গোপনে নির্বাচনী তৎপরতা, ফাঁস হওয়ায় সমালোচনা

প্রতীকী ছবি
কালীগঞ্জ (ঝিনাইদহ) ও মঠবাড়িয়া (পিরোজপুর) প্রতিনিধি
প্রকাশ: ২৩ ফেব্রুয়ারি ২০২৫ | ১৩:১৩
মনোনয়নপত্র জমাদানের শেষ দিন ছিল ২২ ফেব্রুয়ারি। অথচ অধিকাংশ সদস্যই জানেন না কবে, কখন বা কীভাবে হচ্ছে নির্বাচন। গোপনে নির্বাচনী তৎপরতার খবর ফাঁস হয়ে পড়ায় বইছে সমালোচনার ঝড়। ঘটনাটি ঘটেছে ঝিনাইদহের কালীগঞ্জ ডায়াবেটিক সমিতি নামে একটি সংগঠনে।
সংগঠনটির সদস্য সংখ্যা ৪৩। তাদের মধ্যে কালীগঞ্জ শহরের ফয়লা গ্রামের সাবেক পৌর কাউন্সিলর বজলুর রশিদ নান্নু, ব্যবসায়ী শাহাবুদ্দিন, সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান শহিদুল ইসলাম, জহুরুল ইসলাম, ইউপি চেয়ারম্যান আজিজুল খাঁ, সাকলায়েন মুরাদসহ অন্তত ৩০ জনের দাবি, তাদের ডায়াবেটিক সমিতির নির্বাচন নিয়ে কিছুই জানেন না তারা। সংগঠনের এজিএম বা বার্ষিক সাধারণ সভা করা হয়নি। এখন সাংবাদিকদের মাধ্যমে জানতে পেরেছেন নির্বাচন হচ্ছে। কিন্তু কোনো নিয়ম ছাড়াই কীভাবে নির্বাচন হবে, তা তাদের বোধগম্য না।
ত্রিবার্ষিক নির্বাচনের জন্য ৩০ জানুয়ারি তপশিল ঘোষণা করা হয়। তপশিলের কপি সংগঠন ও উপজেলা সমাজসেবা অফিসের নোটিশ বোর্ডে টাঙানোর কথা। কিন্তু ২০ ফেব্রুয়ারি মনোনয়নপত্র বিক্রির দিন সংগঠন ও সমাজসেবা অফিসে গিয়ে নির্বাচন সংশ্লিষ্ট কাউকে পাওয়া যায়নি। এমনকি কোনো নোটিশ বোর্ডও দেখা যায়নি।
উপজেলা সমাজসেবা কর্মকর্তা তরিকুল ইসলাম, ডা. ইউনুচ আলী ও সাজ্জাত হোসেন নামে তিনজনকে নিয়ে এ নির্বাচন পরিচালনার জন্য কমিটি করা হয়েছে।
শনিবার পর্যন্ত ১৫টি পদের মধ্যে ৪টি মনোনয়নপত্র বিক্রি হয়েছে। সভাপতি পদে দু’জন, সাধারণ সম্পাদক পদে একজন ও সহসাধারণ সম্পাদক পদে একজন মনোনয়নপত্র কিনেছেন।
নির্বাচন পরিচালনা কমিটির প্রধান সদস্য উপজেলা সমাজসেবা কর্মকর্তা তরিকুল ইসলামের ভাষ্য, সমিতির দায়িত্বপ্রাপ্তরা সদস্যদের তালিকা দিয়ে নির্বাচন করার জন্য বলেছিলেন। এ মর্মে তিনি একটি স্থানীয় পত্রিকায় বিজ্ঞপ্তিও দিয়েছেন। সংগঠনটি কীভাবে এজিএম করে নির্বাচনের সিদ্ধান্ত দিয়েছে তা জানেন না তিনি। এখন এই নির্বাচন নিয়ে নানা জটিলতা সামনে এসেছে। এসব কারণে নির্বাচন বন্ধ করার সিদ্ধান্ত নিতে যাচ্ছেন।
বণিক সমিতির কমিটি নিয়ে বিতর্ক : পিরোজপুরের মঠবাড়িয়ায় প্রকৃত ব্যবসায়ীদের মতামত না নিয়ে গোপনে পৌর শহরের বাজার বণিক সমিতির কার্যনির্বাহী কমিটি গঠনের অভিযোগ উঠেছে। এর প্রতিবাদে মানববন্ধন করা হয়েছে। শনিবার সকালে মঠবাড়িয়া পৌরসভার সামনের সড়কে মানববন্ধন ও প্রতিবাদ সমাবেশ করা হয়।
সমাবেশে বক্তব্য দেন মঠবাড়িয়া পৌর বিএনপির আহ্বায়ক কে এম হুমায়ুন কবির, উপজেলা যুবদলের আহ্বায়ক মাসুম বিল্লাহ, ব্যবসায়ী ওয়ালিউল ইসলাম, জাকির খান, বিএনপি নেতা আবুল কালাম আজাদ, নিজামুল কবির মিরাজ, তুষার আহমেদ, রতন কর্মকার প্রমুখ।
বক্তারা বলেন, প্রকৃত ব্যবসায়ীদের বাদ দিয়ে আওয়ামী লীগ-জামায়াত মিলে ইদ্রিস আলী মহারাজকে সভাপতি ও কামরুল ইসলাম রিপনকে সাধারণ সম্পাদক করে ২৯ সদস্যের কমিটি করা হয়েছে। এর জন্য বিএনপির ভারপ্রাপ্ত আহ্বায়ক শামীম মিয়া মৃধা ও উপজেলা জামায়েতের আমির অধ্যাপক জলিল শরীফকে দায়ী করেন তারা।
অভিযোগ অস্বীকার করে নির্বাচন পরিচালনা কমিটির চেয়ারম্যান বিএনপি নেতা শামীম মিয়া মৃধা। তিনি বলেন, ‘বিএনপির নামধারী কতিপয় সুবিধাবাদী নেতা আমার বিরুদ্ধে কুৎসা রটাচ্ছে। আমাকে ও জামায়াত নেতা জলিল শরীফকে নির্বাচন পরিচালনার দায়িত্ব দিয়ে কেউ এগিয়ে আসেনি এবং সহযোগিতা করেনি। বণিক সমিতি নির্বাচনের জন্য সঠিক ভোটার তালিকা তৈরি করে এ কমিটির মাধ্যমে আগামী ছয় মাসের মধ্যে নির্বাচন হবে।’