ঢাকা শুক্রবার, ০৪ জুলাই ২০২৫

কালিয়াকৈর

একই স্থানে কোরবানির পশুর হাট নিয়ে দু’পক্ষের উত্তেজনা

একই স্থানে কোরবানির পশুর হাট নিয়ে দু’পক্ষের উত্তেজনা

ছবি: ফাইল

কালিয়াকৈর (গাজীপুর) প্রতিনিধি

প্রকাশ: ২৯ মে ২০২৫ | ১০:০১ | আপডেট: ২৯ মে ২০২৫ | ১০:০৯

কালিয়াকৈর উপজেলায় একই স্থানে দুই পক্ষের কোরবানির পশুর হাট বসানো নিয়ে উত্তেজনা দেখা দিয়েছে। তাদের মধ্যে রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষের আশঙ্কা দেখা দিয়েছে বলে স্থানীয় লোকজন জানিয়েছেন। উপজেলার মধ্যপাড়া ইউনিয়নের জামালপুর চার রাস্তা এলাকায় এ হাট বসানো হয়েছে।

বুধবার সরেজমিন জানা যায়, জামালপুরে ১৪-১৫ বছর আগে এলাকার শতাধিক ব্যক্তি সমবায় সমিতির মাধ্যমে গরুর হাট বসান। এর আয় দিয়ে সমিতির নামে ২০ শতাংশ কেনা ও বনের জমিতে প্রত্যেক শনিবার পশু বেচাকেনা চলে আসছে। শেখ হাসিনা সরকার পতনের পর স্থানীয় কিছু প্রভাবশালী হাটটি নিয়ন্ত্রণে নেওয়ার চেষ্টা করেন। 
দুই পক্ষের লোকজনের মধ্যে পাল্টাপাল্টি ধাওয়ার ঘটনাও ঘটেছে। এরই মধ্যে গত ১৩ ফেব্রুয়ারি টেন্ডারের মাধ্যমে ভ্যাটসহ ১ কোটি ৩৩ লাখ টাকায় লুৎফর রহমান নামে এক ব্যক্তি ইজারা নেন। এরপর তিনি হাট বসাতে গেলে সমিতির পক্ষে মো. নওজেস আলীর লোকজন বাধা দেন। 

লুৎফর রহমান ৩০ ফুট দূরে একটি পতিত জমিতে হাট বসিয়ে পশু বেচাকেনার ব্যবস্থা করেন। সমিতির পক্ষে সাবেক ইজারাদার নওজেস আলীর লোকজন পুরোনো হাটের জায়গায় অনুমোদন ছাড়া অস্থায়ী হাট বসিয়ে পশু বেচাকেনার ব্যবস্থা করলে গত শনিবার দুই পক্ষের হাতাহাতির ঘটনা ঘটে। খবর পেয়ে পুলিশ গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।

এ ঘটনায় লুৎফর রহমান নওজেস আলীসহ চার-পাঁচজনের বিরুদ্ধে সাধারণ ডায়েরি করেন। ঢাকা বিভাগীয় কমিশনারের কাছেও অস্থায়ী গরুর হাটের অনুমোদন না দিতে আবেদন করেছেন। সফিপুর এলাকার ক্রেতা হাসান খান, খবির উদ্দিন, ভান্নারা এলাকার রাহাজ উদ্দিনের ভাষ্য, শনিবার গরু কিনতে গিয়ে বেকায়দায় পড়েন তারা। একটি হাট হলে ক্রেতা-বিক্রেতাদের জন্য ভালো হবে।

স্থানীয় বাসিন্দা সুজন মাহমুদ, শরবেশ আলী, আনোয়ার হোসেন জানান, আওয়ামী লীগের আমলে নওজেস আলীর লোকজন সমিতির নামে এককভাবে হাট ইজারা নিয়েছে। এবার ইউএনওর দপ্তরে টেন্ডার হয়েছে। লুৎফর রহমান ইজারা পেলেও নওজেসের লোকজন অস্থায়ী হাট বসানোর প্রস্তুতি নিয়েছে। গত শনিবার হাতাহাতি হয়েছে। আগামী শনিবারও মারামারির আশঙ্কা রয়েছে।

কোরবানির ঈদ উপলক্ষে অস্থায়ী ইজারা এনেছেন দাবি করে নওজেস আলীর বড় ছেলে অস্থায়ী হাট বসানোর উদ্যোক্তা নিজাম আলী বলেন, ‘আমরা সাত দিনের জন্য হাট বসানোর প্রস্তুতি নিয়েছি।’ যদিও অস্থায়ী ইজারার অনুমতিপত্র দেখতে চাইলে তিনি তাতে রাজি হননি।

ইজারাদার লুৎফর রহমান বলেন, ‘জামালপুর গরুর হাটটির সর্বোচ্চ দরদাতা হওয়ায় ইউএনও বিধি মোতাবেক আমাকে ইজারা দিয়েছেন। নিয়ম অনুসারে তিন কিলোমিটারের মধ্যে কোনো স্থায়ী বা অস্থায়ী হাট বসাতে পারবে না। এখানে অস্থায়ী হাট বসালে আর্থিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হব।’ 

মধ্যপাড়া ইউপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান আছান আলী বলেন, ‘কোনো পক্ষই অনুরোধ না মেনে ৩০ ফুটের মধ্যে দুটি হাট বসানোর প্রস্তুতি নিয়েছে।’

অস্থায়ী গরুর হাট বসানোর আবেদন পেয়েছেন জানিয়ে ইউএনও কাউছার আহামেদ বলেন, হাটটি সরকারিভাবে লুৎফর রহমান ইজারা নিয়েছেন। এর পাশে আরেকটি বসানোর সুযোগ নেই।

আরও পড়ুন

×