রিমান্ডে নিয়ে ঘুষ আদায়ের অভিযোগ
সিরাজগঞ্জের ৫ পুলিশ সদস্যের বিরুদ্ধে বিভাগীয় তদন্ত শুরু

ফাইল ছবি
সিরাজগঞ্জ প্রতিনিধি
প্রকাশ: ৩১ মে ২০২৫ | ১৯:৫৬
সিরাজগঞ্জে রিমান্ডে নিয়ে ভয় দেখিয়ে প্রায় কোটি টাকা ঘুষ আদায়ের অভিযোগে পুলিশের পাঁচ সদস্যের বিরুদ্ধে বিভাগীয় তদন্ত শুরু হয়েছে। এরই অংশ হিসেবে সম্প্রতি পুলিশের ৩১ সদস্যকে জেলা পুলিশ সুপার কার্যালয়ে ডেকে এনে সাক্ষ্য নেওয়া হয়।
সিরাজগঞ্জের আওয়ামী লীগ দলীয় সাবেক এমপি জান্নাত আরা তালুকদার হেনরী ও তাঁর স্বামী সাবেক জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান শামীম তালুকদার লাবুকে কয়েক দফা রিমান্ডে নিয়ে ঘুষ আদায়ের অভিযোগ পুলিশ সদর দপ্তরে দেওয়া হয়।
গত বুধবার পুলিশ সদর দপ্তরের নির্দেশে জেলা পুলিশ সুপারের পক্ষে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার জিয়াউর রহমান তদন্তকাজ শুরু করেন।
অভিযুক্তরা হলেন– সদর থানার এসআই মনির হোসেন, আব্দুর রাজ্জাক, শাহিন মিয়া, পরিদর্শক (তদন্ত) আব্দুল মজিদ ও ওসি হুমায়ুন কবীর। তাদের মধ্যে মুনির হোসেন রংপুর রেঞ্জে, আব্দুর রাজ্জাক রাজশাহী সিআইডি, হুমায়ুন কবীর সলঙ্গা থানার ওসি ও আব্দুল মজিদ সিরাজগঞ্জ শহরের দুই নম্বর পুলিশ ফাঁড়িতে বদলি হয়েছেন।
তদন্তের বিষয়ে কিছুই জানেন না বলেছেন মনির হোসেন, আব্দুর রাজ্জাক ও আব্দুল মজিদ। শাহিন মিয়া বলেন, ‘অভিযোগ দিলে হবেই না, প্রমাণ করতে হবে।’ হুমায়ুন কবীর সমকালকে বলেন, ‘তদন্ত কমিটির আহ্বানে স্বশরীরে গিয়ে বক্তব্য দিয়ে এসেছি।’
শনিবার তদন্ত কমিটির প্রধান জিয়াউর রহমানের নম্বরে কল দিলে বন্ধ পাওয়া যায়। পাবনায় কনস্টেবল নিয়োগ কার্যক্রমে যুক্ত থাকায় তাঁর সঙ্গে দেখা করে বক্তব্য নেওয়া যায়নি। তবে পুলিশ সুপার ফারুক হোসেন জানান, পুলিশ সদস্যদের অভিযোগ তদন্ত তাদের রুটিন ওয়ার্ক।
পতিত আওয়ামী লীগের সময় হলমার্ক কেলেঙ্কারির মাধ্যমে আলোচনায় আসেন হেনরী ও লাবু। অভিযুক্ত হলেও দু’জনই সাবেক প্রধান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার রাজনৈতিক উপদেষ্টার আশীর্বাদে দায়মুক্তি পান।
গত বছরের ৫ আগস্ট ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে শেখ হাসিনার পতনের পর হেনরী ও লাবুর বিরুদ্ধে হত্যাসহ চারটি মামলা হয়। গত ৩০ সেপ্টেম্বর র্যাব তাদের গ্রেপ্তার করে। বর্তমানে এ দম্পতি সিরাজগঞ্জ কারাগারে আছেন।
সংশ্লিষ্টরা জানান, গ্রেপ্তারের পর হেনরী ও লাবুকে দফায় দফায় রিমান্ডে নিয়ে ভয় দেখিয়ে বিভিন্ন সময়ে প্রায় কোটি টাকা আদায় করেছেন সদর থানার সাবেক ওসিসহ তদন্তকারী কর্মকর্তারা। পুলিশ সদর দপ্তরে লিখিত অভিযোগে জড়িতদের মোবাইল কল ডিটেইলস রেকর্ড (সিডিআর) পর্যবেক্ষণ ও লাল গাড়িতে আসা হেনরীর বোন-দুলা ভাইয়ের থানার দক্ষিণে পৌর ডিজিটাল ডাস্টবিন সংলগ্ন স্থানে ঘুষের অর্থ লেনদেনের ভিডিও ফুটেজ পর্যালোচনা করার দাবি জানানো হয়।