পাবনা-৪ আসনের উপনির্বাচন
আ.লীগের মনোনয়ন প্রত্যাশী ২ নেতার তথ্য নিয়ে চাঞ্চল্য

বাঁ থেকে ব্যারিস্টার সৈয়দ আলী জিরু ও অ্যাডভোকেট রবিউল আলম বুদু
ঈশ্বরদী (পাবনা) প্রতিনিধি
প্রকাশ: ২৮ আগস্ট ২০২০ | ০৬:৫৫ | আপডেট: ২৮ আগস্ট ২০২০ | ০৭:০৭
আসন্ন পাবনা-৪ (ঈশ্বরদী-আটঘরিয়া) উপনির্বাচনে আওয়ামী লীগের মনোনয়ন প্রত্যাশী দুই নেতার দাখিল করা মনোনয়নপত্রে দলীয় পদ-পদবীর তথ্যে অসত্য তথ্য প্রদানের অভিযোগ উঠেছে। এতে দলীয় মনোনয়ন প্রত্যাশী অন্যান্য নেতাসহ স্থানীয় আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীদের মধ্যে মিশ্র প্রতিক্রিয়া দেখা দিয়েছে। আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কার্যালয় থেকে পাবনা-৪ আসনের আসন্ন উপনির্বাচনে মনোনয়ন প্রত্যাশীদের তালিকা প্রকাশ করার পর এ ঘটনা চাউর হয়।
এই আসনের উপনির্বাচনে আওয়ামী লীগের প্রার্থী হতে ২৮ জন মনোনয়ন ফরম উত্তোলন করেছেন। এর মধ্যে তালিকায় ৩ নম্বর ক্রমিকে থাকা ব্যারিস্টার সৈয়দ আলী জিরু তার পরিচয় ছকের ‘গ’-তে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের সভাপতি হিসেবে উল্লেখ করেছেন। ৪ নম্বর ক্রমিকে নাম থাকা অ্যাডভোকেট রবিউল আলম বুদুও ‘গ’-তে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের সভাপতি হিসেবে উল্লেখ করেছেন।
দলীয় নির্ভরযোগ্য সূত্রের দাবি, অ্যাডভোকেট রবিউল আলম বুদু রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে অধ্যয়নরত অবস্থায় ১৯৯০ সালে বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্র সংসদের ভিপি পদে নির্বাচন করেছিলেন। বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের সহ-সভাপতি হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন। তিনি দাখিলকৃত মনোনয়নপত্রে বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের সভাপতি হিসেবে নিজেকে দাবি করেছেন।
রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক এক সহ-সভাপতি নাম প্রকাশ না করার শর্তে জানান, রবিউল আলম বুদু ওই সময়ে বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের সহ-সভাপতি ছিলেন। আর সৈয়দ আলী জিরু বিশ্ববিদ্যালয়ের একটি হলের একটি ব্লকের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি হিসেবে দায়িত্বে ছিলেন।
এ বিষয়ে অ্যাডভোকেট রবিউল আলম বুদু সমকালকে বলেন, হাবিবুর রহমান হাবিব ও অসিম কুমার উকিল যখন কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের সভাপতি-সাধারণ সম্পাদক ছিলেন, তখন রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি-সম্পাদক ছিলেন রায়হান ও শরিফ। ওই কমিটি গঠনের ১ মাসের মাথায় রায়হান তার নিজ এলাকায় ইউপি নির্বাচনে অংশ গ্রহণ করতে গেলে তখন থেকে তিনি রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের ৪ বছর সভাপতি হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন।
