ঢাকা বুধবার, ০২ জুলাই ২০২৫

ঝুট কাপড়ে শাহীনের সঙ্গে ভাগ্যবদল ৭০ নারীর

ঝুট কাপড়ে শাহীনের সঙ্গে ভাগ্যবদল ৭০ নারীর

কার্পেটের মান যাচাই করছেন শাহীন। ছবি: সমকাল

নওগাঁ প্রতিনিধি

প্রকাশ: ১২ জুন ২০২৫ | ০৪:২৮

বদলগাছী উপজেলার ভান্ডারপুর গ্রামের যুবক শাহীন হোসেন। পড়াশোনা শেষ করে চাকরির পেছনে না ছুটে ১২টি মেশিন দিয়ে শুরু করেন পাপোশ তৈরি। কারখানার নাম দেন ‘বিআরবি কার্পেট হাউস’। এরপর তাঁকে আর পেছনে ফিরে তাকাতে হয়নি। নিজের ভাগ্যের পরিবর্তনের পাশাপাশি কাজের সুযোগ সৃষ্টি করেছেন অন্তত ৭০ নারীর।

সীমিত মূলধনে গার্মেন্টস থেকে সংগ্রহ করা ঝুট কাপড় দিয়ে হাতে তৈরি পাপোশ বানানো শুরু করেন শাহীন। তাঁর তৈরি পাপোশের চাহিদা বাড়তে থাকে। সরবরাহ শুরু করেন দেশের বিভিন্ন জেলায়। বাড়ানো হয় উৎপাদন। গ্রামের দরিদ্র নারীদের প্রশিক্ষণ দিয়ে কাজে যুক্ত করার সিদ্ধান্ত নেন। বর্তমানে তাঁর তত্ত্বাবধানে বাড়িতে বসে কাজ করছেন ৭০ জন নারী। প্রতি মাসে গড়ে ৬ থেকে ৮ হাজার টাকা পর্যন্ত আয় করছেন তারা। 

শাহীন হোসেনের কারখানায় রয়েছে ১২০টি মেশিন। পাপোশ তৈরির প্রধান কাঁচামাল (ঝুট কাপড় ও উলের নানা রঙের সুতা) আনা হয় বগুড়ার আদমদীঘি উপজেলা থেকে। প্রতি কেজি ঝুট কাপড় ৩০ টাকা, উলের সুতা ৮০ টাকা এবং টানা সুতা ১৫০ টাকা দরে কেনা হয়। এসব উপকরণ থেকে প্রতিদিন তৈরি হচ্ছে দুই হাজার পিস পাপোশ। চাহিদা থাকায় পাঠানো হয় দেশের বিভিন্ন স্থানে। মাস শেষে মোটা অঙ্কের লাভ থাকলেও গত তিন মাসে তাতে টান পড়েছে। ঝুট কাপড় ও সুতার দাম প্রতি কেজিতে ৫ থেকে ১০ টাকা বেড়ে যাওয়ায় লাভের অঙ্ক কিছুটা কমেছে।  

শাহীন হোসেন বলেন, ঝুট আগে ফ্যাক্টরিতে আবর্জনা হিসেবে ফেলে রাখা হতো। এতে পরিবেশের ব্যাপক ক্ষতি হতো। সেই ঝুট থেকে পাপোশ তৈরি করছি। বিক্রির জন্যও কোনো ঝামেলা পোহাতে হয় না। প্রতি সপ্তাহে কারখানায় এসে বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান পাপোশ কিনে নিয়ে যায়। 

কারখানার শ্রমিক মৌসুমী বলেন, ‘বাড়ির কাজের পাশাপাশি এখানে কাজ করছি। মজুরি দিয়ে ছেলেমেয়ের লেখাপড়া, নিজের হাতখরচ রেখে স্বামীর হাতেও কিছু টাকা দিতে পারছি। এতে সংসারে সচ্ছলতা এসেছে।’ 

বিসিক জেলা কার্যালয়ের উপব্যবস্থাপক শামীম আক্তার মামুন বলেন, ‘শাহীনসহ অন্য উদ্যোক্তারা আবেদন করলে যাচাই-বাছাই করে তাদের ঋণের ব্যবস্থা করা হবে। এ ছাড়া কেউ ব্যবসা ম্যানেজমেন্ট প্রশিক্ষণসহ পণ্য বিদেশে রপ্তানি করতে চাইলেও সহযোগিতা করব।’

আরও পড়ুন

×