ফুটপাত দখল করে ঘেরের বাঁধ আ.লীগ ও জামায়াত নেতার

মাছের ঘেরের জন্য ফুটপাত দখল করে তৈরি বাঁধের একাংশ। শনিবার মনিরামপুরের নেহালপুর-আলীপুর-পোড়াডাঙ্গা সড়কের আলীপুর এলাকায়
মনিরামপুর (যশোর) প্রতিনিধি
প্রকাশ: ১৫ জুন ২০২৫ | ০০:০২
যশোরের মনিরামপুরে ব্যস্ত একটি পাকা সড়কের পাশের ফুটপাত দখলের অভিযোগ পাওয়া গেছে। উপজেলার নেহালপুর-আলীপুর-পোড়াডাঙ্গা সড়কের আলীপুরে এই কাজ করেছেন স্থানীয়ভাবে প্রভাবশালী দুই রাজনীতিবিদ। এদের একজন আওয়ামী লীগের, অন্যজন জামায়াতে ইসলামীর নেতা। তারা মাছের ঘেরের বাঁধ তৈরি করেছেন সড়কের ফুটপাতে। যদিও এলাকাবাসীর তোপের মুখে কিছু অংশ থেকে সম্প্রতি মাটি সরিয়ে নেন তারা।
এলাকাবাসী জানিয়েছে, মাছের ঘেরটির অংশীদারদের একজন কামরুজ্জামান। তিনি ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও ইউপি সদস্য। তাঁর অন্য অংশীদার হলেন– ইউনিয়ন জামায়াতে ইসলামী টিম সদস্য খিদির হাসান।
নেহালপুর বাজারের উত্তরপাশ দিয়ে চার কিলোমিটার দীর্ঘ পিচ ঢালাই করা সড়কটি আলিপুর হয়ে কুলটিয়া ইউনিয়ন পরিষদের সামনে পোড়াডাঙ্গায় গিয়ে মিশেছে। নেহালপুর থেকে সড়কের দু’পাশে পাঁচ-সাত ফুট জায়গা রাখা হয়েছে পথচারীদের চলাফেরা ও যানবাহন ক্রসিংয়ের জন্য। শনিবার সকালে আলীপুর এলাকার পশ্চিমপাশে দেখা গেছে, সড়কটির প্রায় আধা কিলোমিটার ফুটপাত দখল করে উঁচু বাঁধ তৈরি করা হয়েছে। পাশেই প্রায় শত বিঘা জমি ইজারা নিয়ে গড়ে তোলা মাছের ঘের। এটির অংশীদার কামরুজ্জামান ও খিদির হাসান।
যেখানে বাঁধ দেওয়া হয়েছে পাশেই গাবরডাঙ্গা সার্বজনীন পূজা মন্দির ও আলীপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়। ফুটপাত দখল করায় শিক্ষার্থীসহ পথচারীদের যাতায়াতে দুর্ভোগে পড়তে হচ্ছে। সরু সড়কে উল্টো দিক থেকে আসা যানবাহন ক্রসিং করতেও ঝুঁকি বাড়ছে।
আলীপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মমতা রানী ঘোষের ভাষ্য, ব্যস্ততম সড়কের ফুটপাতটি দখলের কারণে জনসাধারণের চলাচলে সমস্যা তো হচ্ছে। জনস্বার্থে যে কোনো মূল্যে এ বাঁধ অপসারণ করা উচিত বলে মনে করেন কুলটিয়া ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি হামিদুল ইসলাম।
ঘেরমালিক আওয়ামী লীগ নেতা কামরুজ্জামানের ভাষ্য, ‘জামায়াত নেতা খিদির হাসানসহ বেশ কয়েকজন মিলে ঘের করেছি। কিন্তু সড়কের পাশে পরিত্যক্ত জমির সামান্য অংশে বাঁধটি নির্মাণ করা হয়।’ জামায়াত নেতা খিদির হাসানের দাবি, এলাকাবাসীর অনুরোধে বাঁধটি কিছু দূরে সরিয়ে নিয়েছেন।
সড়কের পাশে সাত ফুট চওড়া হাঁটার পথ ছিল। এর মধ্যে দখল করা হয়েছে অন্তত পাঁচ ফুট। এ বিষয়ে জিজ্ঞাসা করলে সদুত্তর দেননি দুই নেতার কেউই। আর কুলটিয়া ইউপি চেয়ারম্যান শেখর চন্দ্র রায় বলেন, সড়কের পাশে কমপক্ষে পাঁচ-সাত ফুট জায়গা থাকার কথা। এখানে রাখা হয়েছে খুবই সামান্য। এ বিষয়ে ব্যবস্থা নেওয়া উচিত বলে মনে করেন তিনি।
তবে সড়কের পাশের ফুটপাত এভাবে
দখলের বিষয় জানা নেই মনিরামপুর উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) নিয়াজ মাখদুমের। তিনি বলেন, অভিযোগ পেলে দ্রুতই আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
- বিষয় :
- দখল