানান, যান্ত্রিক পদ্ধতিতে ধান রোপণের জন্য ট্রেতে উৎপাদিত চারাই প্রয়োজন। এই পদ্ধতিতে বোরো ধানের বীজ ফেলতে প্রতিটি প্লাস্টিক ট্রেতে ১ ইঞ্চি স্তরের মাটি দিয়ে বীজ বপন করা হয়। মাঠে বীজতলা তৈরির পদ্ধতি এবং ট্রেতে বীজতলা তৈরি পদ্ধতি একই। তবে ট্রেতে শতভাগ চারা উৎপাদন হয়। ট্রেতে উৎপাদিত চারা রাইস ট্রান্সপ্লান্টার (ধান রোপণ করার যন্ত্র) দিয়ে মাঠে রোপণ করা হবে। চারা রোপণ থেকে ধান কাটা, ধান মাড়াই সবই হয় যন্ত্রে। এতে সময় লাগে খুবই কম এবং নির্দিষ্ট দূরত্ব বজায় রেখে চারা রোপণ সম্ভব হয়।
ট্রেতে প্রথমবারের মতো পরীক্ষামূলকভাবে এখানে ধানের চারা উৎপাদন করা হয়েছে। এতে ভালো ফলও পাওয়া গেছে। এবার আনুষ্ঠানিকভাবে এই পদ্ধতির ধানের চারা মাঠে রোপণ করা হবে। সাধারণত বৈরী আবহাওয়া হলে মাঠে বীজতলা ক্ষতিগ্রস্ত হয়। কিন্তু ট্রেতে করা বীজতলা সহজেই প্রচণ্ড শীত ও কুয়াশাচ্ছন্ন আবহাওয়া থেকে বাঁচানো যায়। ট্রেগুলো রাতে প্লাস্টিকের শিট দিয়ে ঢেকে রাখা হয়। আধা মিলিমিটার থেকে এক মিলিমিটার বড় হলেই মাত্র ২০ থেকে ২৫ দিনে এসব চারা রোপণের জন্য প্রস্তুত হয়। 
কৃষক ফারুক মিয়া, রহিম উদ্দিন ও মোখলেছুর রহমাহ জানান, তারা এবার প্রথম এ পদ্ধতিতে ধানের চারা উৎপাদন করেছেন এবং যন্ত্রের মাধ্যমে এ চারা রোপণ করবেন। এ ১৫০ বিঘা জমির ধানের চারা ও জমিতে রোপণ বাবদ শুধু সেচ ও চাষের খরচ দিতে হচ্ছে তাদের। আধুনিক পদ্ধতির এই চাষাবাদে আগ্রহ বাড়ছে কৃষকের। প্রতিদিনই নতুন নতুন কৃষক দেখতে আসছেন এই প্রদর্শনীতে।
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা আয়েশা আক্তার বলেন, এই প্রযুক্তি ব্যবহারে কৃষকের খরচ কমবে। ধানের ফলনও বাড়বে কয়েক গুণ। 

আরও পড়ুন

×