ঢাকা শনিবার, ০৫ জুলাই ২০২৫

বগুড়া পরিবহন মালিক সমিতি

নেতৃত্বের হাতবদল, জামায়াত থেকে বিএনপি

নেতৃত্বের হাতবদল, জামায়াত থেকে বিএনপি

মঙ্গলবার সংবাদ সম্মেলনে বগুড়া পরিবহন মালিক সমিতির কমিটি অবৈধ বলে দাবি করেন জামায়াত নেতা এরশাদুল বারী এরশাদ

বগুড়া ব্যুরো

প্রকাশ: ১৮ জুন ২০২৫ | ২২:০৯

জামায়াতের কাছ থেকে হাতবদল হয়ে বগুড়া পরিবহন মালিক সমিতির নিয়ন্ত্রণ চলে গেছে বিএনপি নেতাদের কাছে। এ নিয়ে দু’পক্ষ পাল্টাপাল্টি বক্তব্য দিয়েছে। এক পক্ষ সংবাদ সম্মেলন করে কমিটিকে অবৈধ ঘোষণা করেছে। অন্য পক্ষ বলছে, নিয়ম মেনেই কমিটি করা হয়েছে। 

৫ আগস্টের পর থেকে জেলার বড় আর্থিক সংগঠন বগুড়া পরিবহন মালিক সমিতি নিয়ন্ত্রণে নেন জামায়াত নেতা এরশাদুল বারী এরশাদ। তিনি দায়িত্বপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক হিসেবে সংগঠনটি পরিচালনা করে আসছিলেন। ১০ মাস পর সংগঠনের দায়িত্ব নেন বিএনপি নেতা তৌহিদুল ইসলাম মামুন ও হামিদুল হক চৌধুরী হিরু। 

জামায়াত নেতা এরশাদের দাবি, ভোটের মাধ্যমে নয়, নির্বাচন পরিচালনা কমিটির চেয়ারম্যান কৌশলে ভোট ছাড়াই অবৈধভাবে বিএনপির ওই নেতাকে সমিতির দায়িত্ব দিয়েছেন। গত মঙ্গলবার সংবাদ সম্মেলন করে এ অভিযোগ করেন তিনি। 

সংবাদ সম্মেলনে অভিযোগ করা হয়, সদস্যরা ভোটের মাধ্যমে কমিটি গঠনের দাবি করে আসছিলেন। এর পরিপ্রেক্ষিতে শ্রম দপ্তর রাজশাহীর পরিচালক ২৪ মে নির্বাচনের তারিখ নির্ধারণ করেন। এর আগে ১২ মার্চ ৫ সদস্যের নির্বাচন পরিচালনা কমিটি গঠন করে দেন। কমিটির চেয়ারম্যান করা হয় সিনিয়র সদস্য ফজলুর রহমান তালুকদারকে। ২৩ মে জেলা মোটর শ্রমিক ইউনিয়নের নির্বাচনের কারণে মোটর মালিক সমিতির নির্বাচন পিছিয়ে ১৪ জুন করা হয়। এদিকে নির্বাচন পরিচালনা কমিটির চেয়ারম্যান একটি পক্ষকে খুশি করতে নানা পাঁয়তারা করতে থাকেন। এতে ক্ষুব্ধ হন বেশির ভাগ সদস্য। এ কমিটির মাধ্যমে সুষ্ঠু নির্বাচন না হওয়ার আশঙ্কায় আলফাজ হোসেন নামে একজন পরিবহন মালিক রিট করলে আদালত নির্বাচনের ওপর দুই মাসের স্থগিতাদেশ দেন। 

নির্বাচন পরিচালনা কমিটির চেয়ারম্যান কমিটির অন্য সদস্যদের না জানিয়ে স্থগিতাদেশের বিরুদ্ধে আপিল করেন। ৩ জুন স্থগিতাদেশ প্রত্যাহার করেন আদালত। স্থগিতাদেশ প্রত্যাহারের পর নিয়মানুযায়ী নতুন করে তপশিল ঘোষণা করে নির্বাচনের আয়োজন করার কথা। চেয়ারম্যান তা না করে আগের ঘোষিত তপশিল অনুযায়ী মনোনয়নপত্র বিতরণ করেন; যা নিয়মবহির্ভূত। নির্বাচন পরিচালনা কমিটির সদস্য সচিব জুয়েল হাসান বিষয়টি শ্রম অধিদপ্তরের পরিচালককে অবগত করেন। এরপরও নির্বাচন পরিচালনা কমিটির চেয়ারম্যান নতুন করে তপশিল ঘোষণা না করে ১৪ জুন ২৫ সদস্যের একটি তালিকা প্রকাশ করেন। 

জেলা বাস-মিনিবাস ও কোচ পরিবহন মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক দাবি করা এরশাদুল বারী বলেছেন, নির্বাচন ছাড়াই আদালতের আদেশ অমান্য করে তালিকা প্রকাশ করায় নবগঠিত কমিটি অবৈধ হিসেবে বিবেচিত হবে। 

এদিকে নির্বাচন পরিচালনা কমিটি যে ২৫ সদস্যের কমিটির তালিকা ঘোষণা করেছে, তাতে সভাপতি করা হয়েছে জেলা বিএনপির সহসভাপতি তৌহিদুর রহমান মামুন ও সাধারণ সম্পাদক করা হয়েছে বগুড়া শহর বিএনপির সভাপতি হামিদুল হক চৌধুরী হিরুকে। 

নবগঠিত কমিটির সাধারণ সম্পাদক হামিদুল হক চৌধুরী হিরু বলেন, ‘নিয়ম অনুযায়ী মনোনয়নপত্র তুলে জমা দিয়েছিলাম। কোনো প্রার্থী না থাকায় পরিচালনা কমিটি আমাকে নির্বাচিত ঘোষণা করেছেন।’ 

নির্বাচন পরিচালনা কমিটির চেয়ারম্যান ফজলুর রহমান বলেন, ‘কোনো পক্ষপাতিত্ব করিনি। নির্বাচনের ওপর উচ্চ আদালত স্থগিতাদেশ প্রত্যাহার করেছেন। এরপর নিয়মানুযায়ী নির্বাচন প্রক্রিয়া সম্পন্ন করা হয়েছে। একাধিক প্রার্থী না থাকায় বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় কমিটি ঘোষণা করা হয়েছে। যারা কমিটি অবৈধ দাবি করছেন তারা ভুল বলছেন।’

আরও পড়ুন

×