ঢাকা বুধবার, ০২ জুলাই ২০২৫

বর্জ্য ব্যবস্থাপনা কর্মী নিয়োগে চলে ঘুষ-স্বজনপ্রীতি: টিআইবি

বর্জ্য ব্যবস্থাপনা কর্মী নিয়োগে চলে ঘুষ-স্বজনপ্রীতি: টিআইবি

সমকাল প্রতিবেদক

প্রকাশ: ১৩ ডিসেম্বর ২০২২ | ১০:৪৮ | আপডেট: ১৩ ডিসেম্বর ২০২২ | ১০:৪৮

দেশের সরকারি হাসপাতাল, সিটি করপোরেশন ও ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানে চিকিৎসা বর্জ্য ব্যবস্থাপনায় কর্মী নিয়োগে স্বজনপ্রীতি এবং ঘুষ লেনদেনের তথ্য পেয়েছে ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশ (টিআইবি)।

মঙ্গলবার 'চিকিৎসা-বর্জ্য ব্যবস্থাপনায় সুশাসনের চ্যালেঞ্জ ও উত্তরণের উপায়' শীর্ষক এক গবেষণা প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়।

অনলাইন প্ল্যাটফর্মের এ অনুষ্ঠানে জানানো হয়, গবেষণায় টিআইবি ২০২১ সালের জুন থেকে ২০২২ সালের নভেম্বর পর্যন্ত ২ শতাধিক সরকারি-বেসরকারি হাসপাতাল, সিটি করপোরেশন, পৌরসভা ও ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের তথ্য সংযুক্ত করেছে। চিকিৎসা বর্জ্য ব্যবস্থাপনায় যুক্ত বিভিন্ন স্তরের ব্যক্তিদেরও সাক্ষাৎকার নেওয়া হয়েছে।

গবেষণায় দেখা গেছে, ৫৫ শতাংশ বর্জ্য ব্যবস্থাপনা কর্মী নিয়োগ হয়েছে অনিয়ম ও দুর্নীতির মাধ্যমে। ৪৬ শতাংশ স্বজনপ্রীতি, ৪২ শতাংশ প্রভাবশালীর হস্তক্ষেপ ও ১৪ শতাংশের নিয়োগ সরাসরি ঘুষের মাধ্যমে।

এর মধ্যে হাসপাতালে বর্জ্য ব্যবস্থাপনা কর্মী নিয়োগে ১ থেকে ২ লাখ টাকা পর্যন্ত লেনদেন হয়েছে, যার ভাগ পেয়েছেন স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের বিভিন্ন স্তরের কর্মকর্তা-কর্মচারী। সিটি করপোরেশন ও পৌরসভায় নিয়োগ পেতে ঘুষ লেনদেন ৫ থেকে ৬০ হাজার; মেয়র, কাউন্সিলর থেকে কর্মচারীরাও এ টাকার ভাগ পান। আর ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানে নিয়োগ পেতে ২ থেকে ১০ হাজার টাকা পর্যন্ত ঘুষ দিতে হয়।

টিআইবি বলেছে, দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ায় দ্বিতীয় সর্বোচ্চ চিকিৎসা বর্জ্য তৈরি হয় বাংলাদেশে। কিন্তু এখানে জনস্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকর এ বর্জ্য ব্যবস্থাপনা দুর্বল। এমনকি অপরিশোধিত ও ক্ষতিকর এ চিকিৎসা বর্জ্য একটি চক্র বাজারে বিক্রি করছে।

গবেষণা প্রতিবেদনে বলা হয়, দেশের ৬০ শতাংশ হাসপাতালে চিকিৎসা বর্জ্য রাখার পাত্র নেই। আর ৮৩ শতাংশ হাসপাতালে নেই পরিশোধনের ব্যবস্থা। হাসপাতালের কর্মীদের একাংশ ও ঠিকাদারদের একটি চক্র অপরিশোধিত চিকিৎসা বর্জ্য বাজারে ফিরিয়ে আনছে।

পরিবেশ সংরক্ষণ বিধিমালা-১৯৯৭ অনুযায়ী 'লাল' শ্রেণিভুক্ত প্রতিষ্ঠান হিসেবে হাসপাতালে তরল বর্জ্য ব্যবস্থাপনার জন্য এফ্লুয়েন্ট ট্রিটমেন্ট প্লান্ট (ইটিপি) বাধ্যতামূলক হলেও ৮৩ শতাংশ হাসপাতালে তা নেই। ১৭ শতাংশ হাসপাতালে ইটিপি থাকলেও এর মধ্যে ১৬ শতাংশ সচল নয়। জরিপের আওতাধীন সিটি করপোরেশন এবং ৭৭ শতাংশ পৌরসভায় চিকিৎসা বর্জ্য ব্যবস্থাপনায় আলাদা কোনো বরাদ্দ নেই। বাজেট ঘাটতির কারণে হাসপাতালগুলোর আধুনিক প্রযুক্তির ইটিপি ও ইনসিনেরেটর কেনার সামর্থ্য নেই। ক্ষেত্রবিশেষে বাড়তি বিদ্যুৎ বিল এড়াতে ইটিপি, ইনসিনেরেটর, অটোক্লেভসহ বর্জ্য শোধন যন্ত্র ব্যবহার করা হয় না বলে টিআইবির গবেষণায় উঠে এসেছে।

টিআইবির নির্বাহী পরিচালক ইফতেখারুজ্জামান বলেন, 'চিকিৎসা বর্জ্য ব্যবস্থাপনায় অরাজক পরিস্থিতি দেখা যাচ্ছে। সংশ্নিষ্ট আইনে দুর্বলতা আছে, এজন্য প্রাতিষ্ঠানিক কাঠামোও গড়ে ওঠেনি।'

আরও পড়ুন

×