ঢাকা সোমবার, ০৭ জুলাই ২০২৫

হেগে আন্তর্জাতিক কনক্লেভে বক্তারা

রোহিঙ্গাদের জন্য বিশ্ব সম্প্রদায়কে এক হয়ে কাজ করতে হবে

রোহিঙ্গাদের জন্য বিশ্ব সম্প্রদায়কে এক হয়ে কাজ করতে হবে

ফাইল ছবি

 সমকাল প্রতিবেদক

প্রকাশ: ১৮ অক্টোবর ২০১৯ | ১১:৪৭ | আপডেট: ১৩ নভেম্বর ২০১৯ | ১০:৩৭

রাখাইনে রোহিঙ্গাদের ওপর সংঘটিত গণহত্যার ন্যায়বিচার ও জবাবদিহি নিশ্চিতে বিশ্ব সম্প্রদায়কে এক হয়ে কাজ করতে হবে। বিশেষ করে কফি আনান কমিশনের সুপারিশ বাস্তবায়নে মিয়ানমার সরকারের ওপর চাপ প্রয়োগ করলে দীর্ঘমেয়াদি সমাধান মিলতে পারে। এর জন্য বিশেষ করে জাতিসংঘ ও আঞ্চলিক সংস্থার ভূমিকা গুরুত্বপূর্ণ।

রাখাইন থেকে বাস্তুচ্যুতি এবং গণহত্যা ও ধর্ষণের শিকার রোহিঙ্গাদের জন্য সুবিচার ও জবাবদিহি নিশ্চিতের লক্ষ্যে শুক্রবার নেদারল্যান্ডসের হেগে অনুষ্ঠিত আন্তর্জাতিক কনক্লেভে বক্তারা এসব কথা বলেন। ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয়ের সেন্টার ফর পিস অ্যান্ড জাস্টিস (সিপিজে) এ আয়োজন করে।

বক্তারা আরও বলেন, রোহিঙ্গাদের ওপর মিয়ানমারের নিপীড়ন অবশ্যই গণহত্যা হিসেবে স্বীকৃতি পাবে। সীমান্ত পাড়ি দিয়ে জীবন বাঁচাতে রোহিঙ্গারা আশ্রয় নেয় বাংলাদেশে। বাংলাদেশ সরকার রোহিঙ্গাদের বিষয়ে যে আচরণ দেখিয়েছে, সেটি অবশ্যই মানবিক এবং দৃষ্টান্তমূলক।

কনক্লেভে গাম্বিয়ার বিচারমন্ত্রী আবু বকর ম্যারি টাম্বাডো বলেছেন, গত বছরের শুরুতে তিনি কপবাজারে রোহিঙ্গা শিবিরে গিয়েছিলেন। তিনি সে সময় রোহিঙ্গাদের ওপর ঘটে যাওয়া গণহত্যার গন্ধ পাচ্ছিলেন। গণহত্যার পাশাপাশি রোহিঙ্গা নারীদের গণধর্ষণের বিষয়েও তিনি বিস্তারিত জেনেছিলেন।

তার বক্তব্য সমর্থন করে অন্য বক্তারা বলেন, রোহিঙ্গাদের জন্য ন্যায়বিচার এবং জবাবদিহি নিশ্চিত করতে বিশ্ব সম্প্রদায়কে এক হয়ে কাজ করতে হবে। জবাবদিহির বিষয়ে মিয়ানমার সরকারের ওপর চাপ প্রয়োগ করার বিকল্প নেই।

এ ইস্যুতে অগ্রগতি তুলে ধরে মিয়ানমারে কানাডার বিশেষ দূত বব রে বলেন, দেড় বছরে জবাবদিহি নিশ্চিতের বিষয়ে বেশকিছু অগ্রগতি সম্পন্ন হয়েছে। তবে আরও অনেক কাজ বাকি রয়েছে। ন্যায়বিচার নিশ্চিতের জন্য বিশেষ করে কফি আনানের নেতৃত্বাধীন কমিশনের সুপারিশগুলো সহায়ক ভূমিকা রাখতে পারে।

তিনি আরও বলেন, ওই প্রতিবেদনে রোহিঙ্গাদের মর্যাদা দেওয়ার বিষয়ে সুনির্দিষ্ট দিক-নির্দেশনা রয়েছে। সেটি ধরে মিয়ানমারের ওপর চাপ বাড়ানোর উপায় নেওয়া যেতে পারে। আনান কমিশনের প্রতিবেদন বাস্তবায়ন হলে কেবল রোহিঙ্গা নয়, মিয়ানমারের অন্য সব সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের অধিকারও নিশ্চিত হবে।

বক্তারা সমন্বিত কণ্ঠে রোহিঙ্গা সংকট সমাধানে তাৎক্ষণিক এবং দীর্ঘমেয়াদি পদক্ষেপ নেওয়ার আহ্বান জানান। মানবিক, আইনি, রাজনৈতিক এবং কূটনৈতিক চ্যালেঞ্জের মধ্য দিয়ে রোহিঙ্গা সংকটকে বহুমাত্রিকতা প্রদানের ওপরও জোর দেন।

পররাষ্ট্র সচিব মো. শহীদুল হক অনুষ্ঠানের সমাপনী সেশনে বক্তব্য দেন। স্বাগত বক্তব্য দেন ইন্টারন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অব সোশ্যাল স্টাডিজের সৈয়দ মানসুব মুর্শেদ। বক্তব্য দেন ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ভিনসেন্ট চ্যাং, সেন্টার ফর পিস অ্যান্ড জাস্টিসের নির্বাহী পরিচালক মনজুর হাসান, রোহিঙ্গা হিউম্যান রাইটস নেটওয়ার্কের ইয়াসমিন উল্লাহ প্রমুখ। এ ছাড়া বিশ্বের বিভিন্ন দেশের শতাধিক গবেষক, বিশেষজ্ঞ, শিক্ষাবিদ, নীতি-নির্ধারক, খ্যাতনামা মানবাধিকার ব্যক্তিত্ব, আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংস্থার প্রতিনিধি এবং বিশিষ্ট আইনবিদরা এতে অংশ নেন।

আরও পড়ুন

×