ঢাকা বৃহস্পতিবার, ০৩ জুলাই ২০২৫

অভিযুক্তকে বাঁচাতে তদবির ধামাচাপা দেওয়ার চেষ্টার দাবি

যৌন হয়রানির অভিযোগে ইবি শিক্ষককে সাময়িক অব্যাহতি

অভিযুক্তকে বাঁচাতে তদবির ধামাচাপা দেওয়ার চেষ্টার দাবি

আজিজুল ইসলাম

 ইবি প্রতিনিধি

প্রকাশ: ০৩ জুলাই ২০২৫ | ০৬:২৮

ছাত্রীদের যৌন হয়রানি, অশালীন ইঙ্গিত, বডি শেমিং ও কথা না শুনলে রেজাল্ট খারাপ করানোসহ নানা অভিযোগে ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের (ইবি) সহযোগী অধ্যাপক আজিজুল ইসলামকে সাময়িক অব্যাহতি দিয়েছে প্রশাসন। তবে বায়োটেকনোলজি অ্যান্ড জেনেটিক ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের এই শিক্ষককে বাঁচাতে তাঁর কয়েক সহকর্মী জোর তৎপরতা চালাচ্ছেন বলে অভিযোগ উঠেছে। এ ছাড়া আজিজুল ইসলামের স্থায়ী বহিষ্কার দাবিতে গতকাল বুধবার উপাচার্যের কাছে শিক্ষার্থীরা লিখিত অভিযোগ জমা দিয়েছেন। 

গতকাল বায়োটেকনোলজি অ্যান্ড জেনেটিক ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের ২২০ জন শিক্ষার্থীর স্বাক্ষর-সংবলিত অভিযোগ উপাচার্যের কাছে জমা দেওয়া হয়। শিক্ষার্থীরা বলেন, বিভাগের কাছে অভিযোগ দিয়ে আমরা ব্যর্থ হয়ে প্রশাসনের দ্বারস্থ হয়েছি। বিভাগ শিক্ষক আজিজুল ইসলামকে সাময়িক অব্যাহতি দিয়েছে। আমরা মনে করি, এর মাধ্যমে তাঁকে শাস্তি দেওয়া হয়নি বরং বাঁচিয়ে দেওয়া হয়েছে। আমাদের কাছে তাঁর কুকর্মের যেসব প্রমাণ রয়েছে, সে অনুযায়ী তাঁকে স্থায়ী বহিষ্কার সম্ভব। আমরা তাঁকে শিক্ষক হিসেবে চাই না। তাঁকে স্থায়ী বহিষ্কার করা হোক। 

শিক্ষার্থীরা আরও অভিযোগ করেন, বায়োটেকনোলজি অ্যান্ড জেনেটিক ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের সভাপতি অধ্যাপক ড. একেএম নাজমুল হুদা ও জ্যেষ্ঠ অধ্যাপক ড. আনোয়ারুল হক স্বপন অভিযুক্ত শিক্ষক আজিজুল ইসলামকে বাঁচাতে ভুক্তভোগীদের চাপ দিচ্ছেন। গত মঙ্গলবার অধ্যাপক নাজমুল হুদা ভুক্তভোগী ছাত্রীদের নিয়ে আলোচনা করে বিষয়টি বিভাগের বাইরে না জানানোর অনুরোধ করেন। পরে ড. আনোয়ারুল হক আবার ভুক্তভোগী শিক্ষার্থীদের নিয়ে বসেন এবং আপোসের চেষ্টা চালান। এ সময় তিনি ভুক্তভোগীদের দুপুরের খাবারের জন্য ১৫ হাজার টাকা দেন। কিন্তু ছাত্রীরা তা নিতে অস্বীকৃতি জানান। 

এ বিষয়ে জানতে বায়োটেকনোলজি অ্যান্ড জেনেটিক ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের সভাপতি অধ্যাপক ড. নাজমুল হুদার নম্বরে একাধিকবার ফোন করা হলেও তিনি সাড়া দেননি। তবে শিক্ষার্থীদের ম্যানেজের বিষয়টি অস্বীকার করে অধ্যাপক ড. আনোয়ারুল হক স্বপন বলেন, বিভাগের জ্যেষ্ঠ শিক্ষক হিসেবে আমি তাদের নিয়ে বসেছিলাম। ঘটনা গোপন রাখা বা শিক্ষার্থীদের টাকা দেওয়ার বিষয়টি পুরোপরি মিথ্যা। তবে তাদের নিয়ে আমি দুপুরের খাবার খেতে চেয়েছিলাম। আমিও ওই শিক্ষকের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি চাই।  

বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. নকীব মোহাম্মদ নসরুল্লাহ বলেন, শিক্ষার্থীদের অভিযোগ আমলে নেওয়া হয়েছে। পদ্ধতিগতভাবে তদন্তের পরিপ্রেক্ষিতে এ বিষয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।

শিক্ষার্থীদের নানাবিধ অভিযোগের প্রাথমিক সত্যতা পাওয়ায় শিক্ষক আজিজুল ইসলামকে গত ২৮ জুন পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত বিভাগের সব কার্যক্রম থেকে বিরত থাকার নির্দেশ দেওয়া হয়। এসব অভিযোগ বিষয়ে জানতে চাইলে অভিযুক্ত শিক্ষক ড. আজিজুল ইসলাম বলেন, আমি আপাতত মানসিকভাবে বিচলিত। এ বিষয়ে মন্তব্য করতে চাচ্ছি না।

আরও পড়ুন

×