গাড়ির যন্ত্রাংশ চুরি করে মালিকের কাছেই বিক্রি

গাড়ির যন্ত্রাংশ চুরি চক্রের গ্রেপ্তার ৭ সদস্য
সমকাল প্রতিবেদক
প্রকাশ: ২৭ এপ্রিল ২০২২ | ০১:০৯ | আপডেট: ২৭ এপ্রিল ২০২২ | ১১:৫৭
গাড়ির বিপুল পরিমাণ চোরাই যন্ত্রাংশসহ চক্রের সাত সদস্যকে গ্রেপ্তার করেছে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের (ডিবি) লালবাগ বিভাগ।
মঙ্গলবার রাজধানীর পল্টন ও ভাটারা এলাকায় এ অভিযান চালানো হয়।
ডিবি জানায়, মাত্র দু-তিন মিনিটেই সুকৌশলে যন্ত্রাংশ চুরি করে এই চক্রের সদস্যরা। পরে অনেক সময় যার গাড়ির যন্ত্রাংশ চুরি হয়েছে, তার কাছেই বেশি দামে সেগুলো বিক্রি করা হয়।
গ্রেপ্তারকৃতরা হলো- এনামুল মোল্লা, এনামুল হক ওরফে এনাম, বকুল চৌধুরী, শরিফ আহম্মেদ ওরফে কালু, বিল্লাল হোসেন, ইকবাল হোসেন ওরফে পলাশ ও ইকবাল খান। তাদের কাছে পাওয়া গেছে বিভিন্ন মডেলের প্রাইভেটকার, মাইক্রোবাস ও জিপের নানা যন্ত্রাংশ ও মিরর।
এ ব্যাপারে বিস্তারিত জানাতে গতকাল বুধবার রাজধানীর মিন্টো রোডে ডিএমপি মিডিয়া সেন্টারে এক সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করা হয়। এতে ডিবির যুগ্ম কমিশনার (দক্ষিণ) মাহবুব আলম জানান, গ্রেপ্তারকৃতরা দীর্ঘদিন ধরে চোরচক্রের কাছ থেকে গাড়ির যন্ত্রাংশ সংগ্রহ করে কার প্লাস মার্কেটের কালু, বিল্লাল, স্কাউট মার্কেটের চুন্নু, পলাশ, বারিধারার ইকবাল, মহাখালী জেবা মার্কেটের নাহিদ, পরাণ, মামুন ও ধোলাইখালের সানাউলদের কাছে বিক্রি করে আসছিল।
তাদের নামে আগেও চোরাই যন্ত্রাংশ কেনার অভিযোগে মামলা রয়েছে। তারা সাত-আট বছর ধরে গাড়ির চোরাই যন্ত্রাংশ কেনাবেচায় জড়িত। অনেক ক্ষেত্রে তারা চুরি করা যন্ত্রাংশ সংশ্লিষ্ট গাড়ির মালিকের কাছেই বিক্রি করে। কারণ, অনেক গাড়ির নতুন যন্ত্রাংশ মার্কেটে আলাদাভাবে আমদানি করা হয় না, কিনতেও পাওয়া যায় না। আবার আগাম অর্ডার নিয়েও দামি গাড়ির যন্ত্রাংশ চুরি করত তারা। চাহিদা আছে, অথচ মার্কেটে পওয়া যায় না এমন গাড়ির যন্ত্রাংশ চুরি করাই তাদের মূল লক্ষ্য।
দিনে লোকজন কম, আর রাতে অন্ধকার- এমন জায়গা থেকে সুকৌশলে দুই থেকে তিন মিনিটে গাড়ির দামি যন্ত্রাংশ খুলে নেওয়ার ক্ষেত্রে তাদের বিশেষ দক্ষতা রয়েছে। চুরির পর মুহূর্তেই তা দোকানে স্বল্প দামে বিক্রি করে দেওয়া হয়। গ্রেপ্তারকৃতদের বিরুদ্ধে পল্টন থানায় মামলা হয়েছে। এখন থেকে চোরাই যন্ত্রাংশ কেনাবেচার সন্দেহজনক স্থানগুলোয় নজরদারি বাড়ানো হবে।
ডিবির সংঘবদ্ধ অপরাধ ও গাড়ি চুরি প্রতিরোধ দলের সহকারী কমিশনার মধুসূদন দাস সমকালকে জানান, গ্রেপ্তারকৃতদের অন্তত চারজন চোর চক্রের আলাদা দলের নেতা। তাদের মধ্যে এনামুল হক গুলশান ও উত্তরা, এনামুল মোল্লা মিরপুর ও ধানমন্ডি, কালু পল্টন এবং ইকবাল হোসেন বারিধারা এলাকায় চোরদের নিয়ন্ত্রণ করে আসছিল। চোরাই যন্ত্রাংশ বিক্রিতে জড়িত সাতটি দোকানের সন্ধান প্রাথমিকভাবে পাওয়া গেছে।
সেগুলো হলো- পল্টন স্কাউট মার্কেটের দুটি দোকান, মহাখালী জেবা টাওয়ারের তিনটি দোকান, ধোলাইখালে একটি দোকান ও বারিধারা জে-বক্ল একটি দোকান।
সংবাদ সম্মেলনে যন্ত্রাংশ চুরির একটি সিসিটিভি ফুটেজ দেখিয়ে জানানো হয়, কোনো মামলা বা জিডি নয়, ডিবি ফেসবুকে বিভিন্নজনের পোস্ট দেখে এই চোরচক্রকে শনাক্ত করতে মাঠে নামে।