কর্মশালায় বক্তারা
‘তামাক নিয়ন্ত্রণ আইন সংশোধন বাধাগ্রস্ত করতে ভিত্তিহীন তথ্য প্রচার হচ্ছে’

কর্মশালায় বিভিন্ন ধরনের প্ল্যাকার্ড প্রদর্শন করা হয় - সমকাল
সমকাল প্রতিবেদক
প্রকাশ: ১৪ সেপ্টেম্বর ২০২২ | ০৭:৫৪ | আপডেট: ১৪ সেপ্টেম্বর ২০২২ | ০৯:২৪
তামাকমুক্ত বাংলাদেশ গড়তে আইন সংশোধনের উদ্যোগ নিয়েছে স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়। ইতোমধ্যে এর খসড়া সংশোধনী তৈরি ও তা ওয়েবসাইটে প্রকাশ এবং অংশীজনের মতামত গ্রহণের কাজ শেষ হয়েছে। তবে সরকারের এই উদ্যোগকে বাধাগ্রস্ত করতে মিথ্যা ও ভিত্তিহীন তথ্য প্রচার করছে তামাক কোম্পানিগুলো। গণমাধ্যম এক্ষেত্রে সঠিক তথ্য-উপাত্ত ও আইন শক্তিশালীকরণের যৌক্তিকতা তুলে ধরে খসড়াটি দ্রুত চূড়ান্তকরণে জোরালো ভূমিকা পালন করতে পারে।
বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব প্ল্যানারস কনফরেন্সে ‘তামাক নিয়ন্ত্রণ আইন শক্তিশালীকরণ, কোম্পানির অপতৎপরতা এবং গণমাধ্যমের করণীয়’ শীর্ষক দুই দিনব্যাপী সাংবাদিক কর্মশালায় এসব বিষয় নিয়ে আলোচনা করেন বক্তারা।
কর্মশালায় বক্তারা বলেন, তামাক কোম্পানিগুলো এবং তাদের সুবিধাভোগী গোষ্ঠীগুলো প্রেস কনফারেন্স, পলিসি ডায়লগ, মিডিয়া ক্যাম্পেইনসহ বিভিন্নভাবে খসড়া সংশোধনীর বিভিন্ন ধারা ভুলভাবে উপস্থাপন করে জনগণ এবং নীতিনির্ধারকদের বিভ্রান্ত করার চেষ্টা করছে। বিশ্বের ৬৭টি দেশ ‘ধূমপানের জন্য নির্ধারিত স্থান’ রাখার বিধান বাতিল করে পূর্ণাঙ্গ ধূমপানমুক্ত আইন বাস্তবায়ন করলেও বাংলাদেশি কোম্পানিগুলো এই ধারার বিরোধিতা করছে। ‘ধূমপানের জন্য নির্ধারিত স্থান’ বহাল রেখে পরোক্ষ ধূমপান থেকে অধূমপায়ীদের সুরক্ষা প্রদান কখনই সম্ভব নয় বলে কর্মশালায় উল্লেখ করা হয়।
বক্তারা বলেন, ই-সিগারেট কম ক্ষতিকর এবং এটি নিষিদ্ধ হলে প্রচলিত সিগারেটের ব্যবহার বেড়ে যাবে বলে প্রচার হচ্ছে, যা মোটেও সঠিক নয়। ই-সিগারেটসহ সবধরনের ভ্যাপিং পণ্য জনস্বাস্থ্যের জন্য মারাত্মক ক্ষতিকর। ফলে ভারতসহ বিশ্বের অন্তত ৩২টি দেশ এসব পণ্য নিষিদ্ধ করেছে।
কর্মশালায় বক্তারা আরও বলেন, জনস্বাস্থ্যবিষয়ক আইন বা বিধি প্রণয়নে তামাক কোম্পনিগুলো ও তাদের স্বার্থ সংশ্লিষ্ট কোনো গোষ্ঠীর পরামর্শ বা মতামত গ্রহণ স্পষ্টভাবেই বিশ্ব স্বাস্ব্য সংস্থার ফ্রেমওয়ার্ক কনভেনশন অন টোব্যাকো কন্ট্রোলের (এফসিটিসি) আর্টিক্যাল-৫ দশমিক তিন এর লঙ্ঘন। বাংলাদেশ এই আন্তর্জাতিক চুক্তির প্রথম স্বাক্ষরকারী দেশ।
সমাপনী বক্তব্যে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য অধ্যাপক ড. আ আ ম স আরেফিন সিদ্দিক বলেন, স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের এই উদ্যোগ প্রশংসনীয়। আশা করবো, তামাক কোম্পানির অপতৎপরতা আমলে না নিয়ে জনস্বাস্ব্যকে অগ্রাধিকার দিয়ে সরকার আইনটির সংশোধন প্রক্রিয়া দ্রুততম সময়ের মধ্যে সম্পন্ন করবে।