‘হঠাৎ পানি আসি মোর স্বপ্ন ভাসি নিয়া গেল’

তিস্তা নদীর পানিতে ডুবে গেছে চরাঞ্চল
উলিপুর (কুড়িগ্রাম) প্রতিনিধি
প্রকাশ: ১৮ মে ২০২৫ | ২১:১৪
‘হঠাৎ পানি আসি মোর সোউগ স্বপ্ন ভাসি নিয়া গেল। কোনওবার এতো আগেত পানি আইসে না। আশা আছিল, লাখ টেকার বাদাম বেচমো। এখন মোর সোউগ শ্যাষ। কি করিয়া জীবনটা বাঁচামো, সেই চিন্তায় বাছি না।’ কাঁদতে কাঁদতে কথাগুলো বলছিলেন কুড়িগ্রামের উলিপুরের শেখেরচরের ৭০ বছরের বৃদ্ধ আবু মুসা মিয়া।
গতকাল শনিবার তিস্তা নদীর চরাঞ্চলে গিয়ে দেখা যায়, চরজুড়ে বাদামসহ বিভিন্ন রবি ফসলের ক্ষেত পানিতে তলিয়ে গেছে।
কৃষকরা জানান, ১৫-২০ দিন পর বাদাম তোলা যেত। কিন্তু কয়েক দিনের বৃষ্টি ও উজানের পানিতে এক রাতে সব ফসল তলিয়ে গেছে। দ্রুত পানি নেমে গেলে হয়তো কিছু ফসল পাবেন তারা।
জোয়ান সেতরা চরের কৃষক আতিকুর রহমানের ভাষ্য, তাঁর তিন একর জমির বাদাম ক্ষেত রয়েছে। পানিতে সব পচে যাবে। অপরিপক্ব হওয়ায় তুলে কোনো লাভ হবে না। ১ লাখ টাকা খরচ করেছেন তিনি। অন্তত আড়াই লাখ টাকার বাদাম হতো। এ ক্ষতি কীভাবে পোষাবেন, জানা নেই তাঁর।
কৃষকরা বলছেন, চরের কৃষকের শেষ ভরসা বাদাম। অনেকে তলিয়ে যাওয়া বাদাম সংগ্রহ করছেন। উপজেলার থেতরাই, গুনাইগাছ ও দলদলিয়া ইউনিয়নের অন্তত আটটি চরের ফসলের ক্ষেত এভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।
কৃষি বিভাগ থেকে জানা গেছে, চলতি মৌসুমে বাদাম আবাদের লক্ষ্যমাত্রা ছিল ৩৬০ হেক্টরে। আবাদ হয়েছে তারও বেশি। তিস্তার চরের ২৩০ হেক্টরে ফলনও ভালো হয়েছিল। অপরিপক্ব হওয়ায় বাদামগুলো পচে যাওয়ার সম্ভাবনা বেশি।
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মো. মোশারফ হোসেন বলেন, পানিতে তলিয়ে যাওয়া বাদাম সংগ্রহ করতে বলা হয়েছে। ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকদের তালিকা করা হবে। সরকারিভাবে কোনো প্রণোদনা এলে ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকদের দেওয়া হবে বলে জানান তিনি।
- বিষয় :
- কুড়িগ্রাম
- তিস্তার পানি