ঢাকা শনিবার, ০৫ জুলাই ২০২৫

হস্তান্তরের আগেই ভবনে ফাটল

হস্তান্তরের আগেই ভবনে ফাটল

ফাইল ছবি

তাড়াশ (সিরাজগঞ্জ) প্রতিনিধি 

প্রকাশ: ২৫ ফেব্রুয়ারি ২০২৫ | ০০:২২

সিরাজগঞ্জের তাড়াশ উপজেলার উপর সিলট সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের নবনির্মিত ভবনে ফাটল দেখা দিয়েছে। এতে শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা আতঙ্কিত হয়ে পড়েছেন। শিক্ষকদের অভিযোগ, নতুন ভবনের কাজ যেনতেনভাবে করা হয়েছে। এরই মধ্যে পিলার, মেঝেসহ বিভিন্ন স্থানে ফাটল দেখা দিয়েছে। যেকোনো সময় তা ভেঙে পড়তে পারে। এ কারণে ঠিকাদার ভবন বুঝিয়ে দিতে চাইলেও তারা রাজি হননি।
২০২৩ সালে প্রাথমিক শিক্ষা উন্নয়ন প্রকল্পের আওতায় স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তর (এলজিইডি) তালম ইউনিয়নে উপর সিলট সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ভবন নির্মাণকাজ শুরু করে। ৯০ লাখ ৭০ হাজার ৪৭৫ টাকার কাজটি পায় উল্লাপাড়ার রাতুল এন্টারপ্রাইজ। ওই বছরের মাঝামাঝি সময়ে ভবন নির্মাণকাজ শুরু করে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান। 
অভিযোগ রয়েছে, শুরু থেকেই ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান নির্মাণকাজে নিম্নমানের সামগ্রী ব্যবহার করে। স্থানীয় বাসিন্দা, বিদ্যালয়ের ম্যানেজিং কমিটির সদস্য, শিক্ষকরা বারবার মানসম্মত নির্মাণসামগ্রী ব্যবহারের অনুরোধ করেন। তারা তা কানে তোলেনি। কাজ শেষ না হতেই ভবনের পিলার, ছাদ, ওয়াল, মেঝে ও ব্যালকনির বিভিন্ন অংশে ফাটল ধরেছে। ২০২৪ সালের ২৮ আগস্ট ঠিকাদার তড়িঘড়ি করে ভবন হস্তান্তর করতে চাইলে প্রধান শিক্ষক নুরুল ইসলাম শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তার কথা বিবেচনা করে অনীহা প্রকাশ করেন। বিষয়টি তিনি উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা ও উপজেলা প্রকৌশল অধিদপ্তরের (এলজিইডি) তদারকি কর্মকর্তাকেও জানিয়েছেন। 
প্রধান শিক্ষক নুরুল ইসলাম বলেন, পুরো নির্মাণকাজে নিম্নমানের সামগ্রী ব্যবহার হয়েছে। কাজ বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। বিষয়টি একাধিকবার এলজিইডির তদারকি কর্মকর্তাকেও জানানো হয়েছে। আবার অদৃশ্য শক্তির সহায়তায় কাজ চালিয়ে গেছেন ঠিকাদার। শিশু শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তার কথা ভেবে ফাটল ধরা ভবন বুঝে 
নিতে সাহস পাচ্ছি না। 
উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মুসাব্বির হোসেন বলেন, ‘প্রধান শিক্ষক বিষয়টি আমাকে জানিয়েছেন। তাঁকে ভবনের ত্রুটির বিষয়ে লিখিতভাবে জানাতে বলেছি।’
উপজেলা প্রকৌশল অধিদপ্তরের সহকারী প্রকৌশলী তরিকুল ইসলামের ভাষ্য, ভবন নির্মাণে নিম্নমানের সামগ্রী ব্যবহার করা হচ্ছে– এমন অভিযোগ পেয়ে সরেজমিন পরিদর্শন করা হয়েছে। কাজ চলাকালে তদারকি করা হয়েছে, যাতে ঠিকাদার নিম্নমানের নির্মাণসামগ্রী ব্যবহার করতে না পারেন। ভবনের যে ফাটল হয়েছে তাকে হেয়ার ক্রাক বলা হয়। নির্মাণকাজে এমন হয়ে থাকে। এতে ভবনের কোনো ক্ষতি হবে না। সামান্য ফাটল দেখা গেছে। মেরামত করলেই ঠিক হয়ে যাবে। 
রাহুল এন্টারপ্রাইজের ঠিকাদার অলক হাসান বলেন, ভবনে সামান্য ফাটল দেখা দিয়েছে। হস্তান্তরের আগেই মেরামত করে দেওয়া হবে। সামান্য এ ফাটলের কারণে ভবিষ্যতে কোনো দুর্ঘটনা ঘটবে না বলে জানান দায়িত্বপ্রাপ্ত ঠিকাদার। 
তাড়াশ উপজেলা প্রকৌশলী ফজলুল হক বলেন, অভিযোগ পেয়েছি। সরেজমিন দেখে 
ব্যবস্থা নেওয়া হবে। 

আরও পড়ুন

×