ঢাকা রবিবার, ০৬ জুলাই ২০২৫

‘রবীন্দ্রনাথ ও বঙ্গবন্ধুর চিন্তার যোগসূত্র তুলে ধরতে ড. আতিউরের অবদান অনন্য’

‘রবীন্দ্রনাথ ও বঙ্গবন্ধুর চিন্তার যোগসূত্র তুলে ধরতে ড. আতিউরের অবদান অনন্য’

কলকাতা প্রতিনিধি

প্রকাশ: ১৩ জুন ২০২৩ | ১৪:২০ | আপডেট: ১৩ জুন ২০২৩ | ১৪:৩১

ভাষাতাত্ত্বিক-গবেষক এবং রবীন্দ্রভারতী বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য ড. পবিত্র সরকার বলেছেন, রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর ও বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের আর্থসামাজিক উন্নয়ন ভাবনাগুলোর মধ্যকার যোগসূত্রগুলো তুলে ধরার ক্ষেত্রে অনন্য অবদান রেখেছেন ড. আতিউর রহমান।

সোমবার কলকাতা প্রেস ক্লাবে ড. আতিউর রহমান রচিত এবং জার্নিম্যান পাবলিশার্স প্রকাশিত ‘টোয়ার্ডস গোল্ডেন বেঙ্গল: থটস অব ট্যাগোর অ্যান্ড বঙ্গবন্ধু’ শিরোনামের গ্রন্থের মোড়ক উন্মোচন অনুষ্ঠানে তিনি এ কথা বলেন।

পবিত্র সরকার বলেন, ‘আজকে অস্থির সময়ে রবীন্দ্রনাথ ও বঙ্গবন্ধুর আর্থ-সামাজিক উন্নয়ন চিন্তাগুলো বিশেষ করে প্রাসঙ্গিক হয়ে উঠেছে এবং এই প্রাসঙ্গিকতাকে সহজবোধ্যভাবে তুলে ধরার মাধ্যমে ড. আতিউর বুদ্ধিবৃত্তিক জগতে অতুলনীয় অবদান রাখতে সক্ষম হয়েছেন।’

তিনি বলেন, ‘ড. আতিউর রচিত এই গ্রন্থে রবীন্দ্রনাথ কীভাবে স্বদেশের প্রতি দায়বোধের জায়গা থেকে পূর্ব বাংলার কৃষকের কাছাকাছি পৌঁছেছিলেন এবং তাদের মধ্যে আত্মনির্ভরতা গড়ে তোলায় মনোনিবেশ করেছিলেন তা তুলে ধরা হয়েছে। পাশাপাশি বঙ্গবন্ধুও কীভাবে দেশবাসীর আর্থসামাজিক মুক্তির আকাঙ্ক্ষাকে উজ্জীবিত করে স্বাধীন বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠার সংগ্রাম পরিচালনা করেছেন তাও এখানে তুলে ধরা হয়েছে।’

জওহরলাল নেহেরু বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক অমিত শোভন রায় অনুষ্ঠানে আলোচক হিসেবে অংশ নেন। তিনি বলেন, ‘স্বাধীনতার পর পর যে বিপুল প্রতিবন্ধকতা বাংলাদেশের সামনে ছিল তা অতিক্রম করে দেশটিতে যে অভূতপূর্ব উন্নয়ন ঘটেছে, বিশেষত বিগত ১৫ বছরে আর্থাসামজিক সূচকগুলোতে বাংলাদেশের যে সাফল্য- তা অবশ্যই নিজস্ব তাত্ত্বিক প্রেক্ষাপট থেকে বিশ্লেষণের দাবি রাখে এবং আর্থসামাজিক উন্নয়ন বিষয়ে রবীন্দ্রনাথ ও বঙ্গবন্ধুর দর্শনের আলোকেই এই বিশ্লেষণকে এগিয়ে নেওয়া দরকার।’ অধ্যাপক শোভন রায়ের মতে এমন একটি বিশ্লেষণের ভিত্তিই ড. আতিউর রহমানের এই গ্রন্থে রচিত হয়েছে।

আলোচক হিসেবে আরও উপস্থিত ছিলেন টেকনো-ইন্ডিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের কো-চেয়ারপারসন অধ্যাপক মানসী রায় চৌধুরী, সাংবাদিক সুমন ভট্টাচার্য, কলকাতা প্রেস ক্লাবের সভাপতি স্নেহাশীষ সুর এবং কলকাতায় বাংলাদেশের ডেপুটি হাই কমিশনের ফার্স্ট সেক্রেটারি (প্রেস) রঞ্জন সেন। তারা একটি সাংস্কৃতিক ও ঐতিহাসিক দৃষ্টিকোণ এবং বহুমুখী প্রেক্ষাপট থেকে বাংলাদেশের উন্নয়ন অভিযাত্রাকে বিশ্লেষণের ক্ষেত্রে ড. আতিউর রহমানের ধারাবাহিক অবদানের জন্য তার ভূয়সী প্রশংসা করেন।

অধ্যাপক ড. আতিউর রহমান তার প্রতিক্রিয়ায় অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথি পবিত্র সরকারসহ সব আলোচকের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানান। তিনি বলেন, ‘রবীন্দ্রনাথ একজন সাহিত্যিকের চেয়েও বড় কিছু ছিলেন। নিজের সামাজিক উন্নয়নের ভাবনাগুলোকে বাস্তব জীবনে কৃষির আধুনিকীককরণ, বাস্তবমুখী শিক্ষা, নারী শিক্ষা এবং লোকজ সংস্কৃতি সংরক্ষণের মতো উদ্যোগে প্রতিফলিত করতে সচেষ্ট ছিলেন।’ ফলে রবীন্দ্রনাথকে আধুনিক উন্নয়ন ভাবনা ও অনুশীলনের একজন অগ্রপথিক বলে মনে করেন ড. আতিউর। 

তিনি আরও বলেন, ‘বঙ্গবন্ধু রবীন্দ্রনাথের একজন অনন্য অনুরাগী ছিলেন এবং এমনকি কারাগারেও তিনি রবীন্দ্রনাথের বই সঙ্গে নিয়ে যেতেন। রবীন্দ্রনাথ ছিলেন তার প্রেরণার অন্যতম মহৎ উৎস।’ কাজেই শিক্ষা, কৃষি, পরিবেশসহ অন্তর্ভুক্তিমূলক উন্নয়নের বিভিন্ন বিষয়ে এই মহান বাঙালি ব্যক্তিত্বের চিন্তা ও কর্মের যে মিল খুঁজে পাওয়া যায় তা প্রত্যাশিত বলে মনে করেন ড. আতিউর। 

কলকাতা প্রেস ক্লাব এবং অনলাইন মিডিয়া প্ল্যাটফর্ম ক্যালকাটা-কলিং মোড়ক উন্মোচন অনুষ্ঠানের যৌথ আয়োজক। ক্যালকাটা-কলিং-এর পক্ষ থেকে সমাপনী বক্তব্য রাখেন হৃত্বিক মুখার্জি।

আরও পড়ুন

×