ঢাকা শুক্রবার, ০৪ জুলাই ২০২৫

সন্ধ্যা হলেই পদ্মায় চালু ভেকু মেশিন

সন্ধ্যা হলেই পদ্মায় চালু ভেকু মেশিন

রাজবাড়ীর পাংশায় পদ্মা নদীর চর থেকে ভেকু মেশিন দিয়ে অবৈধভাবে বালু উত্তোলন করছে প্রভাবশালীরা সমকাল

রাজবাড়ী প্রতিনিধি

প্রকাশ: ০৪ জানুয়ারি ২০২৫ | ২৩:১৮

রাজবাড়ীর পাংশায় পদ্মা নদীর চর থেকে অবৈধভাবে বালু উত্তোলন করছে প্রভাবশালীরা। মাঝেমধ্যে প্রশাসন অভিযান চালালেও বন্ধ হয় না বালু উত্তোলন।
গত শুক্রবার রাতেও উপজেলা প্রশাসন অভিযান চালিয়ে তিনটি ভেকু জব্দ করেছে।
স্থানীয় সূত্র জানায়, উপজেলার হাবাসপুর ইউনিয়নের সাহাপাড়া ঘাট, চরপাড়া ও শাহামীরপুর এলাকায় পদ্মা নদীর চর থেকে চলছে অবৈধভাবে বালু উত্তোলন। বালু উত্তোলনকারীরা প্রভাবশালী হওয়ায় তাদের ভয়ে মুখ খোলার সাহস পায় না কেউ। গত বছরের সেপ্টেম্বর মাসে একবার পাংশা থানার পুলিশ অভিযান চালিয়েছিল। কিছুদিন বন্ধ থাকার পর আবার শুরু হয় বালু উত্তোলন। দিনে সেখানে কাউকেই দেখা যায় না। সূর্য ডোবার সঙ্গে সঙ্গে শুরু হয় বালু উত্তোলনের কাজ। বিভিন্ন জায়গা থেকে ডাম্প ট্রাক, ট্রলি এনে রাখা হয় এসব এলাকায়। ট্রাকগুলো ভর্তি করে নির্ধারিত জায়গায় বালু পৌঁছে দেওয়া হয়। বালু উত্তোলনের ফলে একদিকে পরিবেশ দূষণ হচ্ছে, অন্যদিকে ক্ষতি হচ্ছে রাস্তাঘাটের। এভাবে বালু উত্তোলন চললে পদ্মা নদীর ভাঙন ত্বরান্বিত হতে পারে বলে মনে করছেন স্থানীয়রা। তারা শিগগির বালু উত্তোলন বন্ধের দাবি জানিয়েছেন।
স্থানীয় একজন কৃষক নাম প্রকাশ না করার শর্তে জানান, সন্ধ্যার পর থেকে চলে ভেকু দিয়ে বালু ও মাটি কাটার কাজ। দিনে ওই ভেকু আড়াল করে রাখা হয়। আখ ক্ষেতের পাশে ভেকু লুকিয়ে রাখা হয়। রাতে শত শত গাড়ি এসে বালু নিয়ে যায়। তারা গাড়ির শব্দে ঘুমাতে পারেন না। মাঝে মধ্যে 
পুলিশ অভিযান চালালেও বালু উত্তোলন বন্ধ 
হয় না। তিনি আরও জানান, বালু উত্তোলনকারীরা অত্যন্ত প্রভাবশালী। তাদের ভয়ে মুখ খোলার সাহস কারও নেই। 
হাবাসপুর ইউপি চেয়ারম্যান আল মামুন খান জানান, ২০-২৫ দিন ধরে প্রভাবশালীরা পাংশা এলাকায় পদ্মা নদী থেকে অবৈধভাবে বালু উত্তোলন করছে। এতে রাস্তাঘাটের যেমন ক্ষতি হচ্ছে, তেমনি পদ্মার ভাঙনের আশঙ্কাও রয়েছে। বিষয়টি তিনি উপজেলা প্রশাসনকে জানিয়েছেন। সভায়ও বিষয়টি উত্থাপন করেছিলেন। সময় অনুকূল নয় বলে তাদের নাম বলতে অপারগতা প্রকাশ করেন তিনি। 
পাংশার ইউএনও এসএম আবু দারদা বলেন, পাংশার হাবাসপুর ইউনিয়নে পদ্মা নদীর চরে বালু উত্তোলনের বিষয়ে জেনেছেন। গত রাতে (শুক্রবার) সেখানে অভিযান চালিয়ে তিনটি ভেকু মেশিন জব্দ করা হয়েছে। তবে কাউকে পাওয়া যায়নি। তিনি বলেন, যেখান থেকে বালু উত্তোলন করা হচ্ছে সেটি মূল সড়ক থেকে তিন-চার কিলোমিটার ভেতরে চরের মধ্যে। তারা যখন অভিযানে যান, বালু উত্তোলনকারীরা টের পেয়ে ঘটনাস্থল থেকে সরে যায়। তারা রাতে বালু উত্তোলন করে। চরের মধ্যে সেখানে গিয়ে ধরাটাও কঠিন। তার পরও এখন থেকে নিয়মিত তিনি অভিযান চালাবেন। স্থানীয়দের কাছে জানতে চাইলেও তারা বালু উত্তোলনকারীদের নাম বলতে নারাজ। তবে, কয়েকটি সূত্রে বেশ কয়েকজনের নাম পাওয়া গেছে। যাচাই-বাছাই করে এ ব্যাপারে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
 

আরও পড়ুন

×