ঢাকা রবিবার, ০৬ জুলাই ২০২৫

আলোচনা সভায় বিশিষ্টজন

১০ এপ্রিলকে প্রজাতন্ত্র দিবস ঘোষণা করুন

১০ এপ্রিলকে প্রজাতন্ত্র দিবস ঘোষণা করুন

রমনার ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশন মিলনায়তনে ‘৭১-এর গণহত্যার প্রথম স্বীকৃতি এবং বঙ্গবন্ধুর স্বাধীনতার ঘোষণার দলিল’ শীর্ষক আলোচনা সভা।

সমকাল প্রতিবেদক

প্রকাশ: ১০ এপ্রিল ২০২৩ | ১৬:২২ | আপডেট: ১০ এপ্রিল ২০২৩ | ১৬:৫১

১৯৭১ সালের ১০ এপ্রিল বাংলাদেশের প্রথম সরকার গঠিত হয়। এদিনই ঘোষণা হয়েছিল স্বাধীনতার ঘোষণাপত্র। তাই স্বাধীন বাংলাদেশের অভ্যুদয়ে এ দিনটি খুবই তাৎপর্যপূর্ণ। এ জন্য ১০ এপ্রিলকে প্রজাতন্ত্র দিবস ঘোষণার দাবি জানিয়েছেন বিশিষ্টজন। 

সোমবার ঢাকার রমনার ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশন মিলনায়তনে ‘৭১-এর গণহত্যার প্রথম স্বীকৃতি এবং বঙ্গবন্ধুর স্বাধীনতার ঘোষণার দলিল’ শীর্ষক আলোচনা সভায় বক্তারা এ অভিমত দেন। স্বাধীনতার ঘোষণাপত্রের ৫২তম বার্ষিকী উপলক্ষে একাত্তরের ঘাতক দালাল নির্মূল কমিটি এ অনুষ্ঠানের আয়োজন করে। 

নির্মূল কমিটির সভাপতি শাহরিয়ার কবিরের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হক, স্বাধীনতার ঘোষণাপত্র এবং ’৭২-এর সংবিধানের অন্যতম রচয়িতা ব্যারিস্টার এম আমীর-উল ইসলাম, মৌলবাদ ও সাম্প্রদায়িকতাবিরোধী দক্ষিণ এশীয় গণসম্মিলনের সভাপতি বিচারপতি শামসুদ্দিন চৌধুরী মানিক, একাত্তরের ঘাতক দালাল নির্মূল কমিটির সহসভাপতি শহীদজায়া শ্যামলী নাসরীন চৌধুরী, ‘১৯৭১: গণহত্যা-নির্যাতন আর্কাইভ ও জাদুঘর ট্রাস্টের’ সভাপতি অধ্যাপক মুনতাসীর মামুন ও আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের প্রসিকিউটর তাপস কান্তি বল।

মুক্তিযুদ্ধমন্ত্রী মোজাম্মেল হক বলেন, ১০ এপ্রিল মুজিবনগর সরকার গঠন করা হয়েছিল। জনগণের অধিকার সংরক্ষণের জন্য এই দিন বাংলাদেশের স্বাধীনতার ঘোষণাপত্র ঘোষণা করা হয়। এই দিনটির বিশেষ তাৎপর্য রয়েছে। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বাংলাদেশের স্থপতি। অথচ অনেকে এখনও বঙ্গবন্ধু সম্পর্কে বিকৃত তথ্য প্রচার করে। একটি পক্ষ মুক্তিযুদ্ধে শহীদের সংখ্যাকে বিকৃতভাবে প্রচার করছে। এই অপপ্রচার বন্ধ করার জন্য ‘হলোকাস্ট ডিনায়াল অ্যাক্ট’-এর মতো আইন প্রণয়ন করতে হবে। ১০ এপ্রিলকে জাতীয়ভাবে পালন করতে হবে। 

ব্যারিস্টার আমীর-উল ইসলাম বলেন, ‘বাংলাদেশের অভ্যুদয়ের মূল যুক্তি জনগণের আত্মনিয়ন্ত্রণ অধিকার প্রতিষ্ঠা। আমরা আমাদের স্বাধীনতার ঘোষণাপত্র এবং বাংলাদেশ সৃষ্টির পটভূমি স্মরণ করলে সঠিকভাবে সংবিধান বুঝতে ও আত্মস্থ করতে সক্ষম হবো। 

বিচারপতি শামসুদ্দিন চৌধুরী মানিক বলেন, ‘একটি মহল স্বাধীনতা, বঙ্গবন্ধু, মুক্তিযুদ্ধ নিয়ে অপপ্রচার চালাচ্ছে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ইমতিয়াজ আহমদ একটি বইয়ে বঙ্গবন্ধুর ভাষণ নিয়ে বিকৃত তথ্য উপস্থাপন করেছেন। তিনি লিখেছেন, শেখ মুজিব তাঁর ভাষণ শেষ করেছেন ‘জয় পাকিস্তান’ বলে। তিনি অধ্যাপক ইমতিয়াজের শাস্তি দাবি করেন। 

শ্যামলী নাসরীন চৌধুরী বলেন, ‘বঙ্গবন্ধু হত্যাকাণ্ডের পর একুশ বছর দেখেছি স্বাধীনতার ঘোষণাপত্র নিয়ে একটি মহল বিকৃত তথ্য প্রচার করছে। আমরা যাঁরা মুক্তিযুদ্ধে স্বজন হারিয়েছি, তাঁদের জন্য এটি খুবই কষ্টের। যারা স্বাধীনতার ঘোষণা ও গণহত্যা নিয়ে অপপ্রচার চালাচ্ছে, তাদের শাস্তি নিশ্চিত করতে হবে।’ 

অধ্যাপক মুনতাসীর মামুন বলেন, ‘স্বাধীনতার ঘোষণাপত্র সংবিধানের মূলভিত্তি। এটি সরকারিভাবে পালন করা উচিত। তিনি আরও বলেন, ‘মঙ্গল শোভাযাত্রা বন্ধে আইনজীবী উকিল নোটিশ দিয়েছেন। অথচ এটি ইউনেস্কো থেকে স্বীকৃত। একটি মহল বিশেষ উদ্দেশ্য নিয়ে এই কাজগুলো করে যাচ্ছে। এর বিরুদ্ধে আমাদের সোচ্চার হতে হবে।

ব্যারিস্টার তাপস কান্তি বল বলেন, মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস বিকৃতি রোধ করার পাশাপাশি আগামী নির্বাচনের আগে বাংলাদেশের গণহত্যার আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি আদায়ে সরকারকে পদক্ষেপ নিতে হবে। 

সভাপতির বক্তৃতায় শাহরিয়ার কবির বলেন, ’৭১-এর গণহত্যা ও স্বাধীনতার ঘোষণাপত্র অস্বীকার শাস্তিযোগ্য অপরাধ গণ্য করে নতুন আইন প্রণয়ন জরুরি হয়ে উঠেছে। তিনি মুক্তিযুদ্ধ ও সংবিধানের সহজ পাঠ পাঠ্যবইয়ে অন্তর্ভুক্ত করারও দাবি জানিয়েছেন। 

আরও পড়ুন

×