হাজী দানেশে জোড়া খুন
জেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগ নেতাসহ জেলহাজতে ২

প্রতীকী ছবি
দিনাজপুর প্রতিনিধি
প্রকাশ: ১৯ আগস্ট ২০২১ | ০৯:২৩
দিনাজপুর হাজী মোহাম্মদ দানেশ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে জোড়া খুন মামলায় জেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগের সাধারণ সম্পাদক জাকারিয়া জাকিরসহ দুই জনকে জেলহাজতে পাঠিয়েছেন আদালত।
বৃহস্পতিবার দুপুরে দিনাজপুর সিনিয়র চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আমলি আদালত-১-এ তারা জামিন চাইতে যান। বিচারক ইসমাইল হোসেন জামিন নামঞ্জুর করে তাদের জেলহাজতে পাঠানোর আদেশ দেন।
আসামিরা হলেন- জেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগের সাধারণ সম্পাদক ও ফুলবাড়ী উপজেলার উত্তর সুজাপুর এলাকার জাকারিয়া জাকির এবং যুবলীগ নেতা ও জেলা শহরের উপশহর এলাকার সিরাজুল সালেকিন রানা। তারা উভয়ই সিআইডির চার্জশিটভুক্ত আসামি। গত বছরের ২৯ জুলাই আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীসহ ২৬ জনের বিরুদ্ধে চার্জশিট দাখিল করেছিল সিআইডি।
দিনাজপুর আদালত পুলিশের পরিদর্শক মনিরুজ্জামান বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। তিনি বলেন, আদালতের আদেশের পর আসামিদের জেলহাজতে নিয়ে যাওয়া হয়েছে।
চার্জশিটে বলা হয়, বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের তৎকালীন কমিটির সাধারণ সম্পাদক অরুণ কান্তি রায় সিটনকে ভর্তি পরীক্ষায় কারচুপির অভিযোগে বহিস্কার এবং বিভিন্ন প্রকল্পের আর্থিক বিষয় নিয়ে বনিবনা না হওয়ায় তৎকালীন ভিসি রুহুল আমিনের বিরুদ্ধে আন্দোলন শুরু করে ছাত্রলীগ। এ সময় ছাত্রলীগের পদবঞ্চিত ছাত্র ও তাদের সহযোগীরা ভিসির পক্ষ নিয়ে একটি নতুন গ্রুপ তৈরি করে। তারা মারধর করে ছাত্রলীগ নেতাকর্মীদের বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বিতাড়িত করে। বিতাড়িতরা আধিপত্য পুনরুদ্ধারে ২০১৫ সালের ১৬ এপ্রিল রাতে অডিটোরিয়াম-১-এ ভেটেরিনারি অনুষদের নবীনবরণ অনুষ্ঠান চলাকালে দুটি মাইক্রোবাস ও কয়েকটি মোটরসাইকেলে বিশ্ববিদ্যালয়ের ভেতরে ঢুকে ককটেল বিস্ফোরণ ও এলোপাতাড়ি ইটপাটকেল নিক্ষেপ করে। সেখান থেকে ছাত্রলীগের অপর গ্রুপের নেতাকর্মীরা শেখ রাসেল হলে আবস্থান নিলে হামলাকারীরা ঘেরাও করে হামলা চালায়। একপর্যায়ে তারা শেখ রাসেল হলের কলাপসিবল গেটের তালা ভেঙে বিভিন্ন অস্ত্র নিয়ে এলোপাতাড়ি হামলা চালায়। সেখানে দুই ছাত্র মারা যায়।
২০১৫ সালের ১৬ এপ্রিল দিনাজপুর হাজী মোহাম্মদ দানেশ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের ভেটেরিনারি অনুষদের নবীনবরণ অনুষ্ঠান চলাকালে রাত ৮টার দিকে ছাত্রলীগের একটি গ্রুপ সশস্ত্র হামলা চালায়। এ সময় তারা বেশ কয়েকটি ককটেল বিস্ফোরণ ও ফাঁকা গুলি করে এবং ছাত্রছাত্রী ও শিক্ষকদের মারধর করে। এর জবাবে অপর একটি গ্রুপ প্রতিরোধ গড়ে তুললে দু'পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষ বাধে। সংঘর্ষে বিবিএ দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্র জাকারিয়া শহীদ নুর হোসেন হলে ও কৃষি বিভাগের ছাত্র মাহমুদুল হাসান মিল্টন গুরুতর আহত হন। পরে দিনাজপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান তারা। খুনের ঘটনায় নিহতদের পরিবারের পক্ষ থেকে পৃথক দুটি মামলায় ৪১ জনকে আসামি করা হয়। একই সঙ্গে কোতোয়ালি থানার এসআই আব্দুল নুর বাদী হয়ে অজ্ঞাতপরিচয় ৫০-৬০ জনের বিরুদ্ধে একটি হত্যা মামলা করেন। গত বছরের মার্চে মামলাগুলো পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডিতে) স্থানান্তরিত করা হয়।