ঢাকা বুধবার, ০২ জুলাই ২০২৫

চৌত্রিশটি ডিম দিলো বিলুপ্তপ্রায় বাটাগুরবাস্কা কচ্ছপ

চৌত্রিশটি ডিম দিলো বিলুপ্তপ্রায় বাটাগুরবাস্কা কচ্ছপ

ছবি: সমকাল

মোংলা (বাগেরহাট) প্রতিনিধি

প্রকাশ: ০৬ মার্চ ২০২২ | ০০:১৪ | আপডেট: ০৬ মার্চ ২০২২ | ০০:১৮

সুন্দরবনের করমজলে দেশের একমাত্র বন্যপ্রাণী প্রজনন কেন্দ্রের বিলুপ্তপ্রায় একটি বাটাগুরবাস্কা প্রজাতির একটি কচ্ছপ চৌত্রিশটি ডিম দিয়েছে। শনিবার রাতে প্রজনন প্রকল্পের পুকুর পাড়ের স্যান্ডবিজে (বালুর মধ্যে) ডিম দেয় কচ্ছপটি।

করমজল পর্যটন ও বন্যপ্রাণী প্রজনন কেন্দ্রের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো. আজাদ কবির জানান, কচ্ছপের ডিম দেওয়ার পরিবেশ উপযোগী করে আগে থেকেই প্রকল্পের পুকুর পাড়ে বালুর স্যান্ডবিজ তৈরি করে রাখা হয়েছিল। সেখানে শনিবার রাতে ডিম দেয় প্রকল্পের একটি কচ্ছপ। এরপর রোববার সকালে স্যান্ডবিজ থেকে ডিমগুলো তুলে ইনকিউবেশন (বৈজ্ঞানিক পদ্ধতিতে সংরক্ষণ) করা হয়েছে। বালুর স্যান্ডবিজ থেকে তুলে বাচ্চা ফুটানোর জন্য আবারও বালুর ইনকিউবেশনে রাখা হয়েছে ডিমগুলো। ইনকিউবেশনে সঠিক তাপমাত্রায় (২৭/২৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস) ৬০ থেকে ৬৫ দিনের মধ্যে এ ডিম থেকে বাচ্চা ফুটে বের হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।

গত বছর অর্থাৎ ২০২১ সালে এ প্রকল্পের চারটি কচ্ছপ ৯৬টি ডিম দেয়। তার মধ্যে ৭৯টি ডিমে বাচ্চা ফোটে। আর ২০২০ সালে দু’টি কচ্ছপের দেওয়া ৫৬টি ডিমে বাচ্চা হয় ৫২টি। যার গড় বাচ্চা ফোটার হার ৯০ ভাগ ও তার চেয়েও বেশি। এবারও অন্তত ৯০ ভাগের মতই ডিমের বাচ্চা পাওয়া যাবে বলে আশাবাদী বনবিভাগ। এছাড়া আরও একটি কচ্ছপ দুই একদিনের মধ্যে ডিম দিবে জানান বন কর্মকর্তা মো. আজাদ কবির।

করমজল কচ্ছপ প্রজেক্টের ষ্টেশন ম্যানেজার আঃ রব জানান, ২০১৪ সালে পূর্ব সুন্দরবনের চাঁদপাই রেঞ্জের (মোংলা) করমজল পর্যটন ও বন্যপ্রাণী প্রজনন কেন্দ্রে গড়ে তোলা হয় দেশের বিলুপ্ত প্রায় বাটাগুরবাস্কা কচ্ছপের প্রজনন প্রকল্প। শুরুতেই চারটি পুরুষ ও চারটি নারী কচ্ছপ দিয়েই এ প্রজনন কার্যক্রম শুরু হয়। ২০১৭ সাল থেকে এ প্রকল্পে কচ্ছপ ডিম দিতে শুরু করে। বর্তমানে এ প্রজেক্টে ছোট বড় মিলিয়ে ৪৩৬টি কচ্ছপ রয়েছে।

মূলত বিলুপ্ত প্রায় বাটাগুরবাস্কা প্রজাতির কচ্ছপের বংশবিস্তার, প্রজনন, খাদ্যাভাস, আচরণ ও বিচরণক্ষেত্রসহ নানা বিষয়ে জানতে গবেষণার জন্যই এ প্রকল্প চালু করে বনবিভাগ। বনবিভাগের এ প্রকল্পের সাথে রয়েছে অস্ট্রিয়ার জুভিয়েনা, আমেরিকার টিএসএ ও ঢাকার প্রকৃতি ও জীবন ফাউন্ডেশন। তবে এ প্রকল্পটি সফলতার দিকেই অগ্রসর হচ্ছেন বলে জানিয়েছেন কচ্ছপ প্রকল্পের ষ্টেশন ম্যানেজার আঃ রব।

আরও পড়ুন

×