অন্যদিকে ব্যারিস্টার সৈয়দ আলী জিরু তার দাখিলকৃত দলীয় মনোনয়নপত্রে তিনি রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি হিসেবে উল্লেখ করেছেন। কিন্তু ওই সময়ে তিনি বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের ওই পদে ছিলেন না বলে নির্ভরযোগ্য সূত্র দাবি করে। সে সময়ে তিনি বিশ্ববিদ্যালয়ের জিয়া হলের পঞ্চম বিল্ডিংয়ের একটি ব্লকের প্রস্তাবিত সভাপতি হিসেবে দায়িত্ব পেয়েছিলেন।
এ ব্যাপারে ব্যারিস্টার সৈয়দ আলী জিরু বলেন, ‘মনোনয়নপত্রের ফরমের এই লেখা নিয়ে নোংরা রাজনীত করছেন কেউ কেউ। আমার মনোনয়ন ফর্মটি আমার এক বন্ধু পূরণ করেছে। আমি পড়ে দেখে সংশোধনীও জমা দিয়েছি। এ নিয়ে ভুল বোঝাবুঝির কিছু নেই।' তিনি আরো বলেন, 'বিশ্ববিদ্যালয়ের ওই কমিটি আলোর মুখ দেখেনি। ছকে প্রস্তাবিত কথাটি লিখলে এই ভুল বোঝাবুঝি হতো না।’
ঈশ্বরদী উপজেলা আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক মকলেছুর রহমান মিন্টু এ বিষয়ে সমকালকে বলেন, ‘দলীয় মনোনয়ন ফরম পূরণের সময় যদি কেউ ভুল তথ্য দিয়ে থাকেন তবে সে দায় তার নিজস্ব।’ এ ধরনের ভুল করা তাদের উচিৎ হয়নি বলে মন্তব্য করেন তিনি।
পাবনা-৪ আসনে আওয়ামী লীগ দলীয় সংসদ সদস্য পদের প্রার্থী হতে চেয়ে আরো যারা মনোনয়ন ফরম উত্তোলন করেছেন তারা হলেন- সাবেক এমপি শামসুর রহমান শরীফ ডিলুর ছেলে গালিবুর রহমান শরীফ, উপজেলা মহিলা আওয়ামী লীগের সভাপতি কামরুন্নাহার শরীফ, ঈশ্বরদী উপজেলা আওয়ামীলীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি নায়েব আলী বিশ্বাস, সহসভাপতি মোহাম্মদ রশিদুল্লাহ, আকরাম হোসেন, ঈশ্বরদী উপজেলা চেয়ারম্যান নুরুজ্জামান বিশ্বাস, স্বেচ্ছাসেবকলীগের কেন্দ্রীয় নেতা রফিকুল ইসলাম লিটন, সাবেক এমপি পাঞ্জাব আলী বিশ্বাস, সাবেক এমপি মঞ্জুর রহমান বিশ্বাস, মৎস্যজীবী লীগের কেন্দ্রীয় যুগ্ম সম্পাদক প্রকৌশলী আব্দুল আলীম, আটঘোরিয়া পৌর মেয়র শহিদুল ইসলাম রতন, পাবনা জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ও জেলা আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি রেজাউল রহিম লাল, যুগ্ম সম্পাদক ও সাবেক এমপির এপিএস বশির আহমেদ বকুল, মহিলা বিষয়ক সম্পাদক মাহজেবিন শিরিন পিয়া, অবসরপ্রাপ্ত সেনা কর্মকর্তা নজরুল ইসলাম রবি, এ্যাড. হাবিবুর রহমান, সাবেক পিপি আক্তারুজ্জামান মুক্তা, ঈশ্বরদী পৌর আওয়ামী লীগের সভাপতি আবুল কালাম আজাদ মিন্টু, শিক্ষা বিষয়ক সম্পাদক মিজানুর রহমান স্বপন, বঙ্গবন্ধু পরিষদের কেন্দ্রীয় নেতা জালাল উদ্দিন তুহিন, স্বাচিপ, বিএমএ ও গণজাগরণ মঞ্চের নেতা ডা. সাহেদ ইমরান, আওয়ামী লীগের সদস্য আশরাফ আলী বাবু, তাঁতী লীগের সহসভাপতি এস এম গোলাম মোস্তফা, সাবেক ছাত্রলীগ নেতা ড. এসএম কফিল উদ্দিন, আব্দুল মজিদ, ড. মুসলিমা জাহান।