ঢাকা শুক্রবার, ০৪ জুলাই ২০২৫

অন্তঃসত্ত্বার পেটে লাথি মারার অভিযোগ চিকিৎসকদের বিরুদ্ধে

অন্তঃসত্ত্বার পেটে লাথি মারার অভিযোগ চিকিৎসকদের বিরুদ্ধে

ছবি: ফাইল

বগুড়া ব্যুরো

প্রকাশ: ২২ আগস্ট ২০২১ | ০৮:৫৪ | আপডেট: ২২ আগস্ট ২০২১ | ১১:২৭

বগুড়া শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিকেল কলেজ (শজিমেক) হাসপাতালে চিকিৎসাধীন এক অন্তঃসত্ত্বা নারীর পেটে লাথি মারার অভিযোগ উঠেছে ইন্টার্ন চিকিৎসকদের বিরুদ্ধে। 

শনিবার সন্ধ্যার পর হাসপাতালের গাইনি ও প্রসূতি ওয়ার্ডে এ ঘটনা ঘটে। এর আগে ফেসবুক লাইভে এসে চিকিৎসায় অবহেলার অভিযোগ তোলায় ওই নারীর স্বামী ও স্বজনদেরও মারধরের অভিযোগ ওঠে। তবে অভিযোগ অস্বীকার করেছে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ।

খবর পেয়ে পুলিশ গেলে পুলিশের ওপরও চড়াও হন ইন্টার্ন চিকিৎসকরা। এ ঘটনায় রোববার একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন হাসপাতালের উপপরিচালক ডা. আবদুল ওয়াদুদ।

ওই নারীর স্বজন, পুলিশ ও প্রত্যক্ষদর্শী সূত্রে জানা যায়, জেলার শাহজাহানপুর উপজেলার নন্দগ্রাম এলাকার মোহাম্মাদ আছলামের অন্তঃসত্ত্বা স্ত্রী জয়নব বেগমকে গত বুধবার শজিমেক হাসপাতালের গাইনি ওয়ার্ডে ভর্তি করা হয়। ভর্তির তিন দিন পরও যথাযথ চিকিৎসা না দেওয়ার অভিযোগ তুলে ওই নারীর স্বামী আছলাম শনিবার দুপুরে কর্তব্যরত চিকিৎসকদের কক্ষে গিয়ে মোবাইল ফোনে ফেসবুকে লাইভ করেন। এতে তিনি হাসপাতালের চিকিৎসাসেবার মান নিয়ে সমালোচনা করেন। তার আশা ছিল, ফেসবুকে বিষয়টি প্রচার হলে তার স্ত্রীর প্রতি হাসপাতালের সবাই যত্নবান হবেন। বাস্তবে ঘটেছে তার উল্টো। ফেসবুক লাইভের বিষয়টি জানার পর ইন্টার্ন চিকিৎসকরা ক্ষিপ্ত হয়ে ওঠেন। আছলাম শনিবার সন্ধ্যার পর গাইনি ওয়ার্ডে গেলে তার সঙ্গে ইন্টার্ন চিকিৎসকরা বাগ্‌বিতণ্ডায় জড়ান। একপর্যায়ে আছলামকে মারধর করেন তারা।

আছলামের অভিযোগ- তার স্ত্রীর রক্তক্ষরণ হচ্ছিল। সেটি বন্ধের জন্য চিকিৎসকের কাছে সাহায্য চাইতে গেলে তাকে ও তার স্ত্রীকে সন্ধ্যার পর প্রায় এক ঘণ্টা রুমে আটকে রেখে মারধর করা হয়। তার ছয় মাসের অন্তঃস্বত্ত্বা স্ত্রীর পেটেও লাথি মারা হয়। এমনকি তাদের রক্ষা করতে ছোট ভাই জাকির হোসেন এগিয়ে এলে তাকেও মারধর করা হয়।

হাসপাতালে কর্তব্যরত ছিলিপুর পুলিশ ফাঁড়ির চার সদস্য ঘটনাস্থলে গিয়ে উভয় পক্ষকে শান্ত করার চেষ্টা করলে তারাও ইন্টার্ন চিকিৎসকদের হামলার শিকার হন। পরে হাসপাতাল প্রশাসনের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা ঘটনাস্থলে গেলে রাত ৯টার পর পরিস্থিতি শান্ত হয়। তবে উদ্ভূত পরিস্থিতিতে নিরাপত্তার অভাব বোধ করায় স্বজনরা রাত সাড়ে ১০টার দিকে ওই নারীকে শজিমেক হাসপাতাল থেকে বের করে শহরের একটি বেসরকারি হাসপাতালে ভর্তি করেন। ছিলিমপুর পুলিশ ফাঁড়ির পরিদর্শক রফিকুল ইসলাম জানান, কর্তব্যরত চার পুলিশ সদস্য সামান্য আঘাত পেয়েছেন।

এদিকে, শজিমেক হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ ইন্টার্ন চিকিৎসকদের বিরুদ্ধে অন্তঃসত্ত্বা নারী ও তার স্বজনদের মারধরের অভিযোগ অস্বীকার করেছে। হাসপাতালের উপপরিচালক ডা. আবদুল ওয়াদুদ বলেন, অন্তঃসত্ত্বা এক নারীর স্বামী শনিবার দুপুরে হাসপাতালের চিকিৎসাসেবা নিয়ে ফেসবুকে লাইভ করেন। এ নিয়েই মূলত সমস্যার সূত্রপাত। সন্ধ্যার পর তা নিয়ে আবারও হট্টগোলের সৃষ্টি হয়। তবে সেখানে মারধরের কোনো ঘটনা ঘটেনি।

তিনি আরও জানান, ঘটনাটি তদন্তের জন্য হাসপাতালের সার্জারি বিভাগের সহকারী অধ্যাপক ডা. জাফর সাদিককে প্রধান করে চার সদস্যের কমিটি গঠন করা হয়েছে। তাদের তিন দিনের মধ্যে প্রতিবেদন দিতে বলা হয়েছে।

আরও পড়ুন

×