কোস্ট ফাউন্ডেশনের সেমিনার
ওষুধ শিল্পের কাঁচামালে আত্মনির্ভরশীল হওয়ার তাগিদ

সমকাল প্রতিবেদক
প্রকাশ: ২০ জুলাই ২০২৩ | ১৬:২৭ | আপডেট: ২০ জুলাই ২০২৩ | ১৬:২৭
বিশ্ব বাণিজ্য সংস্থার ট্রিপস চুক্তির আওতায় প্যাটেন্টকৃত ওষুধ তৈরি করতে গেলে প্যাটেন্টকারীকে বিশেষ ফি দিতে হয়। ২০২৯ সাল পর্যন্ত কোনও প্যাটেন্ট ফি ছাড়াই বাংলাদেশের কোম্পানিগুলো এসব ওষুধ তৈরি করতে পারবে। এরপর প্যাটেন্ট ফি দিতে হলে ওষুধের দাম অনেক বেড়ে যাবে। তাই এখন থেকেই পরিস্থিতি মোকাবিলায় ওষুধ তৈরির কাঁচামালে আত্মনির্ভরশীল হওয়ার পরামর্শ দিয়েছেন বিশিষ্টজনরা।
বৃহস্পতিবার রাজধানীর সিরডাপ মিলনায়তনে কোস্ট ফাউন্ডেশন সেমিনারে তারা এ তাগিদ দেন। থার্ড ওয়ার্ল্ড নেটওয়ার্কের সহযোগিতায় আয়োজিত সেমিনারে সভাপতিত্ব করেন পল্লী কর্ম সহায়ক ফাউন্ডেশনের সভাপতি ড. কাজী খলিকুজ্জামান আহমদ।
কোস্ট ফাউন্ডেশনের নির্বাহী পরিচালক রেজাউল করিমের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠিত সেমিনারে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন মজিবুল হক মনির। বক্তব্য দেন ভারতের ইনস্টিটিউট অব ম্যানেজমেন্টের সাবেক অধ্যাপক ড. সুদিপ চৌধুরী, ন্যাশনাল কমিটি অন হেলথ মুভমেন্টের সভাপতি ডা. রশীদ ই মাহবুব, উবিনিগের ফরিদা আক্তার, ওয়াটার কিপার বাংলাদেশের শরীফ জামিল, থার্ড ওয়ার্ল্ড নেটওয়ার্কের রানজা সেনগুপ্তা ও প্রতিভা সিভাসুভ্রামানিয়ান।
মজিবুল হক বলেন, বাংলাদেশের প্রেক্ষাপটে ওষুধ সহজলভ্য করা খুব জরুরি; কারণ দেশে মানুষের স্বাস্থ্য সেবায় যে খরচ হয় তার ৪৪ শতাংশই হয় ওষুধের জন্য। উন্নয়নশীল দেশে পরিণত হলেও যাতে সবার জন্য ওষুধ নিশ্চিত করা যায় সে জন্য তিনি কয়েকটি সুপারিশ তুলে ধরেন। এগুলো হলো- কাঁচামালে আত্মনির্ভরশীল হওয়া, ওষুধ শিল্পে গবেষণা ও উন্নয়নে গুরুত্বারোপ, স্বাস্থ্য খাত দুর্নীতিমুক্ত করা এবং সার্বজনীন স্বাস্থ্যবীমা।
ড. সুদীপ চৌধুরী বলেন, বাংলাদেশের ভেতরেই ওষুধের কাঁচামালের বাজার তৈরি করতে হবে, এর জন্য সরকারের নীতিসহায়তা প্রয়োজন।
প্রতিভা সিভাসুভ্রানিয়ান বলেন, বাংলাদেশের প্যাটেন্ট আইন ২০২২-এ কিছু সংশোধনী আনা খুব দরকার। দেশের প্রয়োজনে প্যাটেন্ট করা ওষুধ তৈরির জন্য দেশীয় কোম্পানিকে প্যাটেন্ট অধিকার ভাঙার সুযোগ করে দিতে হবে।
রানজা সেনগুপ্ত বলেন, সবার জন্য ওষুধ নিশ্চিত করতে নাগরিক সমাজকে জোটবদ্ধ হয়ে কাজ করতে হবে।
ফরিদা আখতার বলেন, দেশের ভেতরে কিছু কোম্পানি একচেটিয়া ব্যবসা করে, সেটি বন্ধ করা জরুরি।
রশীদ ই মাহবুব বলেন, রাজনৈতিক সদিচ্ছা থাকলে সমস্যা সমাধান করে সবার জন্য ওষুধ সহজলভ্য করা যাবে।
ড. কাজী খলিকুজ্জামান আহমদ বলেন, বিশ্ববিদ্যালয় এবং ওষুধ কোম্পানিগুলোর মধ্যে যৌথ গবেষণার ব্যবস্থা থাকতে হবে। এর জন্য সরকারের নীতিগত এবং আর্থিক সহায়তা প্রয়োজন। তাছাড়া ভবিষ্যতে বদলে যাওয়া পরিস্থিতি মোকাবিলায় এখন থেকে তৈরি করতে হবে দক্ষ জনবল। পুরো স্বাস্থ্যখাতে বরাদ্দ বাড়াতে হবে।