ঢাকা শনিবার, ০৫ জুলাই ২০২৫

রোহিঙ্গা নারীকে পাসপোর্ট পেতে সহযোগিতার মামলা

সাবেক কাউন্সিলর বকুলকে রেখে এজাহারভুক্ত ৩ আসামি বাদ

সাবেক কাউন্সিলর বকুলকে রেখে এজাহারভুক্ত ৩ আসামি বাদ

ফাইল ছবি

কক্সবাজার প্রতিনিধি

প্রকাশ: ০৪ জুলাই ২০২৫ | ২২:২৪

কক্সবাজারে রোহিঙ্গা নারীকে পাসপোর্ট পেতে সহযোগিতার মামলায় নিজেদের এজাহারভুক্ত তিন আসামিকে বাদ দিয়ে শুধু একজনের বিরুদ্ধে আদালতে অভিযোগপত্র জমা দিয়েছে দুদক। অভিযোগপত্র অনুযায়ী, এই মামলার বর্তমানে একমাত্র আসামি কক্সবাজার পৌরসভার সাবেক কাউন্সিলর ও জেলা মহিলা দলের সাবেক সভাপতি নেত্রী নাছিমা আক্তার বকুল।  

বৃহস্পতিবার কক্সবাজার সিনিয়র স্পেশাল জজ আদালতে এ চার্জশিট জমা দেন দুদকের কক্সবাজার সমন্বিত জেলা কার্যালয়ের উপসহকারী পরিচালক মামুনুর রশীদ। কক্সবাজার আদালতে দুদকের আইনজীবী আব্দুর রহিম জানান, আদালত শুনানির জন্য ১৩ জুলাই দিন ধার্য করেছেন।

রোহিঙ্গা নারীকে বাংলাদেশি পাসপোর্ট পাইয়ে দিতে সহযোগিতার অভিযোগে ২০২১ সালের ১৫ মার্চ এ মামলাটি করেছিল দুদক। বাদী ছিলেন দুদকের চট্টগ্রাম-২-এর তৎকালীন উপসহকারী পরিচালক শরীফ উদ্দিন। এজাহারটি নথিভুক্ত করেন একই কার্যালয়ের সহকারী পরিচালক (বর্তমানে উপপরিচালক) রতন কুমার দাশ। 

মামলার এজাহারভুক্ত আসামিরা হলেন– রোহিঙ্গা নারী ছামিরা বেগম, কক্সবাজার পৌরসভার ১০ নম্বর ওয়ার্ডের  সাবেক কাউন্সিলর ও কক্সবাজার শহর আওয়ামী লীগের সাবেক সহসভাপতি জাবেদ মোহাম্মদ কায়সার নোবেল, ১০, ১১ ও ১২ নম্বর ওয়ার্ডের সংরক্ষিত আসনের সাবেক নারী কাউন্সিলর নাছিমা আকতার বকুল এবং পৌরসভার অফিস সহকারী দিদারুল আলম। এর মধ্যে সাবেক কাউন্সিলর বকুল ছাড়া সবার নাম বাদ গেছে অভিযোগপত্র থেকে। 

মামলার এজাহারে বলা হয়েছে, অনুসন্ধানকালে প্রাপ্ত রেকর্ডপত্র পর্যালোচনায় দেখা যায়, ছামিরা বেগম নামে ওই রোহিঙ্গা নারী নিজেকে কক্সবাজার পৌরসভার নাগরিক পরিচয় দিয়ে প্রয়োজনীয় কাগজপত্র সংযুক্ত করে বাংলাদেশি পাসপোর্টের জন্য আবেদন করেন। আবেদনপত্রের সঙ্গে কক্সবাজার পৌরসভা থেকে নেওয়া জাতীয়তা সনদও জমা দেন। সনদে কাউন্সিলর হিসেবে স্বাক্ষর করেন কাউন্সিলর বকুল। একই সঙ্গে দায়িত্বপ্রাপ্ত না হয়েও এখতিয়ার বহির্ভূতভাবে মেয়র হিসেবে স্বাক্ষর করেন কাউন্সিলর নোবেল। এ ছাড়া পৌরসভা থেকে নেওয়া একটি প্রত্যয়নও পাসপোর্ট অফিসে জমা দেন ছামিরা। এ প্রত্যয়নে স্বাক্ষর করেন কাউন্সিলর বকুল। পাসপোর্ট অফিসে জমা দেওয়া কক্সবাজার পৌরসভা থেকে ছামিরার নামে ইস্যুকৃত জন্মসনদে যাচাই-বাছাইকারী হিসেবে স্বাক্ষর করেন পৌরসভার অফিস সহকারী দিদারুল আলম।

ছামিরা এসব কাগজপত্র কক্সবাজার পাসপোর্ট অফিসে ২০১৯ সালে জমা দেওয়ার পরপরই সন্দেহ হয় কর্মকর্তাদের। যার কারণে আবেদনটি পুলিশ ভেরিফিকেশনের জন্য না পাঠিয়ে তা স্থগিত করে দেওয়া হয়। এর আগে গত ১৫ মার্চ দুদকের প্রধান কার্যালয়ের কমিশনার (তদন্ত) মিঞা মুহাম্মদ আলি আকবার আজিজী স্বাক্ষরিত এ-সংক্রান্ত একটি চিঠি সংস্থার কক্সবাজার সমন্বিত জেলা কার্যালয়ের উপসহকারী পরিচালক মামুনুর রশীদকে দেওয়া হয়। চিঠিতে জানানো হয় অভিযোগপত্র অনুমোদনের বিষয়টি।

কেন তিন আসামির নাম বাদ গেছে– এ প্রসঙ্গে তদন্ত কর্মকর্তা দুদকের কক্সবাজার সমন্বিত জেলা কার্যালয়ের উপসহকারী পরিচালক মামুনুর রশীদ বলেন, দীর্ঘ সময় নিরপেক্ষভাবে তদন্ত করে মামলায় এজাহারভুক্ত তিনজনের বিরুদ্ধে অভিযোগের প্রমাণ পাওয়া যায়নি। তবে সাবেক কাউন্সিলর বকুলের বিরুদ্ধে অভিযোগের প্রমাণ পাওয়ায় তাঁর নাম অভিযোগপত্রে রাখা হয়েছে। 


 

আরও পড়ুন

×