অভিজাত রেস্তোরাঁয় এক বেলা পেটপুরে খেলেন শত শ্রমিক

সাবেক রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের শাহাদৎবার্ষিকী উপলক্ষে শনিবার যশোরে জেলা স্বেচ্ছাসেবক দলের উদ্যোগে শ্রমজীবী মানুষের সম্মানে ব্যতিক্রমী আয়োজনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কমিটির খুলনা বিভাগীয় সাংগঠনিক সম্পাদক অনিন্দ্য ইসলাম অমিত। ছবি: সমকাল
যশোর অফিস
প্রকাশ: ৩১ মে ২০২৫ | ২০:১৭ | আপডেট: ৩১ মে ২০২৫ | ২০:১৭
যশোর শহরের চাকচিক্যময় লাক্সারি কনভেনশন সেন্টারে সাধারণত দেখা যায় জাঁকজমক পার্টি কিংবা নানা আয়োজনের। আর যারা অংশ নেন তারাও বেশিরভাগ অভিজাত শ্রেণির মানুষ। তবে শনিবার দুপুরের দৃশ্য ছিল একটু ভিন্ন। জাঁকজমক আয়োজন থাকলেও অংশগ্রহণকারীদের কেউ রিকশাচালক, দিনমজুর, কেউ আবার শ্রমিক। তাদের চোখেমুখে ছিল অন্যরকম খুশি। সুসজ্জিত চেয়ার-টেবিলে চীনামাটির প্লেটে সাজানো অভিজাত সব খাবার। এমন অভিজাত পরিবেশে একবেলা আহার করেন একশত শ্রমজীবী মানুষ।
বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা ও সাবেক রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের ৪৪তম শাহাদৎবার্ষিকী উপলক্ষে শ্রমজীবী মানুষের সম্মানে ব্যতিক্রমী এ আয়োজন করে যশোর জেলা স্বেচ্ছাসেবক দল। সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত কঠোর পরিশ্রম শেষে একবেলা পেটপুরে এমন খাবার খেতে পেরে খুশি এসব শ্রমজীবীরা।
আয়োজকরা জানান, শ্রমজীবীরা অনেক সময় বিভিন্ন ব্যক্তি বা সংগঠনের কাছ থেকে ভালো খাবার পায় কিন্তু ভালো পরিবেশ পায় না। আমরা চেয়েছি তারা যাতে ভালো খাবারের পাশাপাশি একটি ভালো পরিবেশে খাবার খেতে পারে। তাই তাদের নিয়ে শহরের এমন চাকচিক্যময় কনভেনশন সেন্টারে এই আয়োজন করেছি।
যশোর শহরে দেড় দশক ধরে রিকশা চালান নুর উদ্দিন। শহরের তালতলা এলাকায় একটি বস্তিতে থাকেন। একটু মৃদু হেসে বলে উঠলেন, ‘এই সড়কের সামনের রাস্তা দিয়ে দিনে কতবার খ্যাপ মারি তার শেষ নেই। মাঝে মধ্যে তাকায় এখানে কি হয়, কি খাওয়া দাওয়া হয়। কতজনরে এখানে নামিয়েও গেছি। তবে কখনো খেতে পারেনি। আজ উপরে উঠেতেই ঘামে ভেজা শরীর শীতল হয়ে গেল। তারপর কত পদের খাবার খেলাম। মাছ মাংস, মিষ্টি-দই, কোক। এমন জায়গায় কোনোদিন খাইনি, জীবনে ভালো খাবারও খেলাম আর ইচ্ছাডাও পূরণ করলাম।’
তরিকুল নামে আরেক রিকশাচালক বলেন, ‘আমাদের ভালো খাবার দিয়েছে। খুব ভালো লাগলো।’
অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন বিএনপির কেন্দ্রীয় কমিটির খুলনা বিভাগীয় সাংগঠনিক সম্পাদক অনিন্দ্য ইসলাম অমিত। তিনি শ্রমজীবী এসব মানুষের পাত্রে খাবার পরিবেশন করার পাশাপাশি নিজেও খাবার খান তাদের সঙ্গে।
তিনি বলেন, বিএনপি কোনো মানুষকে ছোট ভাবে না। সব শ্রেণি পেশার মানুষের ভাগ্য উন্নয়নে কাজ করেছে তার দল। আগামীতেও করবে। বিএনপি শ্রমজীবীদের সম্মান করে।
এসময় আরও উপস্থিত ছিলেন জেলা বিএনপির সভাপতি সৈয়দ সাবেরুল হক সাবু, সাংগঠনিক সম্পাদক রবিউল ইসলাম, সাবেক যুগ্ম আহ্ববায়ক গোলাম রেজা দুলু, জেলা আইনজীবী সমিতির সাবেক সভাপতি অ্যাডভোকেট মোহাম্মাদ ইসহাক, দৈনিক লোকসমাজের প্রকাশক শান্তনু ইসলাম সুমিত, জেলা স্বেচ্ছাসেবক দলের আহ্বায়ক মোস্তফা আমীর ফয়সাল, সদস্য সচিব রাজিদুর রহমান সাগর প্রমুখ।