ধর্ষণে অন্তঃসত্ত্বা কিশোরী, গ্রাম্য সালিশে রফাদফা

ছবি: প্রতীকী
সোনারগাঁ (নারায়ণগঞ্জ) প্রতিনিধি
প্রকাশ: ২৫ ডিসেম্বর ২০২৪ | ২২:০১
সোনারগাঁয়ে প্রবাসীর ধর্ষণে কিশোরী অন্তঃসত্ত্বা হয়ে পড়ে বলে অভিযোগ উঠেছে। বারদী ইউনিয়নের একটি গ্রামে এ ঘটনা ঘটে। ঘটনাটি ধামাচাপা দিতে সালিশ বৈঠকে ১৩ লাখ টাকায় রফাদফা করেছে বলে জানিয়েছেন স্থানীয়রা।
এলাকাবাসী জানান, বারদী ইউনিয়নের সুলতান মিয়ার ছেলে প্রবাসী আব্দুর রব এলাকায় এসে অষ্টম শ্রেণির এক মাদ্রাসা শিক্ষার্থীকে (১৬) ধর্ষণ করে। ভুক্তভোগী কিশোরী অন্তঃসত্ত্বা হয়ে পড়েছে। বিষয়টি জানাজানি হলে ওই গ্রামে সোমবার সন্ধ্যায় সালিশ বৈঠক বসে। ওই বৈঠকে বারদী ইউনিয়নের ৬ নম্বর ওয়ার্ড বিএনপির সাধারণ সম্পাদক শাহজাহান মিয়া ও সাবেক সাধারণ সম্পাদক আব্দুল কাদির ঘটনা ধামাচাপা দিতে উঠে পড়ে লাগেন। সালিশে ১৩ লাখ টাকায় ঘটনার রফাদফা হয়। বৈঠকে আব্দুর রব মিয়া নগদ ৩ লাখ টাকা বিএনপি নেতা শাহজাহানের কাছে দেন। ওই টাকা বুধবার পর্যন্ত ভুক্তভোগী কিশোরীর পরিবার পায়নি বলে দাবি করেছেন। তবে ওই টাকা শাহজাহানের কাছে গচ্ছিত আছে বলে দাবি স্থানীয়দের। বাকি ১০ লাখ টাকা আগামী ২০ জানুয়ারি দেওয়ার কথা।
বিচার সালিশের বিশ্বস্ত একটি সূত্র জানায়, ১৩ লাখ টাকায় রফাদফার পরও বিএনপির দুই নেতাকে আরও ৩ লাখ টাকা দেওয়ার প্রতিশ্রুতিতে এ সালিশ বৈঠক হয়। এ তিন লাখ টাকা ভাগবাটোয়ারা করার জন্য এ বিচার সালিশে এ রায় দেন তারা।
ভুক্তভোগী কিশোরীর ভাবি জানান, প্রবাসী আব্দুর রবের মেয়ের সঙ্গে প্রতিদিন রাতে ঘুমাতো ভুক্তভোগী কিশোরী। সেই সুযোগে তাকে ধর্ষণ করে আব্দুর রব। বিষয়টি জানাজানি হলে তার পরিবার সমাধানের আশ্বাস দেন। কিন্তু গড়িমসি করার কারণে কিশোরী ৭ মাসের অন্তঃসত্ত্বা হয়ে পড়ে। সমাধান না করার কারণে সালিশ বৈঠক ডাকা হয়েছে। সেখানে ১৩ লাখ টাকায় রফাদফা হয়, ৩ লাখ টাকা নগদ দেওয়ার পরও কিশোরীর পরিবার এক টাকাও পায়নি। পাশাপাশি সন্তান ভূমিষ্ঠ হওয়ার পর আব্দুর রবকে দিয়ে দেওয়া হবে।
এ বিষয়ে বক্তব্য নিতে প্রবাসী আব্দুর রবের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করেও তাকে পাওয়া যায়নি। তবে তার স্ত্রী জোহরা বেগমের দাবি, তার স্বামী এ অপরাধের সঙ্গে জড়িত না। তবে কেন ৩ লাখ টাকা দিয়েছেন এমন প্রশ্ন করা হলে তিনি কোনো উত্তর দিতে পারেননি।
বারদী ইউনিয়নের ৬ নম্বর ওয়ার্ড বিএনপির সাধারণ সম্পাদক শাহজাহান মিয়ার ভাষ্য, সালিশ বৈঠক হয়েছে। কিশোরী ও অভিযুক্তদের কথা শুনে বৈঠকে এলাকাবাসী ১৩ লাখ টাকা রায় দিয়েছে। তবে টাকা আত্মসাতের বিষয়টি সঠিক না।
সোনারগাঁ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মোহাম্মদ আব্দুল বারী বলেন, ‘বিষয়টি আমার জানা নেই। খোঁজ নিয়ে ব্যবস্থা নেব।’