ঢাকা বুধবার, ০২ জুলাই ২০২৫

ভিক্ষা করায় বাবাকে হত্যা করল ছেলে

ভিক্ষা করায় বাবাকে হত্যা করল ছেলে

প্রতীকী ছবি, এআই দিয়ে তৈরি।

ভৈরব (কিশোরগঞ্জ) সংবাদদাতা

প্রকাশ: ২৩ জুন ২০২৫ | ১৮:৩০

ভিক্ষাবৃত্তি না ছাড়ায় বাবার ওপর ক্ষুব্ধ হয়ে গলা টিপে ধরেন ছেলে। এতে ঘটনাস্থলেই মারা যান বাবা। রোববার দিবাগত রাত সাড়ে ৩টার দিকে কিশোরগঞ্জের ভৈরব পৌর শহরের ভৈরবপুর উত্তরপাড়া সায়দুল্লাহ মিয়া হাউজিং সোসাইটিতে এ ঘটনা ঘটে। এদিকে এ ঘটনায় ভাইয়ের বিরুদ্ধে ভৈরব থানায় মামলা করেছেন আসমা বেগম। এসব তথ্য নিশ্চিত করেছেন ভৈরব থানা পুলিশ পরিদর্শক (তদন্ত) আবু তালেব।

নিহত ব্যক্তির নাম হাফিজ উদ্দিন (৭৫)। অভিযুক্ত ছেলে আল আমিন (২৫) ব্যাটারিচালিত অটোরিকশা চালান। তারা নরসিংদীর রায়পুরা উপজেলার দড়িহাইরমারা গ্রামের বাসিন্দা। 

পুলিশ ও স্থানীয়রা জানায়, হাফিজ উদ্দিন স্ত্রী মারা যাওয়ার পর দুই সন্তানকে নিয়ে ভৈরবে থাকতেন। মেয়ে আসমা বেগমের (২০) বিয়ে হয়েছে। ছেলেকে বিয়েও দিয়েছিলেন, তবে সংসার টেকেনি। বয়সের কারণে তিনি কাজ করতে পারছিলেন না, তাই ভিক্ষাবৃত্তি করতেন। তবে আল আমিন চাইতেন, তার বাবা যেন ভিক্ষা করা বন্ধ করেন। কিন্তু হাফিজ উদ্দিন এ অনুরোধ শোনেননি। বিষয়টি নিয়ে কয়েক মাস ধরে তাদের মধ্যে সম্পর্কের অবনতি হয়। গতকাল রাতে একই ইস্যুতে তাদের মধ্যে কথা-কাটাকাটি হয়। একপর্যায়ে আল আমিন তার বাবার গলা চেপে ধরেন ও ধাক্কা দিয়ে মেঝেতে ফেলে দেন। এতে ঘটনাস্থলেই হাফিজ উদ্দিন মারা যান। মৃত্যুর আগে হাফিজ উদ্দিনের গোঙানির শব্দ শুনে প্রতিবেশীরা এগিয়ে আসেন। তখন ঘরের দরজা ভেতর থেকে বন্ধ ছিল। প্রতিবেশীরা জাতীয় জরুরি সেবা নম্বর ৯৯৯-এ ফোন করে পুলিশকে খবর দেন। পরে পুলিশ এসে লাশ উদ্ধার করে এবং আল আমিনকে আটক করে থানায় নিয়ে যায়।

প্রতিবেশী তিথি বেগম বলেন, আমাদের বাড়িতে ভাড়া থাকত তারা। আল-আমিন অটো চালাত। ঘরের সব কাজও তিনি করতেন। তবে তার বাবার সঙ্গে ভিক্ষাবৃত্তি নিয়ে মাঝে মাঝেই ঝগড়া হতো। মধ্য রাতে এক প্রতিবেশী আমাদের খবর দেয়। আমরা এস দরজা ধাক্কাধাক্কি করি। কিন্তু আলআমিন ঘরের দরজা খোলেনি। পরে ৯৯৯ এ ফোন দিয়ে পুলিশকে খবর দেই আমরা। পুলিশ এসে মরদেহ উদ্ধার করে ও আলআমিনকে আটক করে। 

ভৈরব থানার পুলিশ পরিদর্শক তদন্ত আবু তালেব বলেন, আল আমিনকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়েছে। বাবাকে মেরে ফেলার একটিমাত্র কারণ উল্লেখ করেছেন তিনি। সেটি হলো বাবার ভিক্ষা পেশার প্রতি রাগ। এ ছাড়া আর কোনো কারণ আছে কি না, তা–ও দেখা হচ্ছে।

তিনি আরও বলেন, মরদেহ ময়নাতদন্তের জন্য কিশোরগঞ্জ সদর হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। অভিযুক্ত আলআমিনকে গ্রেপ্তার দেখিয়ে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়েছে।

আরও পড়ুন

×