ঢাকা শুক্রবার, ০৪ জুলাই ২০২৫

নোয়াখালীতে মাজারে ভাঙচুর-অগ্নিসংযোগ, আহত ১০

নোয়াখালীতে মাজারে ভাঙচুর-অগ্নিসংযোগ, আহত ১০

ছবি: সমকাল

নোয়াখালী প্রতিনিধি

প্রকাশ: ২১ ফেব্রুয়ারি ২০২৫ | ০০:০৭

নোয়াখালীর সদর উপজেলায় শাহ সুফি আইয়ুব আলী দরবেশের মাজারে হামলা চালিয়ে ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগের ঘটনা ঘটেছে। এতে অন্তত ১০ জন আহত হয়েছেন। বৃহস্পতিবার বিকেল সাড়ে ৩টার দিকে ‘তৌহিদী জনতা’র ব্যানারে একদল লোক এ হামলা ও ভাঙচুর চালায় বলে জানিয়েছেন প্রত্যক্ষদর্শীরা। এসময় ওরশের প্যান্ডেলসহ পুরো মাজার ভেঙে গুঁড়িয়ে দেওয়া হয় এবং একটি টিনের ঘরে আগুন দেওয়া হয়।

খবর পেয়ে নোয়াখালী সদর উপজেলার সহকারী কমিশনার (ভূমি), সুধারাম থানা পুলিশ ও সেনাবাহিনীর সদস্যরা গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনেন। সুধারাম মডেল থানার ওসি মোঃ কামরুল ইসলাম বৃহস্পতিবার রাতে এসব তথ্য নিশ্চিত করেছেন।

পুলিশ ও প্রত্যক্ষদর্শীরা জানিয়েছেন, কালাদরাপ ইউনিয়নের মুন্সির তালুক গ্রামের শাহ্সূফী আইুব আলী দরবেশের মাজারে আজ বৃহস্পতিবার থেকে তিন দিনব্যাপী ৫৭তম ওরশ অনুষ্ঠান আয়োজনের প্রস্তুতি চলছিল। একইদিন বিকেলে মাজারের পাশে সোলেমান মার্কেট এলাকায় তৌহিদী জনতার ব্যানারে ওয়াজ মাহফিল করার ঘোষণা দেওয়া হয়। এনিয়ে সকাল থেকে এলাকায় উত্তেজনাকর পরিস্থিতি বিরাজ করছিল। বিকেল সাড়ে তিনটার দিকে তৌহিদী জনতার ব্যানারে সহস্রাধিক লোক লাঠিসোঁটা নিয়ে মাজারে হামলা-ভাঙচুর চালায়। এ সময় নারীসহ অন্তত ১০ জন আহত হন। আহতদেরকে স্থানীয়ভাবে চিকিৎসা দেওয়া হয়।

স্থানীয় কালা দরাপ ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান শাহাদাৎ উল্যাহ সেলি বলেন, মাজার মানেই ঢোল বাদ্য বাজানো। স্থানীয় মুন্সীর তালুক গ্রামের জামে মসজিদের পাশেই মাজারের অবস্থান। প্রতিবছর মাজারের ওরশের ঢোল বাদ্য বাজনার কারণে রাতে গ্রামবাসী ঘুমাতে পারেন না। ইউনিয়নের লোকজন ও বিভিন্ন মসজিদের ইমাম-মুসুল্লিরা আমার কাছে এসে ওরস বন্ধ করার অনুরোধ জানান। আমি ওরসের আয়োজকদের চলতি বছর ওরস না করার জন্য অনুরোধ করলেও তারা শোনেননি। বৃহস্পতিবার দুপুরে তারা ওরস শুরু করলে এক-দেড় হাজার লোক বিকাল সাড়ে তিনটার দিকে মাজারের ওরসে হামলা- করে ভাঙচুর করেন।

উপজেলা সহকারী কমিশনার শাহ নেওয়াজ তানভীর বলেন, আইনশৃঙ্খলা বাহিনী পৌঁছার আগেই মাজারে হামলা ভাঙচুরের ঘটনা ঘটে। বর্তমানে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রয়েছে। স্থানীয় মুসল্লিদের সাথে কথা বলে এলাকায় শান্তি শৃঙ্খলা স্বাভাবিক রাখার লক্ষ্যে কাজ করছে প্রশাসন।

সুধারাম মডের থানার ওসি কামরুল ইসলাম বলেন, স্থানীয়রা মাজার ভাঙচুর করেছে। ঘটনাস্থলে সেনাবাহিনী ও পুলিশ উপস্থিত থাকলেও এক-দেড় হাজার লোকের সঙ্গে কিছু করা সম্ভব ছিলনা। মাজারের ওরস নিয়ে বৃহস্পতিবার সকাল থেকেই এলাকায় উত্তেজনা বিরাজ করায় পুলিশের একটি টহল দল সেখানে ছিল। নিষেধ অমান্য করে ওরস শুরু করলে হামলার ঘটনা ঘটে। হামলার ঘটনায় লিখিত অভিযোগ পেলে তদন্ত করে আইনগত পদক্ষেপ গ্রহণ করা হবে।

আরও পড়ুন

×