নামে আংশিক মিল থাকায় ১১ দিন কারাভোগ

ছবি: প্রতীকী
জামালপুর প্রতিনিধি
প্রকাশ: ২৭ নভেম্বর ২০১৯ | ১০:৪৯
শুধু নামে আংশিক মিল থাকায় গ্রেপ্তার ও পুলিশি হয়রানির শিকার হতে হচ্ছে দেওয়ানগঞ্জ পৌর এলাকার রেজবুল হাসান লিটনকে। এর প্রতিকার চেয়ে তার পরিবারের পক্ষ থেকে জামালপুর পুলিশ সুপারের কাছে আবেদন করা হয়েছে।
পুলিশি হয়রানির শিকার লিটনের পরিবারের অভিযোগ, গত ২৩ অক্টোবর গভীর রাতে দেওয়ানগঞ্জ থানার এসআই শহিজল হকের নেতৃত্বে পুলিশের একটি দল ঘুম থেকে তুলে ধরে নিয়ে যায় কৃষক রেজবুল হাসান লিটনকে (২৪)। তার বাড়ি দেওয়ানগঞ্জ পৌর শহরের পূর্ব চুনিয়াপাড়া গ্রামে। পরে তাকে মাদক মামলায় আদালতের মাধ্যমে জামালপুর জেলা কারাগারে পাঠানো হয়। ১১ দিন কারাবাসের পর জামিনে বের হয়ে বাড়িতে এসেও আতঙ্কে ভুগছেন তিনি।
জানা গেছে, ২০১৬ সালের সেপ্টেম্বরে ঢাকার পল্টন মডেল থানা পুলিশ গুলিস্তান শপিং কমপ্লেক্সের সামনের রাস্তা থেকে মাদকসহ গ্রেপ্তার করে দেওয়ানগঞ্জ উপজেলার পূর্ব-কলাকান্দা গ্রামের জয়নাল আবেদিনের ছেলে লিটনকে (২৮)। পরে তার বিরুদ্ধে মাদক আইনে মামলা করেন মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের মতিঝিল সার্কেলের পরিদর্শক চন্দন গোপাল সুর। দীর্ঘদিন জেলহাজত খেটে জামিনে বের হন তিনি। এরপর থেকেই তিনি পলাতক। ওই বছরের নভেম্বর তার বিরুদ্ধে ঢাকা চিফ মেট্রোপলিটান ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে চার্জশিট দেয় মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তর। ফলে তার বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেন ঢাকা মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালত। গ্রেপ্তারি পরোয়ানায় বাহাদুরাবাদ ইউনিয়নের পূর্ব-কলাকান্দা ও পৌর এলাকার চুনিয়াপাড়া দুই গ্রামের নাম থাকায় দেওয়ানগঞ্জ থানার এসআই শহিজল ভুল করে মাদক মামলার আসামি পূর্ব-কলাকান্দার লিটনের পরিবর্তে পৌর শহরের রেজবুল হাসান লিটনকে গ্রেপ্তার করে।
রেজবুল হাসান লিটন জানান, তার নামে দেশের কোনো থানায় কোনো মামলা নেই। শুধু নামের আংশিক মিল থাকায় গ্রেপ্তার ও পুলিশি হয়রানির কারণেই তাকে জেলে যাওয়াসহ মিথ্যা মামলায় হয়রানির শিকার হতে হচ্ছে।
দেওয়ানগঞ্জ পৌরসভার ২নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর সোলায়মান হোসেন সমকালকে বলেন, রেজবুল তার ওয়ার্ডের বাসিন্দা। তার বাবা নেই। সে একজন নিরীহ কৃষক। তিনি বলেন, যার নামে মাদকের মামলা তার বাড়ি বাহাদুরাবাদ ইউনিয়নের পূর্ব-কলাকান্দা গ্রামে। বাহাদুরাবাদ ইউনিয়নের ৩নং ওয়ার্ড মেম্বার হাবিবুর রহমান বলেন, লিটন তার এলাকার বাসিন্দা। সে ঢাকার গুলিস্তান এলাকায় বসবাস করে। সে একজন মাদক ব্যবসায়ী ও মাদকসেবী। এই মামলায় সে গ্রেপ্তার হয়ে জামিন নেওয়ার পর পলাতক রয়েছে। তার পরিবর্তে পুলিশ রেজবুলকে গ্রেপ্তার করে।
বাহাদুরাবাদ ইউনিয়নের চেয়ারম্যান শাকিরুজ্জামান রাখাল বলেন, নির্দোষ রেজবুলকে মামলা থেকে দ্রুত অব্যাহতি দেওয়া উচিত। দেওয়ানগঞ্জ থানার ওসি এমএম মঈনুল ইসলাম সমকালকে বলেন, ওয়ারেন্টে দুই গ্রামের নাম লেখা এবং নামের আংশিক মিল থাকায় এসআই শহিজল রেজবুলকে গ্রেপ্তার করে। কাগজ ও তথ্য দিয়ে সহযোগিতা করলে খুব দ্রুতই বিষয়টি সমাধান হয়ে যাবে।