ড. ইউনূসের পক্ষে চিঠি দানকারীরা নীতি-জ্ঞান বিবর্জিত: ঢাবি উপাচার্য

বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিবেদক
প্রকাশ: ০৪ সেপ্টেম্বর ২০২৩ | ১৩:৩৫ | আপডেট: ০৪ সেপ্টেম্বর ২০২৩ | ১৩:৩৫
সোমবার দুপুরে অপরাজেয় বাংলার পাদদেশে ড. ইউনূসের বিরুদ্ধে চলমান বিচারিক কার্যক্রম স্থগিত রাখার দাবি জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে দেওয়া চিঠির প্রতিবাদে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতি আয়োজিত মানববন্ধনে উপাচার্য এসব কথা বলেন।
উপাচার্য বলেন, প্রতিটি সমাজেই কিছু মানুষ নীতি-জ্ঞান বিবর্জিত এবং তারা অনেক সময় নানাভাবে প্রলোভনের মুখে পড়ে অন্যায়ের পক্ষে অবস্থান নেয়। আমার ধারণা বাংলাদেশের বিচারাধীন বিষয় নিয়ে আন্তর্জাতিকভাবে যে ১৬০ জন বিবৃতি দিয়েছেন, তারা নীতি-জ্ঞান বিবর্জিত কিছু মানুষ।
তিনি বলেন, চিঠি দেওয়া মানুষগুলো নিঃসন্দেহে লবিস্টের ভূমিকা পালন করছেন। তাদের হয়তো কোনো গোষ্ঠী, সম্প্রদায়, রাজনৈতিক দল, সংগঠন অথবা কোনো ব্যক্তি অর্থের বিনিময়ে নিয়োগ করেছেন। সে কারণেই আজ তারা দুর্নীতির পক্ষে অবস্থান নিয়েছেন; অন্যায়ের পক্ষে অবস্থান নিয়েছেন।
আখতারুজ্জামান বলেন, এমনও কিছু মানুষ আছেন যাদের নিজেদের দেশ, দেশমাতৃকা, মূল্যবোধ, সংস্কৃতি, গৌরব ও অর্জনের সাথে তাদের সম্পৃক্ততা থাকে না। যে মানুষগুলোর নাম এখানে উচ্চারিত হচ্ছে, যাকে নিয়ে আবর্তন হচ্ছে, তাদের কখনও আমাদের কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার, জাতীয় স্মৃতিসৌধ কিংবা অসাম্প্রদায়িক কোনো অনুষ্ঠানে বক্তব্য প্রদান করতে দেখবেন না। কারণ, এই মানুষগুলো ব্যবসায়িক দৃষ্টিতে পর্দার অন্তরালে থেকে নানা ধরনের পরিস্থিতির সুযোগে স্বার্থ হাসিল করায় নিয়োজিত থাকে। স্বার্থ হাসিলের সুরক্ষা হিসেবে তারা আন্তর্জাতিকভাবে অন্য মানুষদের হায়ার (ভাড়া) করে থাকেন; লবিস্ট নিয়োগ করে থাকেন।
ঢাবির উপ-উপাচার্য (প্রশাসন) অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ সামাদ বলেন, ড. ইউনূস কখনও শহীদ মিনার, স্মৃতিসৌধে যাননি। তিনি জঙ্গিবাদের বিরুদ্ধে কখনও কথা বলেন না। তার প্রথম টার্গেট বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনা। আমরা বিশ্বাস করি, শেখ হাসিনা বাংলাদেশের অস্তিত্ব, স্বাধীনতা, মুক্তিযুদ্ধের প্রতীক। কাজেই শেখ হাসিনার ওপর যে আঘাত আসছে, আমাদের স্বাধীনতা, মুক্তিযুদ্ধ, গণতন্ত্র ব্যবস্থার উপর যে আঘাত আসছে, আমরা তার প্রতিবাদ জানাব।
বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য (শিক্ষা) অধ্যাপক ড. মাকসুদ কামাল বলেন, তিনি (ইউনূস) আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়কে দিয়ে বাংলাদেশের বিচার ব্যবস্থার ওপর চাপ প্রয়োগ করতে চাচ্ছেন। একটি স্বাধীন সার্বভৌম রাষ্ট্রের বিচার ব্যবস্থাকে প্রশ্নবিদ্ধ করার অর্থই হলো দেশের সার্বভৌমত্বের ওপর আঘাত আনা।
ড. ইউনূসের উদ্দেশে তিনি বলেন, আপনি কেন শহীদ মিনার, স্মৃতিসৌধে যান না, কেন আপনি বঙ্গবন্ধুর সমাধিতে শ্রদ্ধা নিবেদন করতে চান না? এগুলো কি দেশ প্রেমের অংশ নয়? যদি আপনার দেশপ্রেম থাকতো, তাহলে কোটি কোটি টাকা খরচ করে এতগুলো মানুষের কাছ থেকে কেন বিবৃতি চেয়ে নিতে হবে?
ঢাবি শিক্ষক সমিতির সভাপতি অধ্যাপক নিজামুল হক ভূইয়ার সভাপতিত্বে এবং সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক ড. জিনাত হুদার সঞ্চালনায় মানববন্ধনে আরও বক্তব্য দেন কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক মমতাজ উদ্দিন আহমেদ, কলা অনুষদের ডিন আবদুল বাছির, বিজ্ঞান অনুষদের ডিন আব্দুস ছামাদ, সামাজিক বিজ্ঞান অনুষদের ডিন জিয়াউর রহমান, ইঞ্জিনিয়ারিং অ্যান্ড টেকনোলজি অনুষদের ডিন হাফিজ মো. হাসান বাবু, গ্রন্থাগারিক অধ্যাপক নাসির উদ্দীন মুন্সী, সমাজবিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক সাদেকা হালিম, টেলিভিশন ফিল্ম অ্যান্ড ফটোগ্রাফি বিভাগের অধ্যাপক শফিউল আলম ভূঁইয়া, সাবেক প্রক্টর এ কে এম গোলাম রব্বানী প্রমুখ।