ঢাকা শনিবার, ০৫ জুলাই ২০২৫

বিএডিসির জনবল কমে অর্ধেক

বিএডিসির জনবল কমে অর্ধেক

জাহিদুর রহমান

প্রকাশ: ১৫ জুলাই ২০২৩ | ১৮:০০

কৃষকের হাতে সার-বীজ আর মাঠে সেচ দেওয়ার দায়িত্ব বাংলাদেশ কৃষি উন্নয়ন করপোরেশনের (বিএডিসি)। দীর্ঘদিন ধরে জনবল সংকটের গ্যাঁড়াকলে পড়ে সেই দায়িত্ব পালনে খাবি খাচ্ছেন প্রতিষ্ঠানটির কর্মকর্তা-কর্মচারীরা। অর্ধেক জনবলে চলছে বিএডিসির কার্যক্রম। এমন পরিস্থিতিতে কৃষি মন্ত্রণালয় শূন্য পদ পূরণের উদ্যোগ নিলে উল্টো জনবল কাটছাঁট করে অর্থ মন্ত্রণালয়। প্রতিষ্ঠানটির জনবল কাঠামো ৬ হাজার ৮০০ থেকে ৩ হাজার ১৭ জনে নামিয়ে গত ১৯ জুন পরিপত্রও জারি করে। এমন সিদ্ধান্তের প্রতিবাদে আজ রোববার আন্দোলনে নামছেন কর্মচারীরা। বিএডিসি শ্রমিক-কর্মচারী লীগের ব্যানারে সকালে রাজধানীর মতিঝিলের কৃষি ভবনের সামনে তাদের মানববন্ধন করার কথা রয়েছে। এদিকে পরিপত্র সংশোধনের জন্য অর্থ মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে দেনদরবার চালিয়ে যাচ্ছে কৃষি মন্ত্রণালয় ও বিএডিসি।

সংশ্লিষ্টরা বলছেন, ১৯৯৮ সালের ১৯ অক্টোবর রাষ্ট্রপতির আদেশে বিএডিসিতে ৬ হাজার ৮০০ জনবল মন্ত্রিপরিষদে অনুমোদন হয়। ওই সময় ১ হাজার ৭০০ কর্মকর্তা এবং ৫ হাজার ১০০ কর্মচারী নিয়ে জারি করা হয় জনবল কাঠামোর প্রজ্ঞাপন। এর মধ্যে বর্তমানে ৩ হাজার ১৭ জন কর্মরত আছেন। বাকি ৩ হাজার ৭৮৩টি পদ শূন্য পড়ে আছে। জনবল সংকটের প্রেক্ষাপটে সম্প্রতি শূন্য পদ পূরণের উদ্যোগ নেয় কৃষি মন্ত্রণালয়। ইতোমধ্যে প্রায় ২০০ গাড়িচালক নিয়োগের পরীক্ষা শেষ হয়েছে। হঠাৎ গত ১৯ জুন অর্থ মন্ত্রণালয় বিএডিসির জনবল কাঠামো ৩ হাজার ১৭ জনে নামিয়ে এনে পরিপত্র জারি করে। এতে আটকে যায় নতুন নিয়োগ প্রক্রিয়া।

বিএডিসির চেয়ারম্যান আব্দুল্লাহ সাজ্জাদ বলেন, ‘অর্থ মন্ত্রণালয় বলছে, ১৯৯৮ সালের জনবল কাঠামোতে তাদের অনুমোদন নেই। আমরা অর্থ মন্ত্রণালয়ে অনুমোদনের জন্য পাঠালে তারা উল্টো জনবল কমিয়ে পরিপত্র জারি করে। অনেক পদেই জনবল কমানো হয়েছে। সংস্থার পরিচালক সদস্য পদ ছিল চারটি, এখন দুটি দেখানো হয়েছে। এটি বিএডিসি আইনের পরিপন্থি। তবে অর্থ মন্ত্রণালয় থেকে যে পরিপত্র জারি করেছে, এটাই চূড়ান্ত নয়। কৃষি মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমে আমরা অর্থ মন্ত্রণালয়ে এ বিষয়ে চিঠি দিয়েছি, আশা করছি সমাধান হবে।’

বিএডিসি শ্রমিক-কর্মচারী লীগের (সিবিএ) সভাপতি মো. মশিউর রহমান বলেন, ‘বিএনপি সরকারের আমলে দুই দফায় বিএডিসির ১৩ হাজার কর্মচারী ছাঁটাই করা হয়। এর পর থেকে বিএডিসি চাহিদার বিপরীতে কম জনবল নিয়েই কার্যক্রম চালিয়ে আসছে। দাবির পরিপ্রেক্ষিতে ২০১৯ সালে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বিএডিসির জনবল ৯ হাজার ৩৫৫ জন করতে সম্মতি দেন। এটি ওই বছর জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় গেজেট আকারে প্রকাশ করে। এখন জনবল না বাড়িয়ে উল্টো কমিয়ে দেওয়া হচ্ছে।’  

কৃষি মন্ত্রণালয়ের একটি সূত্র জানিয়েছে, ২০২১ সালের নভেম্বরে আনুতোষিক (এককালীন) পদ্ধতি বাতিল করে বিএডিসির ৭ হাজার কর্মীর জন্য অবসরোত্তর পেনশন চালুর প্রস্তাব করে কৃষি মন্ত্রণালয়। তখন অর্থ মন্ত্রণালয় জানতে চায়, বর্তমানে বিএডিসিতে কতজন কর্মরত আছেন।

এ ব্যাপারে কৃষিমন্ত্রী ড. মো. আব্দুর রাজ্জাক বলেন, ‘এটা কোনোভাবেই ঠিক হবে না। বিষয়টি আমরা দেখেছি। নীতিনির্ধারকদের সঙ্গে আলোচনা করেছি। আশা করি, এটা সংশোধন করতে পারব।’

এ ব্যাপারে জানতে অর্থ মন্ত্রণালয়ের একাধিক কর্মকর্তার সঙ্গে যোগাযোগ করা হলেও তারা কথা বলতে রাজি হননি। তবে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক কর্মকর্তা বলেন, জনবল কাঠামো নিয়ে আলাপ-আলোচনা চলছে। সংশোধনের সুযোগ আছে।

আরও পড়ুন

×