লালপুরে আরও ২ গ্রাম প্লাবিত, পানিবন্দি ৫ হাজার মানুষ

নাটোর ও লালপুর প্রতিনিধি
প্রকাশ: ০৪ অক্টোবর ২০১৯ | ০৮:৫২
নাটোরের লালপুরের দুরদুরিয়া ইউনিয়নের রামপাড়া ও রাধাকান্তপুর গ্রাম নতুন করে বন্যাকবলিত হয়েছে। এদিকে লালপুরের চর এলাকায় পানিবন্দি মানুষের জন্য তিনটি আশ্রয়কেন্দ্র খোলা হলেও তারা সেখানে যেতে আগ্রহ দেখাচ্ছেন না। তবে গবাদিপশু নিয়ে দুই-তিনটি পরিবার চরজাজিরা প্রাথমিক বিদ্যালয় কেন্দ্রের পাশে অবস্থান নিয়েছে। চলমান বন্যায় লালপুর উপজেলার চারটি ইউনিয়নে ৫ হাজার মানুষ বন্যাকবলিত রয়েছে। আখসহ প্রায় ৬ হাজার হেক্টর জমির বিভিন্ন ফসল বিনষ্ট হয়েছে।
লালপুর উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান ইসাহাক আলী জানান, দুরদুরিয়া ইউনিয়নের রামপাড়া ও রাধাকান্তপুর গ্রাম নতুন করে প্লাবিত হওয়ায় কয়েক বিঘা জমির শীতকালীন সবজিসহ আখের জমি জলমগ্ন হয়েছে। বেশ কিছু বাড়িঘরে পানি প্রবেশ করেছে। এ নিয়ে উপজেলার চারটি ইউনিয়নের ১৮টি চরসহ কয়েকশ' বাড়িঘর প্লাবিত হয়েছে। তিনি বলেন, এই উপজেলার ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারসহ ফসলি জমির তালিকা নিরূপণ করা হচ্ছে। ইতিমধ্যে বানভাসিদের মধ্যে ত্রাণ সহায়তা দেওয়া শুরু হয়েছে।
নর্থ বেঙ্গল সুগার মিলের ব্যবস্থাপনা পরিচালক আব্দুল কাদের বলেন, পানিতে নিমজ্জিত তিনশ' হেক্টর জমির আখ সম্পূর্ণ নষ্ট হয়ে গেছে। এছাড়া আরও সাড়ে তিন হাজার একর জমির আখ পানিতে নিমজ্জিত। পানি সরে যাওয়ার পর বলা যাবে আখের কী পরিমাণ ক্ষতি হয়েছে। এছাড়া বৃহস্পতিবার রাতে দুরদুরিয়া ইউনিয়নে নতুন করে পানি প্রবেশ করায় আখের আরও জমি জলমগ্ন হয়েছে। এতে করে আসছে আখ মাড়াই মৌসুমে আখস্বল্পতার কারণে চিনি উৎপাদন কমে যেতে পারে বলে তিনি জানান।
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা রফিকুল ইসলাম বলেন, বন্যায় এবার লালপুর উপজেলার বিলমাড়িয়া, লালপুর ও ঈশ্বরদী ইউনিয়নের চর এলাকায় দুই হাজার ৩৪৮ হেক্টর জমির পাট ও শীতকালীন সবজি সম্পূর্ণ নষ্ট হয়ে গেছে। এছাড়া কৃষি বিভাগের তত্ত্বাবধানে চর এলাকায় রোপণ করা কয়েকশ' হেক্টর জমির আখ পানিতে তলিয়ে গেছে।
লালপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা উম্মুল বানিন দ্যুতি জানান, ক্ষতিগ্রস্ত ১২শ' মানুষের মধ্যে বৃহস্পতি ও শুক্রবার ৮ হাজার টন চাল বিতরণ করা হয়েছে।
রাজশাহীতে কমতে শুরু করেছে পদ্মার পানি : রাজশাহী ব্যুরো জানায়, পদ্মার পানি কিছুটা কমতে শুরু করেছে। তবে প্রবল স্রোতে এখনও হুমকির মুখে রয়েছে শহররক্ষা 'টি' বাঁধ। গতকাল সকাল ৬টায় রাজশাহী পয়েন্টে পদ্মায় পানির উচ্চতা ছিল ১৮ দশমিক ১৮ মিটার। বিকেল ৩টায় এক সেন্টিমিটার কমে হয় ১৮ দশমিক ১৭ মিটার।
পানির উচ্চতা কিছুটা কমলেও ভারত থেকে প্রবল বেগে ধেঁয়ে আসছে পানি। তাই শহররক্ষা 'টি' বাঁধসহ পুলিশ লাইনের সামনের বুলনপুর, শ্রীরামপুর এলাকার শহররক্ষা বাঁধ ঝুঁকির মধ্যেই রয়েছে।
এদিকে রাজশাহীর পবা, চারঘাট, বাঘা ও গোদাগাড়ী উপজেলার চরাঞ্চলের পানিবন্দি মানুষ নিরাপদ স্থানে সরে যাচ্ছেন। তারা শহররক্ষা বাঁধ, স্কুল ও উঁচু রাস্তায় আশ্রয় নিয়েছেন। সরকারি ও বেসরকারিভাবে তাদের মধ্যে ত্রাণ বিতরণ চলছে।