ঢাকা শনিবার, ০৫ জুলাই ২০২৫

৩২ কোটি টাকার সড়ক প্রকল্পে অনিয়মের অভিযোগ

৩২ কোটি টাকার সড়ক প্রকল্পে অনিয়মের অভিযোগ

.

 সুনামগঞ্জ প্রতিনিধি

প্রকাশ: ১৯ মে ২০২৫ | ২৩:২৩

সুনামগঞ্জ জেলার শান্তিগঞ্জ উপজেলাধীন নোয়াখালী-ভিমখালী সড়কের ৯ দশমিক ৭ কিলোমিটার অংশে চলছে প্রশস্তকরণ ও সংস্কারকাজ। প্রায় ৩২ কোটি টাকার এই প্রকল্পের কাজে অনিয়ম হচ্ছে বলে অভিযোগ জানিয়েছেন স্থানীয়রা। তারা বলছেন, কাজের শুরু থেকেই ঠিকাদারের নানা অনিয়ম নজরে আসে।
এদিকে স্থানীয়দের এমন অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে চলমান প্রকল্পের দায়িত্বে থাকা ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের প্রকৌশলী বলছেন, কাজে কোনো অনিয়ম হয়নি। প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে অপপ্রচার চালানো হচ্ছে।
স্থানীয়দের অভিযোগ, গুরুত্বপূর্ণ এই সড়কের কাজে যে মানের সামগ্রী ব্যবহার হচ্ছে এবং যেভাবে কাজ হচ্ছে, তা অপ্রত্যাশিত। সড়কটির কাজে নিম্নমানের সামগ্রীর ব্যবহার দৃশ্যমান। আর তা শুরু থেকেই চলছে। এলাকার একাধিক প্রভাবশালী ব্যক্তি বলেন, বেশ কয়েকবার তাদের কাজ এবং রাস্তার কাজে ব্যবহৃত নির্মাণসামগ্রীর মান 
নিয়ে আপত্তি জানানোর পরও পরস্থিতি বদলায়নি। প্রকল্প বাস্তবায়নের নির্ধারিত সময়ের প্রতি ভ্রূক্ষেপ না করে কাজ চলছে কচ্ছপ গতিতে। এতে জনগণের দুর্দশা বাড়ছে। জানা গেছে এরই মধ্যে প্রকল্পের কাজ শেষ করতে নির্ধারিত সময়ের পর আরও এক বছরের বাড়তি সময় চেয়ে আবেদন করা হয়েছে সংশ্লিষ্ট দপ্তরে। 
জানা যায়, শান্তিগঞ্জের নোয়াখালী-ভিমখালী সড়কে ৯ দশমিক ৭  কিলোমিটার সড়কে ঢালাই এবং সড়কটির পৃথক চারটি স্থানে চলছে কালভার্টের কাজ। এই প্রকল্পটির দায়িত্বে আছে চট্টগ্রামের ডেল্টা ইঞ্জিনিয়ারিং। রোববার সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে উল্লেখিত সড়কটির চলমান কাজের কয়েকটি ছবি পোস্ট করা হয়। সেখানে একজন লিখেছেন, নিম্নমানের পাথর ও ভিট বালু ব্যবহার করে গুরুত্বপূর্ণ এই সড়কের কাজ চলছে।
ফেসবুকে সেই ছবি পোস্টকারী কয়েকজনের সঙ্গে যোগাযোগ করলে তারা কাজের মান ও ঢিমেতালে কাজ হচ্ছে দাবি করে ক্ষোভ ঝাড়েন।
কাঁঠালিয়া গ্রামের হোসেন মিয়া বলেন, নিম্নমানের কাজ হওয়ায় একবার এলাকাবাসী কাজ বন্ধ করে দিয়েছিল।  রোববার বিকেলেও ঠিকাদারের লোকজনকে বলে আসা হয়েছে ভালো মানের পাথর ব্যবহার করতে। তা না হলে আবারও কাজ বন্ধ করে দেওয়া হবে।
সড়কের পাশের গ্রাম কুতুবপুরের শামীম আহমদ বলেন, কাজ ভালো হচ্ছে না। মরা পাথর আর ভিটমাটি বালু হিসেবে কোথাও কোথাও ব্যবহার হচ্ছে। জুলহাস মিয়ার অভিযোগ, বালু-পাথর দেখলেই বোঝা যাচ্ছে কাজ কেমন চলছে। কাজের গতিও সন্তোষজনক নয়। এই জুন মাসে কাজ শেষ হওয়ার কথা ছিল। কাজের যে অগ্রগতি, আগামী বছরের জুনেও শেষ হবে না। এরই মধ্যে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানটি প্রকল্পের বরাদ্দের একাংশ উত্তোলন করেছে বলে জানা গেছে।
ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের দায়িত্বপ্রাপ্ত প্রকৌশলী শামীম আহমদ বলেন, এ ধরনের অভিযোগের কোনো সত্যতা নেই। গ্রিন ট্রাস্টের বালু-পাথর ব্যবহার হচ্ছে রাস্তার কাজে। অনেকে না বুঝে অপপ্রচার চালাচ্ছেন। যেসব পাথর ও বালু নিয়ে অভিযোগ তোলা হয়েছে, সেগুলো মূল সড়কে ব্যবহারের জন্য নয়।
শান্তিগঞ্জ উপজেলা এলজিইডির উপসহকারী প্রকৌশলী শাহীন আলম বলেন, সড়কের কাজ ৩০ ভাগের মতো শেষ হয়েছে। আরও এক বছর মেয়াদ বাড়ানোর জন্য ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান আবেদন করেছে। ময়লাযুক্ত কোনো পাথর ব্যবহার করা হচ্ছে না। ভিট বালু ব্যবহারের বিষয়টিও সত্য নয়।
 

আরও পড়ুন

×