ঢাকা মঙ্গলবার, ০৮ জুলাই ২০২৫

শিশু শিক্ষার্থীর লাশ: জিজ্ঞাসাবাদে এখনও কোনো ক্লু পায়নি পুলিশ

শিশু শিক্ষার্থীর লাশ: জিজ্ঞাসাবাদে এখনও কোনো ক্লু পায়নি পুলিশ

প্রতীকী ছবি

নিজস্ব প্রতিবেদক, ব্রাহ্মণবাড়িয়া

প্রকাশ: ০৭ জুলাই ২০২৫ | ২১:৫৪ | আপডেট: ০৭ জুলাই ২০২৫ | ২২:১২

নিখোঁজের এক দিন পর পঞ্চম শ্রেণির এক ছাত্রী মরদেহ উদ্ধার হলেও ঘটনার কিনারা করতে পারেনি পুলিশ। ব্রাহ্মণবাড়িয়ার সরাইলের হাবলিপাড়া মসজিদ থেকে রোববার সকালে মেয়েটির মরদেহ উদ্ধার হয়। এর আগে শনিবার বেলা সাড়ে ৩টার দিকে বাড়ি থেকে বের হয়ে আর ফেরেনি মেয়েটি। অনেক খোঁজাখুঁজি করে না পেয়ে মাইকিংয়ের পর রাতে সরাইল থানায় জিডি করা হয়। 

লাশ উদ্ধারের ঘটনায় রোববার রাতেই তার মা বাদী হয়ে সরাইল থানায় ধর্ষণ শেষে হত্যার অভিযোগ এনে অজ্ঞাতপরিচয় ব্যক্তিদের আসামি করে মামলা করেন। এ ঘটনায় হামিদুর রহমান (৩০) ও সাইদুল ইসলামকে (২১) মামলায় গ্রেপ্তার দেখানো হয়েছে। সোমবার রাতে এ প্রতিবেদন লেখা পর্যন্ত তাদের আদালতে পাঠানোর প্রক্রিয়া চলছিল। 

পুলিশ জানিয়েছে, গ্রেপ্তার দুজনকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়েছে। তাদের কাছ থেকে তেমন কিছু পাওয়া যায়নি। লাশ উদ্ধারের পর থেকেই পুলিশের পাশাপাশি পিবিআই, সিআইডিও বিষয়টি তদন্ত করছে। 

এদিকে পরিবারের সদস্যদের দাবি, পূর্ববিরোধের জেরে নয়, পাশবিকতার মনোবৃত্তি থেকেই ধর্ষণ শেষে মেয়েটিকে হত্যা করা হয়েছে। লাশ উদ্ধারের খবর পেয়ে তার প্রবাসী বাবা দেশে ফিরছেন। লাশবাহী অ্যাম্বুল্যান্স বাড়ির আঙিনায় রাখা হলে শাহবাজপুর গ্রামসহ আশপাশ এলাকার শত শত নারী-পুরুষ ময়নাকে শেষবারের মতো দেখতে ভিড় জমান।

মেয়েটির মা জানান, হামিদুর মেয়ের লাশ মসজিদের দোতলায় পড়ে থাকার খবর দেন তাকে। তিনি তার ভাশুরকে সঙ্গে নিয়ে ঘটনাস্থলে গিয়ে মেয়ের বিবস্ত্র লাশ উপুড় অবস্থায় পড়ে থাকতে দেখেন। এ সময় তার গলায় সালোয়ার প্যাঁচানো অবস্থায় দেখতে পেয়ে তিনি সেখানেই জ্ঞান হারান। 

তিনি আরও বলেন, ‘দুপর আড়াইটার দিকে মেয়ে মাদ্রাসারা অনুষ্ঠানে যায়। বিরিয়ানির প্যাকেট নিয়ে এসে আমাকে দিয়ে প্রায় সাড়ে ৩টার দিকে বাইরে যায়। আমাদের কোনো শত্রু নেই। যে বা যারা তাকে এভাবে ধর্ষণ শেষে হত্যা করেছে, তাদের ফাঁসি চাই।’

প্রাথমিক বিদ্যালয়ে লেখাপড়ার পাশাপাশি মেয়েটি আত্বাকুয়া নুরানি তাহাফ্ফুজে কোরআন মাদ্রাসার নুরানি বিভাগে পড়ত। সেই মাদ্রাসার অধ্যক্ষ শাহ মো. শফিউল্লাহ বলেন, ওই মেয়েটি বড় ভাই এ মাদ্রাসায় আমপারা শেষ করে কোরআন ছবক নিয়েছে। এ উপলক্ষে মাদ্রাসা কর্তৃপক্ষ শনিবার দুপুরে অনুষ্ঠানের আয়োজন করে। সেখানে সেও যোগ দেয়। সে মাদ্রাসা থেকে খাবারের প্যাকেট নিয়ে বাড়িতেও ফেরে। বিকেল থেকেই শুনি তাকে পাওয়া যাচ্ছে না। রাত সাড়ে ১০টার দিকে তার বাড়ির লোকজন মাদ্রাসার ছাদে এসে তাকে খুঁজেও গেছে। তিনি বলেন, রোববার সকাল ৭টার দিকে মসজিদে গিয়ে তার লাশ দেখেছি, তখনও তাজা রক্ত শুকায়নি। আমি ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত করে প্রকৃত খুনিকে আইনের আওতায় আনার দাবি জানাচ্ছি।

স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, মসজিদের দক্ষিণ পাশ শহীদ বীর মুক্তিযোদ্ধা আশফাকুল মতিন খসরু স্মৃতি পাঠাগার। সেখানে কয়েক মাস আগ পর্যন্ত ঢাকা থেকে একজন চিকিৎসক এসে বিন্যামূল্যে চিকিৎসা দিতেন। এখন সেখানে কিছু লোক আড্ডা বসায়। 

সরাইল থানার ওসি মোরশেদ আলম চৌধুরী জানান, আটক দু’জনকে মামলায় গ্রেপ্তার দেখানো হয়েছে। তবে তদন্তের স্বার্থেই মামলার অগ্রগতির বিষয়ে কিছু জানাতে চাননি তিনি।

আরও পড়ুন

×