ঢাকা রবিবার, ০৬ জুলাই ২০২৫

ফেসবুকে গ্রুপ খুলে জাল নোটের কারবার, গ্রেপ্তার ৪

ফেসবুকে গ্রুপ খুলে জাল নোটের কারবার, গ্রেপ্তার ৪

উদ্ধার করা জাল নোট

সমকাল প্রতিবেদক

প্রকাশ: ২৩ আগস্ট ২০২৩ | ১৪:২৩ | আপডেট: ২৩ আগস্ট ২০২৩ | ১৪:২৩

ফেসবুকে গ্রুপ খুলে জাল টাকার কারবার চালিয়ে আসছিল একটি চক্র। এক বছরে তারা প্রায় দুই কোটি টাকার জাল নোট বাজারে ছড়িয়েছে। তবে শেষ রক্ষা হয়নি। গ্রেপ্তার হয়েছে চক্রের প্রধানসহ চারজন। মঙ্গলবার রাতে র‌্যাব সদরদপ্তরের গোয়েন্দা শাখা ও র‌্যাব-১০ এর যৌথ দল রাজধানীর ডেমরা, সবুজবাগ ও খিলগাঁও এলাকায় অভিযান চালিয়ে তাদের গ্রেপ্তার করে। বুধবার কারওয়ান বাজারে বাহিনীর মিডিয়া সেন্টারে সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানানো হয়েছে।

গ্রেপ্তার ব্যক্তিরা হলেন– চক্রের প্রধান মোহাম্মদ আমিনুল হক ওরফে দুলাল, তার সহযোগী আবদুর রাজ্জাক ওরফে দিদার, সুজন আলী ও মোহাম্মদ সাকিবুল হাসান। তাদের কাছ থেকে প্রায় অর্ধকোটি টাকার জাল নোট (১ হাজার, ৫০০ ও ১০০ টাকা), একটি ল্যাপটপ, একটি প্রিন্টার, ১১টি টোনার, কার্টিজ, একটি পেনড্রাইভসহ বিপুল সরঞ্জাম জব্দ করা হয়েছে। 

সংবাদ সম্মেলনে র‌্যাবের আইন ও গণমাধ্যম শাখার পরিচালক কমান্ডার খন্দকার আল মঈন বলেন, সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে একে অপরের সঙ্গে পরিচিত হয় গ্রেপ্তার ব্যক্তিরা। তারা যৌথ উদ্যোগে জাল টাকা তৈরির কারবার শুরু করে। সেগুলো বিক্রির জন্যও ফেসবুকে বিভিন্ন পেজ ও গ্রুপ খোলা হয়। এতে কৌশলে প্রচার চালিয়ে আগ্রহী ব্যক্তিদের খুঁজে বের করে তারা। এভাবেই জাল নোটগুলো তারা বাজারে ছড়িয়ে দেয়। তাদের নেতৃত্ব দিত আমিনুল।

গ্রেপ্তার চারজন 

র‌্যাব মুখপাত্র জানান, আমিনুল জাল নোট ছাপিয়ে দিদারকে দিত। দিদার চক্রের অপর সদস্য সুজনকে নিয়ে সেগুলো কেটে বান্ডিল তৈরি করত। যখন জাল নোটের চাহিদা বেশি থাকে, তখন তারা দিনে ২-৩ লাখ টাকার নোট ছাপত। বিক্রির ক্ষেত্রে তারা ফেসবুক গ্রুপে আগ্রহীদের কমেন্ট দেখে মেসেঞ্জারে যোগাযোগ করত। এভাবে কথোপকথনে সব চূড়ান্ত করে অগ্রিম টাকা নিয়ে সুবিধাজনক স্থানে জাল নোট পৌঁছে দিত। তারা মূলত ঢাকা, নারায়ণগঞ্জ, গাজীপুর, মুন্সীগঞ্জসহ দেশের কয়েকটি এলাকায় জাল নোট সরবরাহ করেছে। প্রতি ১ লাখ টাকার জাল নোট ২০-২৫ হাজার টাকায় বিক্রি করত তারা।

বিভিন্ন মেলা, উৎসব, পূজা ও কোরবানির পশুর হাট উপলক্ষে তারা বিপুল পরিমাণ জাল নোট ছাপিয়েছে।

খন্দকার আল মঈন জানান, আমিনুল রাজধানীর একটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে ডিজাইনার হিসেবে কাজ করত। তবে ওই কাজের আড়ালে সে অনলাইনে জাল নোট তৈরির কৌশল শেখে। সে প্রায় এক বছর ধরে চক্রটি পরিচালনা করে আসছিল। গ্রেপ্তার দিদার হিসাববিজ্ঞানে স্নাতকোত্তর পাস করে গার্মেন্টস ব্যবসা শুরু করে। ২০২১ সালে ব্যবসায় আর্থিক ক্ষতির মুখে পড়ার পর সে ফেসবুকে ‘জাল নোট বিক্রি করি’, ‘জাল টাকা সেল’, ‘জাল টাকা বেচি’সহ বিভিন্ন পেজ ও গ্রুপে যুক্ত হয়। সে চক্রের মূল হোতা আমিনুলের অন্যতম সহযোগী হিসেবে কাজ করত। সুজন সপ্তম শ্রেণি পর্যন্ত পড়ালেখা করে এলাকায় জুতার দোকান চালাত। ব্যবসায় আর্থিক ক্ষতির পাশাপাশি ঋণগ্রস্ত হওয়ায় সে ঢাকায় চলে আসে। এখানে ফেসবুকে আমিনুল ও দিদারের সঙ্গে তার পরিচয় হয়। আর সাকিবুল রাজধানীর একটি মাদ্রাসায় পড়ালেখা করত। পাশাপাশি সে মেসেঞ্জার গ্রুপের মাধ্যমে জাল নোটের ক্রেতাদের সঙ্গে যোগাযোগ রাখত। 

আরও পড়ুন

×