সবজির দরে খুশি ক্রেতা লোকসানে কৃষক

ওসমানীনগর উপজেলার গোয়ালাবাজারে কাঁচামালের এক দোকানে বিভিন্ন ধরনের সবজি মজুত। বৃহস্পতিবার তোলা ছবি সমকাল
ওসমানীনগর (সিলেট) প্রতিনিধি
প্রকাশ: ১৪ মার্চ ২০২৫ | ২৩:৩৯
সিলেটের ওসমানীনগর উপজেলায় এবার অন্যান্য বছরের তুলনায় বেশ সস্তায় মিলছে সবজি। এতে স্বস্তি ফিরেছে সাধারণ ক্রেতার মাঝে। বিপদে পড়েছেন স্থানীয় কৃষকরা।
স্থানীয় বাজারের ব্যবসায়ী ও কৃষকদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, সব ধরনের সবজির দামই কমে গেছে। বিশেষ করে টমেটো ও ফুলকপি চাষিরা বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন। শখের বসে সবজি করতে গিয়ে অনেকেই বিপাকে পড়েছেন।
রমজানের শুরু থেকেই বাজারে বিভিন্ন সবজির দাম ছুটতে থাকে ক্রেতার নাগালের বাইরে। অল্প সময়ের মধ্যে সহনীয় পর্যায়ে আসতে শুরু করে এসব সবজির দাম।
গত রমজানে ১৫০ টাকা দরে বিক্রি হওয়া টমেটো এবার কেজিপ্রতি ১০ থেকে ১৫ টাকা কমে পাওয়া যাচ্ছে। গাজর মিলছে ৩০ টাকা কেজির ঘরে। অথচ আগের বছরই প্রতি কেজি গাজর ক্রেতাদের কিনতে হয়েছ ১৬০ থেকে ১৮০ টাকায়।
এদিকে সবজির মৌসুম শেষ পর্যায়ে থাকায় একটু করে চড়তে শুরু করেছে বাজার। তবে রোজার শুরু থেকে কম দামে সবজি কিনতে পারায় ক্রেতা খুশি। তবে দাম কম হওয়ায় বিপাকে পড়েছেন চাষিরা।
সোমবার উপজেলার প্রাণকেন্দ্র গোয়ালাবাজার ঘুরে দেখা যায়, খুচরা বাজারে প্রতি কেজি টমেটো ১০ থেকে ১৫, আলু ২০ থেকে ২২, কাঁচামরিচ ৫০ থেকে ৬০, গাজর ও শসা ৩০, ফুলকপি ৪০, সিম ৪০ থেকে ৫০, করলা ৮০ ও বেগুন ৬০ থেকে ৭০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে।
শাহ পরাণ বাণিজ্যালয়ের সানুর মিয়া জানান, এবার সবজির উৎপাদন ভালো হওয়ায় সরবরাহ ভালো ছিল। তাই দাম ছিল বেশ কম। তবে মৌসুমের শেষাংশ এখন। এ সময় দাম কিছুটা বাড়বে।
এই ব্যবসায়ী বলেন, অনেক কৃষক টমেটো এবং ফুলকপি বাজারে আনলেও বিক্রি করতে পারেননি।
ক্রেতা মতিন মিয়া বলেন, গত বছরের তুলনায় এবার সবজির দাম অনেক কম। তবে বর্তমানে দর বাড়তে শুরু করেছে। বাজারের সবচেয়ে কম দামের সবজি এখন টমেটো।
উপজেলা কৃষি অফিস জানায়, এবছর ১৭৯০ হেক্টর জমিতে বিভিন্ন ধরনের শাক-সবজি আবাদ করা হয়েছিল। তার মধ্যে প্রায় ১১০ হেক্টর জমিতে টমেটো এবং ২২০ হেক্টরে শিম। ৫ শতাধিক কৃষক প্রতি বছর বাণিজ্যিকভাবে টমেটোর চাষ করে থাকেন। উৎপাদন বেশি ও ক্রেতা সংকটের কারণে অনেকের উৎপাদিত টমেটো বিক্রি করতে পারেননি।
গ্রামতলা গ্রামে স্থায়ী বাসিন্দা ও সবজিচাষি সঞ্জব আলী বলেন, এ বছর ১০ শতাংশ জমিতে টমেটো চাষ করতে প্রায় ৪০ হাজার টাকা ব্যয় হয়েছে, তবে ১০ হাজার টাকাও বিক্রি আসেনি।
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা উম্মে তামিমা বলেন, সবজির উৎপাদন বেড়ে যাওয়ায় এবার বাজারে দর কম। চাহিদার চেয়ে বিভিন্ন ধরনের সবজির জোগান ও মজুদ বেশি। এরমাঝে টমেটো ও ফুলকপি চাষ করে কিছু কৃষক ক্ষতিগ্রস্ত। লোকসানের হাত থেকে রক্ষায় আগাম এবং শেষ পর্যায়ে সবজি বাজারে আনার ব্যবস্থা করার পরামর্শ দেন তিনি।
- বিষয় :
- সবজির দাম