ঢাকা শুক্রবার, ০৪ জুলাই ২০২৫

চট্টগ্রামে রোডমার্চ শেষে সমাবেশ

সিদ্ধান্ত বাতিল না হলে ৫ আগস্টের পর নতুন কর্মসূচি

সিদ্ধান্ত বাতিল না হলে ৫ আগস্টের পর নতুন কর্মসূচি

চট্টগ্রাম বন্দর ব্যবস্থাপনায় বিদেশি কোম্পানিকে যুক্ত করা এবং রাখাইনে মানবিক করিডোর দেওয়ার প্রতিবাদে ঢাকা থেকে চট্টগ্রাম অভিমুখে রোডমার্চটি শনিবার বিকেলে চট্টগ্রাম বন্দরের ৪নং জেটির সামনে এসে পৌঁছায় - সমকাল

 চট্টগ্রাম ব্যুরো

প্রকাশ: ২৯ জুন ২০২৫ | ০১:৩৭ | আপডেট: ২৯ জুন ২০২৫ | ০৬:৫৪

বাম জোটের কেন্দ্রীয় সমন্বয়ক ও সিপিবির সাধারণ সম্পাদক রুহিন হোসেন প্রিন্স বলেছেন, চট্টগ্রাম বন্দর ইজারা, করিডোর দেওয়ার সিদ্ধান্ত বাতিলসহ দেশের সার্বভৌমত্ববিরোধী কর্মকাণ্ড বন্ধ না করলে ৫ আগস্টের পর কঠোর কর্মসূচি দেওয়া হবে। এক সেকেন্ড দেরি না করে সরকারকে ঘোষণা করতে হবে– তারা বন্দর লিজ দেবে না। 

গতকাল শনিবার চট্টগ্রাম বন্দরের ৪ নম্বর জেটির সামনে বামপন্থি দল ও সংগঠনের সমন্বয়ে গঠিত ‘সাম্রাজ্যবাদবিরোধী দেশপ্রেমিক জনগণ’ নামের ব্যানারে রোডমার্চ শেষে সমাবেশে তিনি এসব কথা বলেন। চট্টগ্রামে সমাপনী সমাবেশের আগে ফেনী ও ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় রোডমার্চের অংশ হিসেবে পথসভা করেন তারা।

সমাবেশে বক্তারা বলেন, গেল ৫ আগস্ট ফ্যাসিস্ট হাসিনাকে বিতাড়িত করে এ দেশের মানুষ আশায় বুক বেঁধেছিল। তবে সরকার এখন বিদেশিদের তাঁবেদার হয়ে উঠেছে। দেশপ্রেমিক মানুষ এখন দেখছে ইন্টেরিম গভর্নমেন্ট দেশের জনগণের অধিকার নিয়ে ছিনিমিনি খেলছে। তারা জনমতের তোয়াক্কা না করে চট্টগ্রাম বন্দরের নিউমুরিং কনটেইনার টার্মিনালসহ বন্দর ব্যবস্থাপনা বিদেশিদের হাতে তুলে দেওয়ার ষড়যন্ত্রে মেতেছে।

এর আগে চার দফা দাবিতে রাজধানী ঢাকা থেকে শুরু হওয়া রোডমার্চের বহর বিকেলে চট্টগ্রামে এসে পৌঁছে। রোডমার্চে অংশ নেওয়া নেতাকর্মীর হাতে ছিল বিভিন্ন স্লোগান-সংবলিত প্ল্যাকার্ড। এসবের মধ্যে রয়েছে– ‘ইন্টেরিম সরকার, সাম্রাজ্যবাদের পাহারাদার’, ‘বন্দর-করিডোর, বিদেশিদের দেব না’, ‘চট্টগ্রাম বন্দর বিদেশিদের হাতে তুলে দেওয়া চলবে না’। সহস্রাধিক মানুষ এ কর্মসূচিতে অংশ নেন।

সমাবেশে রুহিন হোসেন প্রিন্স রোডমার্চ কর্মসূচির চার দফা দাবি তুলে ধরেন। দাবিগুলো হলো– নিউমুরিংসহ চট্টগ্রাম বন্দর ব্যবস্থাপনা বিদেশিদের হাতে দেওয়া চলবে না, রাষ্ট্রীয় দায়িত্বে পরিচালনা করতে হবে, রাখাইনে করিডোর দেওয়ার ষড়যন্ত্র বন্ধ করতে হবে; স্টারলিংক, সমরাস্ত্র কারখানা, করিডোরের মাধ্যমে বাংলাদেশকে সাম্রাজ্যবাদী যুদ্ধ চক্রে জড়ানোর উদ্যোগ বন্ধ করতে হবে; মার্কিন, ভারতসহ ‘সাম্রাজ্যবাদী আধিপত্যবাদী দেশগুলোর’ সঙ্গে বিগত সব সরকারের আমলে স্বাক্ষরিত চুক্তিগুলো প্রকাশ করতে হবে এবং জাতীয় স্বার্থবিরোধী অসম চুক্তি বাতিল করতে হবে।

চট্টগ্রাম জেলা সিপিবির সভাপতি অশোক সাহার সভাপতিত্বে সমাবেশে আরও বক্তব্য দেন  বজলুর রশিদ ফিরোজ,  ইকবাল কবির জাহিদ, মাসুদ রানা, মোশরেফা মিশু, নাসির উদ্দিন আহম্মদ, শুভ্রাংশু চক্রবর্তী, শহিদুল ইসলাম প্রমুখ।

ফেনী সংবাদদাতা জানান, একই দাবিতে গতকাল দুপুরে ফেনীর কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার প্রাঙ্গণে সংক্ষিপ্ত সমাবেশে বাসদের (মার্কসবাদী) সমন্বয়ক মাসুদ রানা বলেন, জুলাই আন্দোলনের মাধ্যমে অন্তর্বর্তী সরকার ক্ষমতায় এলেও তারা এখন সেই আকাঙ্ক্ষার বিপরীতে হাঁটছে। দেশের স্বার্থ জলাঞ্জলি দিয়ে তারা সাম্রাজ্যবাদী শক্তির সঙ্গে একের পর এক চুক্তি করছে। জুলাই আন্দোলনের নেতাকর্মীর নামে মিথ্যা মামলা দিয়ে হয়রানি করা হচ্ছে।

ব্রাহ্মণবাড়িয়া থেকে নিজস্ব প্রতিবেদক জানান, একই দাবিতে গতকাল সকাল সাড়ে ১০টায় ব্রাহ্মণবাড়িয়া প্রেস ক্লাব চত্বরে সংহতি পদযাত্রা শুরুর প্রাক্কালে সাংবাদিক আবদুন নূরের সভাপতিত্বে রোডমার্চের সঙ্গে সংহতি প্রকাশ করে বক্তব্য দেন মতিলাল বণিক, সাজিদুল ইসলাম, জাফর আহমেদ আকসির, নাসির মিয়া, ফাহিম মুনতাসির প্রমুখ।

আরও পড়ুন

×