দালালদের নিয়ে প্রতিবেদন করায় সাংবাদিকের ওপর হামলা

ছবি: সমকাল
শরীয়তপুর প্রতিনিধি
প্রকাশ: ১২ মে ২০২৫ | ২১:০৪
শরীয়তপুর সদর হাসপাতালে দালালচক্রের দৌরাত্ম্য ও অনিয়ম নিয়ে প্রতিবেদন প্রকাশের পর সমকাল পত্রিকার সাংবাদিক সোহাগ খান সুজনের ওপর হামলা চালিয়েছেন নারী দালালরা। সোমবার সকাল সাড়ে ১০টার দিকে সদর হাসপাতালের সামনে এ ঘটনা ঘটে।
গত ৮ মে সমকাল পত্রিকায় ‘সহকারীরাই রোগী ভাগান ক্লিনিকে’ শিরোনামে একটি প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়। যেখানে হাসপাতালের ভেতরে-বাইরে সক্রিয় দালালচক্রের নানা অপকর্মের চিত্র উঠে আসে।
সোমবার সকালে ব্যক্তিগত প্রয়োজনে সিভিল সার্জন কার্যালয়ে যাওয়ার পথে সুজন দেখতে পান, আগের মতোই নারী দালালরা রোগীদের নিম্নমানের বিভিন্ন ক্লিনিকে নেওয়ার চেষ্টা করছেন। তিনি ঘটনাটির ভিডিও ধারণের চেষ্টা করলে, হাসপাতালের মূল ফটকের সামনে থাকা অন্তত পাঁচজন নারী দালাল তাঁর ওপর চড়াও হন। এ সময় মনি মুক্তা নামে পালং মেডিকেল হাসপাতালের এক দালাল সুজনকে ধাক্কা দিয়ে রাস্তায় ফেলে দেন। এ সময় ওই নারী দালাল সুজনের বুকে একাধিক ঘুষি মারেন। এ সময় হালিমা বেগম, কেয়া বেগম, নাছিমা বেগম ও শিখা আক্তার নামে অন্য দালালরাও তাঁকে গালাগাল করতে থাকেন। এক পর্যায়ে ওই দালালরা বলেন, ‘হাসপাতালে আমাদের ডিস্টার্ব করেন কেন।’ পরে পথচারী ও স্থানীয়রা এগিয়ে এলে ঘটনাস্থলে থেকে দালালরা পালিয়ে যান।
ভুক্তভোগী সাংবাদিক সোহাগ খান সুজন জানান, সোমবার সকালে তিনি ব্যক্তিগত কাজে বেরিয়েছিলেন। এ সময় সিভিল সার্জন অফিসে যাওয়ার সময় সদর হাসপাতালের সামনে নারী দালালদের আবারও সক্রিয় দেখতে পান। প্রতিবেদন প্রকাশের পরও তাদের কার্যক্রম চলতে দেখে তিনি ভিডিও করছিলেন। তখন দালাল চক্রের সদস্যরা তাঁর মোবাইল ফোন কেড়ে নিয়ে তাঁকে হেনস্তা করেন। পরে স্থানীয় লোকজন জড়ো হলে তারা সটকে পড়েন।
ঘটনার পর দুপুরে অভিযুক্ত নারী দালালদের বক্তব্য নিতে সদর হাসপাতালসহ শহরের চার-পাঁচটি বেসরকারি ক্লিনিকে গিয়ে তাদের খুঁজে পাননি। বিকেলে পালং মেডিকেল সেন্টারে ঘটনার সঙ্গে জড়িত এক দালালকে পাওয়া যায়। এ সময় সাংবাদিক পরিচয় দিলে তিনি সেখান থেকে পালিয়ে যান।
এ বিষয়ে শরীয়তপুরের পুলিশ সুপার মো. নজরুল ইসলাম বলেন, বিষয়টি তিনি জেনেছেন। সাংবাদিক সুজনকে পালং মডেল থানায় লিখিত অভিযোগ দিতে বলা হয়েছে। এ বিষয়ে তদন্ত করে প্রয়োজনীয় আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
পুলিশ সুপার আরও বলেন, পুলিশ হাসপাতালে সক্রিয় দালালচক্রের একটি তালিকা পেয়েছে। তালিকার ভিত্তিতে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। ইতোমধ্যে ডিবি ও পালং মডেল থানাকে এ বিষয়ে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ যদি এ বিষয়ে সহযোগিতা চায় ও মামলা করে তাহলে তাদের সর্বাত্মক সহায়তা করা হবে।
- বিষয় :
- হামলা