ঢাকা শনিবার, ০৫ জুলাই ২০২৫

ধারণক্ষমতার ছয় গুণ ব্যাটারি রিকশা রাস্তায় চলাচল

ধারণক্ষমতার ছয় গুণ ব্যাটারি রিকশা রাস্তায় চলাচল

..

এস এম কাওসার, বগুড়া

প্রকাশ: ১২ জুন ২০২৫ | ২৩:১৮

বগুড়া শহরে পাঁচ হাজার প্যাডেল রিকশার অনুমোদন রয়েছে। ব্যাটারিচালিত রিকশা ও ইজিবাইক নিষিদ্ধ। কিন্তু বর্তমানে ধারণক্ষমতার ছয় গুণ অর্থাৎ ৩০ হাজারের বেশি ব্যাটারি রিকশা-ইজিবাইক সড়ক দাঁপিয়ে বেড়াচ্ছে। দিনে নতুন করে এ ধরনের প্রায় অর্ধশত যান রাস্তায় নামছে। ধারণক্ষমতার বেশি রিকশা চলাচলে বাড়ছে দুর্ঘটনা; বাড়ছে যানজট। 
সংশ্লিষ্টরা জানান, শহরে এখন প্যাডেল রিকশা চলাচল করছে বড়জোর দেড়শ। অন্যদিকে ট্রাফিক পুলিশের হিসাবেই ব্যাটারি রিকশা চলছে অন্তত ৭ হাজার; ইজিবাইক ২৩ হাজারের বেশি। পুরো জেলায় ব্যাটারি রিকশা ৯ হাজার ও ইজিবাইক রয়েছে ২৯ হাজারের মতো। জেলা-উপজেলায় দিনে গড়ে ১২ ব্যাটারি রিকশা ও ৩৮টি ইজিবাইক নতুন করে রাস্তায় নামছে। এর মধ্যে গড়ে নষ্ট হচ্ছে ২০টির মতো। থেকে যাচ্ছে অন্তত ৩০টি। রিকশা-ইজিবাইকের কারণে শহরে যানজট লেগেই থাকছে।
শহরের খান্দারের অটোবিতানের কর্ণধার রুহুল আমিন জানান, শুধু শহরেই কমপক্ষে ২০টি ব্যাটারিচালিত ইজিবাইক ও রিকশা বিক্রির দোকান রয়েছে। উপজেলা পর্যায়ে আছে দুই থেকে তিনটি। দিনে এসব দোকানে দু-একটি করে ইজিবাইক ও রিকশা বিক্রি হচ্ছে। গড়ে ৩৮-৪০টি ইজিবাইক ও রিকশা বিক্রি হচ্ছে। কিস্তির সুযোগ থাকায় প্যাডেল রিকশা ছেড়ে অনেকেই এসব অবৈধ যান কিনছেন।
খান্দারের বাসিন্দা জাহিদ হাসান জানান, পোষাতে না পেরে পোলট্রি ফার্মের ব্যবসা বন্ধ করে দেন তিনি। গচ্ছিত অর্থে পাঁচটি ব্যাটারি রিকশা কিনে ভাড়া খাটাচ্ছেন। খরচ বাদে দিনে এক থেকে দেড় হাজার টাকা থাকছে।
ইজিবাইক চালক শহরের ফুলবাড়ির বাসিন্দা বিপুল হোসেন বলেন, ‘চেষ্টা করেও চাকরি পাইনি। ইজিবাইক চালাচ্ছি। আমাদের কোনো সংগঠন না থাকায় পৌরসভা ও ট্রাফিক পুলিশকে প্রতিদিন ১০ থেকে ২০ টাকা চাঁদা দিতে হচ্ছে।’
এদিকে বগুড়ার মহাসড়ক ও আঞ্চলিক সড়কে ৭০ শতাংশের বেশি দুর্ঘটনা তিন চাকার অবৈধ সিএনজিচালিত অটোরিকশা ও ইজিবাইকের কারণে ঘটছে বলে জানিয়েছেন হাইওয়ে পুলিশের শেরপুর থানার ওসি আজিজুর রহমান। তিনি বলেন, মহাসড়কে লুকোচুরি করে অটোরিকশা-ইজিবাইক চালানোয় দুর্ঘটনা বেশি ঘটছে। এগুলো বন্ধ করা গেলে দুর্ঘটনা অনেক কমে আসবে।
পৌরসভার রিকশার লাইসেন্স পরিদর্শক আমির হোসেন বলেন, ‘এখন প্যাডেল রিকশার লাইসেন্স নিতে কেউ আসেন না। লাইসেন্সবিহীন ব্যাটারি রিকশা ও ইজিবাইক সড়ক দখল করে আছে। এসব যান নিয়মের আওতায় আনা ছাড়া দুর্ঘটনা কমানো সম্ভব নয়।’
বিআরটিএ বগুড়ার সহকারী পরিচালক হারুনুর রশিদ বলেন, ‘ব্যাটারি রিকশা ও ইজিবাইকের লাইসেন্স বিষয়ে সরকারের কোনো নির্দেশনা নেই। যান দুটির কারণে সড়কের শৃঙ্খলা ভেঙে পড়লেও ব্যবস্থা নেওয়া যাচ্ছে না।’ তবে বগুড়া পৌর প্রশাসক মাসুম আলী বেগ জানিয়েছেন, প্রশাসন ও নাগরিকদের সঙ্গে আলোচনা করে তারা ব্যাটারি রিকশা-ইজিবাইকের দৌরাত্ম্য কমাতে পদক্ষেপ নেবেন।

আরও পড়ুন

×