হরিপুর সীমান্তে দুই বাংলার মিলন মেলা

হরিপুর সীমান্তে দুই বাংলার মিলন মেলা- সমকাল
ঠাকুরগাঁও প্রতিনিধি
প্রকাশ: ১৩ ডিসেম্বর ২০১৯ | ০৯:১২
প্রতিবছরের মতো এ বছর ঠাকুরগাঁওয়ের হরিপুর সীমান্তে দুই বাংলার মিলন মেলা অনুষ্ঠিত হয়েছে।
শুক্রবার হাজারো মানুষের এ মিলন মেলায় অনেকের চোখে ছিল আনন্দের অশ্রু। জেলা শহর থেকে প্রায় ৫৫ কিলোমিটার দূরে হরিপুর উপজেলার ভাতুরিয়া ইউনিয়নের গোবিন্দপুর গ্রামে জামোরকালি জিউ মন্দির কমিটি পাথরকালী মেলা উপলক্ষে প্রতিবছর এই মিলন মেলার আয়োজন করে।
স্বজনরা প্রতিবছর অপেক্ষা করেন এই দিনটিতে নিকটাত্মীয়ের সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাতের। লাখো লোকের ভিড়ে অনেকে নিজ স্বজনকে খুঁজতে ঘণ্টার পর ঘণ্টা সময় পার করেন। বিভিন্ন জেলা থেকে আসা হাজার হাজার নারী-পুরুষ আত্মীয়স্বজনের সঙ্গে দেখা করতে সূর্য ওঠার সঙ্গে সঙ্গেই ভিড় করেন সীমান্তে।
স্থানীয়রা বলেন, ব্রিটিশ আমল থেকেই সীমান্তঘেঁষা গোবিন্দপুরের এই মেলা পাথরকালী মেলা নামে পরিচিত। প্রতিবছর এখানে একদিনের জন্য এই মেলা বসে। দেশ স্বাধীনের পর মেলাটি বাংলাদেশের অংশে পড়লেও ভারতীয়দের অংশগ্রহণের জন্য ওইদিন সীমান্ত উন্মুক্ত করে দেওয়া হয়।
সাধারণত কালীপূজার পর ডিসেম্বর মাসের প্রথম শুক্রবার এ মেলা বসানো হয়। প্রতিবছরের মতো এবারও আত্মীয়স্বজনদের সঙ্গে দেখা করতে কয়েকদিন ধরেই দেশের বিভিন্ন এলাকা থেকে হাজার হাজার মানুষ স্থানীয় আত্মীয়স্বজনদের বাড়িতে আশ্রয় নেয়। মেলাস্থলে কথা হয় গাইবান্ধার গোবিন্দগঞ্জ উপজেলার অখিল চন্দ্র পালের (৬২) সঙ্গে। তিনি জানান, ভারতের রায়গঞ্জে তার বড় ভাই শিশির চন্দ্রের বাড়ি। দেশ স্বাধীনের আগে তার বড় ভাই ভারতে চলে যান। তাই ভাই ও ভাইয়ের ছেলেমেয়েদের সঙ্গে দেখা করতে প্রতিবছর এই মেলায় আসেন তিনি। রসুলপুরের মুর্তজা (৫৫) জানান, মালদার কালিয়াচোখ থানায় তার ভাগ্নে আশরাফ আলী (৩৫) থাকেন। দেশ স্বাধীনের আগে তার বোনের ভারতে বিয়ে হয়। বোনের শ্বশুরবাড়িতে যাওয়া হয়নি। তাই এখানে এসেছেন সবার সঙ্গে দেখা করতে।
জামোরকালি জিউ মন্দির কমিটির সভাপতি ও পূজা উদযাপন কমিটির সভাপতি নগেন কুমার পাল বলেন, মেলাকে কেন্দ্র করে বিজিবি ও বিএসএফের পতাকা বৈঠক হয়েছে। তারাও সব ধরনের সহযোগিতার আশ্বাস দেন। এটি এ অঞ্চলের একটি ঐতিহ্য।
- বিষয় :
- সীমান্তে দুই বাংলার মিলন মেলা
- হরিপুর