ঢাকা শনিবার, ০৫ জুলাই ২০২৫

ঢাকা ওয়াসার উপব্যবস্থাপনা পরিচালক ড. ইয়াজদানি বরখাস্ত

ঢাকা ওয়াসার উপব্যবস্থাপনা পরিচালক ড. ইয়াজদানি বরখাস্ত

ড. সৈয়দ গোলাম মোহাম্মদ ইয়াজদানি - ফাইল ছবি

সমকাল প্রতিবেদক

প্রকাশ: ২২ জুন ২০২৩ | ১৩:০৮ | আপডেট: ২২ জুন ২০২৩ | ১৪:২৪

ঢাকা ওয়াসা বোর্ডের বিরুদ্ধে সংস্থাটির উপব্যবস্থাপনা পরিচালক (ডিএমডি) ড. সৈয়দ গোলাম মোহাম্মদ ইয়াজদানিকে জোরপূর্বক বরখাস্ত করার অভিযোগ উঠেছে। বুধবার রাজধানীর কারওয়ান বাজারে ওয়াসা ভবনে অনুষ্ঠিত বোর্ডের ৩০৫তম সভায় তাকে অব্যাহিত দেওয়া হয়। 

ঢাকা ওয়াসা বোর্ডের চেয়ারম্যান ড. সুজিত কুমার বালা সমকালকে বলেন, ব্যবস্থাপনা পরিচালকের (এমডি) সঙ্গে ডিএমডির ঠিক বনিবনা হচ্ছিল না। বনিবনা না হলে অনেক কাজে সমস্যা হয়। ওয়াসার স্বার্থেই বোর্ড তাকে অব্যাহতি দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে।

ওয়াসা সূত্রে জানা যায়, কিছুদিন ধরেই ডিএমডির সঙ্গে ওয়াসার এমডি তাকসিম এ খানের দূরত্ব তৈরি হয়। এমডির কিছু সিদ্ধান্তের বিষয়ে বাধা হয়ে দাঁড়ান ড. ইয়াজদানি। এ অবস্থায় বোর্ডের ৩০৪তম সভার এজেন্ডা হিসেবে ইয়াজদানির অব্যাহতির প্রস্তাব অন্তর্ভুক্ত করা হয়। ওই সভায় বোর্ড সদস্যরা আপত্তি দেন। তারা বলেন, একজনকে আত্মপক্ষ সমর্থনের সুযোগ না দিয়ে অব্যাহতি দেওয়ার সিদ্ধান্ত গ্রহণযোগ্য নয়। এরপর বুধবারের বোর্ডসভায় এমডি ও চেয়ারম্যান বোর্ড সদস্যদের মতামত গুরুত্ব না দিয়ে ইয়াজদানিকে অব্যাহতির সিদ্ধান্ত নেন।

এ প্রসঙ্গে গোলাম মোহাম্মদ ইয়াজদানি সমকালকে বলেন, ‘আমি কিছু বলতে চাই না। যারা বোর্ডের সদস্য রয়েছেন তাদের সঙ্গে কথা বলেন। তাহলেই জানতে পারবেন।’

ওয়াসা বোর্ডের সদস্য বাংলাদেশ ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়নের মহাসচিব দ্বীপ আজাদ বলেন, এ সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে কয়েকজন বোর্ড সদস্য নোট অব ডিসেন্ট দিয়েছেন। 

অপর বোর্ড সদস্য ইনস্টিটিউট অব ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ার্স বাংলাদেশ-এর সভাপতি আব্দুল হামিদ সমকালকে বলেন, বোর্ডে এমন কিছু সিদ্ধান্ত হচ্ছে, যেখানে সদস্যদের কিছু করার থাকছে না।

এ বিষয়ে বোর্ড চেয়ারম্যান সুজিত কুমার বালা বলেন, বোর্ডের সিদ্ধান্ত আনুষ্ঠানিকভাবে ডিএমডিকে জানিয়ে দেওয়া হবে।

২০২২ সালের ১৬ মে ড. গোলাম মোহাম্মদ ইয়াজদানিকে ডিএমডি (মানবসম্পদ ও প্রশাসন) পদে নিয়োগ দেয় ওয়াসা বোর্ড। প্রচলিত রীতি অনুযায়ী একজন ডিএমডির ৩ বছর দায়িত্ব পালনের কথা। সে অনুযায়ী ২০২৫ সালের ১৫ মে পর্যন্ত তার দায়িত্ব পালনের কথা। কিন্তু কিছু অসঙ্গতির বিষয়ে আপত্তি দেওয়ায় ইয়াজদানি ওয়াসা প্রশাসনের বিরাগভাজন হন।

সর্বশেষ গত ১৭ জুন ‘আলাদিনের আশ্চর্য প্রদীপ মিটার রিডার পদ’ শিরোনামে সমকালে প্রতিবেদন পরিবেশিত হয়। সেখানে ইয়াজাদানির উদ্ধৃতি দিয়ে কিছু বক্তব্য ছাপা হয়। এ সময় সমকালকে তিনি বলেছিলেন, ‘মিটার রিডারদের বিরুদ্ধে এসব অভিযোগ মিথ্যা বলার কোনো অবকাশ নেই। বিভিন্ন সময় অনেক অনিয়ম আমি নিজেও ধরেছি। কিন্তু তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি। বরং কয়েকজনকে লঘু পাপে গুরুদণ্ড দেওয়ার ঘটনা ঘটেছে। এসব বলায় বোর্ড মিটিংয়ে আমাকেই অব্যাহতি দেওয়ার প্রস্তাব উপস্থাপন করা হয়েছে।’

ইয়াজদানির এ রকম বক্তব্যে ক্ষুব্ধ হন এমডি তাকসিম এ খান। এ রকম বক্তব্য দেওয়ার আইনি অধিকার তার নেই বলেও তাকে জনিয়ে দেন এমডি। এরপরই ডিএমডির চাকরিচ্যুতির ঘটনা ঘটল।

আরও পড়ুন

×