ঢাকা শুক্রবার, ০৪ জুলাই ২০২৫

রেলের নতুন কেনা আরেক ইঞ্জিন বিকল

রেলের নতুন কেনা আরেক ইঞ্জিন বিকল

ফাইল ছবি

ভৈরব (কিশোরগঞ্জ) প্রতিনিধি

প্রকাশ: ০৯ অক্টোবর ২০২১ | ১২:২৭ | আপডেট: ০৯ অক্টোবর ২০২১ | ১২:২৭

দক্ষিণ কোরিয়ার হুন্দাই রোটেম কোম্পানি থেকে কেনা আলোচিত সেই ১০টি মিটারগেজ লোকোমোটিভের (ইঞ্জিন) একটি শনিবার সকালে বিকল হয় কিশোরগঞ্জের ভৈরবে। ৩০০৬ নম্বরের এই ইঞ্জিন ‘চট্টগ্রাম মেইল’ ট্রেন নিয়ে ঢাকায় যাচ্ছিল। এর আগে গত বৃহস্পতিবার ৩০০৩ নম্বর ইঞ্জিন বিকল হয়েছিল।

ভৈরব স্টেশনের মাস্টার মো. নুরুন নবী সমকালকে বলেছেন, শুক্রবার রাতে চট্টগ্রাম থেকে ছেড়ে আসা ট্রেনটি গতকাল ভোর সাড়ে ৫টার দিকে ভৈরবের জিল্লুর রহমান রেলওয়ে সেতু পার হওয়ার আগে যান্ত্রিক ক্রুটিতে ইঞ্জিন বিকল হয়। সাড়ে পাঁচ ঘণ্টা ট্রেনটি আটকে ছিল। পরে আখাউড়া থেকে বিকল্প ইঞ্জিন এনে চট্টগ্রাম মেইল ট্রেনটি ঢাকায় পাঠানো হয়।

হুন্দাই রোটেম থেকে ৩২৩ কোটি টাকায় কেনা ১০টি মিটারগেজ ইঞ্জিন গত বছরের আগস্টে দেশে আনা হয়। তখন জানা যায়, ঠিকাদার চুক্তি অনুযায়ী যন্ত্রাংশ দেয়নি। তখনকার প্রকল্প পরিচালক এ কারণে ইঞ্জিনগু গ্রহণে অস্বীকৃতি জানান। পরে রেলপথ মন্ত্রণালয় কয়েকটি কমিটি করে, তাদের মতামত নিয়ে ইঞ্জিনগুলো গ্রহণ করে।

অভিযোগ রয়েছে, ইঞ্জিন গ্রহণেও চুক্তির শর্ত ভঙ্গ করা হয়েছে। দুর্নীতির অভিযোগ তোলা প্রকল্প পরিচালককে বদলি করে দেওয়া হয়। প্রায় এক বছর পাহাড়তলীতে নানা রকম পরীক্ষা এবং বসিয়ে রাখার পর গত ৩ অক্টোবর থেকে চলছে ইঞ্জিনগুলো।

এদিকে ভ্যাট ট্যাপসহ প্রতিটি ইঞ্জিনের দাম পড়েছে প্রায় ৪৩ কোটি টাকা। এই ১০ ইঞ্জিনের নম্বর ৩০০১ থেকে ৩০১০। শনিবার ভোরে যে ইঞ্জিনটি বিকল হয় তার নম্বর ৩০০৬ এমইআই-২০। গত বৃহস্পতিবার ৩০০৩ নম্বর ইঞ্জিনে ‘চট্টগ্রাম মেইল’ ট্রেন ঢাকায় আসার পথে রাজধানীর তেজগাঁও স্টেশনে বিকল হয়েছিল।

সেদিন বর্তমান প্রকল্প পরিচালক হাসান মনসুর সমকালকে বলেছিলেন, ইঞ্জিন বিকল হয়নি। ইঞ্জিনে ক্রুটিও নেই। ১৬ এবং ২৫১ নম্বর বগির ভ্যাকুয়াম সংযোগের ক্রুটিতে তেজগাঁ‎ও স্টেশনে এসে ইঞ্জিন বন্ধ হয়ে যায়। তবে গতকাল ভোরে ভৈরব স্টেশনে ইঞ্জিন বিকল হওয়ার বিষয়ে প্রকল্প পরিচালকের বক্তব্য জানতে পারেনি সমকাল। তার দু’টি ফোন নম্বর বন্ধ পাওয়া যায়। ৩০০৬ ইঞ্জিনে কী যান্ত্রিক ক্রুটি হয়েছিল তা শনিবার রাত সাড়ে ১১ পর্যন্ত পর্যন্ত জানা যায়নি।

রেল সূত্রে জানা গেছে, হুন্দাই রোটেমের কাছ থেকে কেনা লোকোমোটিভগুলোতে দরপত্রের শর্তানুযায়ী তিনটি গুরুত্বপূর্ণ উপাদান (ক্যাপিটাল কম্পোনেন্ট) ইঞ্জিন, অল্টারনেটর ও ট্রাকশন মোটর সংযোজন করা হয়নি। তদন্তেও তা প্রমাণ হয়েছে।‘নিম্নমানের’ ক্যাপিটাল কম্পোনেন্ট দেওয়ার অভিযোগ রয়েছে। লোড বপসহ ১১ ধরনের যন্ত্রাংশ দেওয়া হয়নি।

চুক্তি অনুযায়ী যন্ত্রাংশ না পাওয়ার অনিয়মে রেলের তৎকালীন মহাপরিচালক মো. শামসুজ্জামান ও অতিরিক্ত মহাপরিচালক (রোলিং স্টোক) মঞ্জুর-উল-আলমও জড়িত বলে লিখিত অভিযোগ রয়েছে। গ্রহণ না করে সমুদ্রবন্দরে ফেলে রাখলে জরিমানা গুনতে হবে- এই যুক্তিতে রেলমন্ত্রী নুরুল ইসলামের নির্দেশে ইঞ্জিন খালাস করা হয়েছিল। 


আরও পড়ুন

×