শিশুসন্তান হত্যার অভিযোগ ‘মানসিক ভারসাম্যহীন’ মায়ের বিরুদ্ধে

গৌরনদী (বরিশাল) প্রতিনিধি
প্রকাশ: ১৯ ডিসেম্বর ২০২১ | ১১:১৮ | আপডেট: ১৯ ডিসেম্বর ২০২১ | ১১:১৮
গৌরনদী উপজেলায় পলি বেগম নামে এক নারীর বিরুদ্ধে তার তিন মাস ১২ দিন বয়সী ছেলেকে হত্যার অভিযোগ পাওয়া গেছে। উপজেলার বড় দুলালী গ্রামে শনিবার রাতে এ ঘটনা ঘটে। পলি মানসিক সমস্যায় ভুগছিলেন বলে জানা গেছে।
শিশুটির পরিবার ও পুলিশ সূত্রে জানা যায়, পলি ওই গ্রামের সাগির তালুকদারের স্ত্রী। এই দম্পতির তিন সন্তান রয়েছে। শনিবার রাত সাড়ে ১০টার দিকে সর্বকনিষ্ঠ সন্তান জুবায়ের তালুকদারকে গোয়ালঘরের পেছনে নিয়ে গলা টিপে ও বালতির পানিতে চুবিয়ে হত্যা করেন মা। এরপর তিনি বাড়ি সংলগ্ন একটি বাঁশঝাড়ে মাটিচাপা দেওয়ার চেষ্টা করেন। পরিবারের সদস্যরা টের পাওয়ায় পলি বেগম গা-ঢাকা দেন। গৌরনদী মডেল থানা পুলিশ রাতেই শিশুটির মরদেহ উদ্ধার করেছে। ময়নাতদন্তের জন্য মরদেহ রোববার সকালে বরিশাল মর্গে পাঠানো হয়।
শিশুটির সেজো চাচা দুবাইপ্রবাসী হজরত আলী সমকালকে জানিয়েছেন, শনিবার সন্ধ্যার পরপরই তার অসুস্থ মেজো ভাই সাগির শিশুসন্তান জুবায়েরকে নিয়ে ঘুমিয়ে পড়েন। রাত ১১টার দিকে ঘুম ভেঙে তিনি জুবায়ের ও তার মা পলি বেগমকে পাশে না পেয়ে অন্য সন্তানদের চাচাদের ডাকতে বলেন। পরে খোঁজাখুঁজি করে জুবায়েরের মরদেহ পাওয়া যায়। গোয়ালঘরের পেছনে একটি বালতির পানিতে চুবিয়ে ঢেকে রাখা অবস্থায় তারা শিশুটির মরদেহ দেখতে পান।
তিনি আরও জানান, শুরু থেকেই পলি বেগম তার স্বামী সাগিরকে গর্ভপাত ঘটানোর প্রস্তাব দেন। এতে রাজি না হলে পলি স্বামীর পরিবারের সবার সঙ্গে অসংলগ্ন আচরণ শুরু করেন। সন্তানটি ভূমিষ্ঠ হওয়ার পর পলি তার স্বামীর পরিবারের সবাইকে বলেছিলেন, শিশুপুত্রকে হত্যা করা না হলে তাদের পরিবারের ঘোর অমঙ্গল হবে। তবে এর পেছনে পলির মানসিক সমস্যার কথা বলেছেন তার পরিবারের সদস্যরা।
পলি বেগমের ছোট ভাই পার্শ্ববর্তী আগৈলঝাড়া উপজেলার গৌহার গ্রামের সাইদুল ইসলাম বলেন, জুবায়ের গর্ভে আসার পরই বোন মানসিক রোগী হয়ে গেছে। পলির চাচাতো ভাই ইউপি সদস্য সাকিব হোসেন শাহিনও একই তথ্য দেন। শিশুটির বাবা শোকে কাতর থাকায় কোনো কথা বলতে পারেননি।
গৌরনদী মডেল থানার ওসি আফজাল হোসেন জানান, এ ঘটনায় শিশুটির বাবা পলাতক পলি বেগমকে আসামি করে থানায় হত্যা মামলা করেছেন। তাকে আটক করা হলে হত্যাকাণ্ড কে ঘটিয়েছে এবং এর পেছনের কারণ কী, তা জানা যাবে।