ঢাকা বৃহস্পতিবার, ০৩ জুলাই ২০২৫

সিপিডির ওয়েবিনারে বক্তারা

নবায়নযোগ্য জ্বালানিতে চীন অনুকরণীয় হতে পারে

নবায়নযোগ্য জ্বালানিতে চীন অনুকরণীয় হতে পারে

ফাইল ছবি

সমকাল প্রতিবেদক

প্রকাশ: ২৩ অক্টোবর ২০২৩ | ১৭:৩১ | আপডেট: ২৩ অক্টোবর ২০২৩ | ১৭:৩১

সরকারের দীর্ঘমেয়াদি উন্নয়ন পরিকল্পনা এবং নীতি সহায়তা কীভাবে বিদ্যুৎ খাতকে বদলে দিতে পারে, চীন তার প্রকৃষ্ট উদাহরণ হতে পারে। এ মুহূর্তে বিশ্বের প্রায় ৩০ শতাংশ উৎপাদন নিয়ে বিদ্যুৎ উৎপাদনে শীর্ষে রয়েছে এ দেশ। ২০০০ সালেও দেশটির ৭০ শতাংশ বিদ্যুৎ উৎপাদন হতো কয়লা থেকে, এখন তা ৫০ শতাংশেরও কম। নবায়নযোগ্য জ্বালানিতে তাদের নির্ভরতা মাত্র ৭ শতাংশ থেকে এক-তৃতীয়াংশে উন্নীত হয়েছে। মাত্র এক যুগে তাদের বিদ্যুৎ উৎপাদন খরচ এক-তৃতীয়াংশে নেমেছে।

সোমবার গবেষণা সংস্থা সিপিডির আয়োজনে ‘বাংলাদেশের নবায়নযোগ্য জ্বালানি খাতে বিদেশি বিনিয়োগের সুযোগ এবং চ্যালেঞ্জ: চীনের অভিজ্ঞতা’ শীর্ষক এক ওয়েবিনারে বক্তারা এসব তথ্য জানান। 

চীনের নবায়নযোগ্য শিল্পের সংগঠন সিআরইআইএর ওয়াং ওইকোয়ান বলেন, ভবিষ্যৎ প্রজন্মের জন্যও বাসযোগ্য পৃথিবী গড়তে ২০০৭ সালে কার্বন নিঃসরণ কমানোর নীতিগত সিদ্ধান্ত নেয় চীন। এ জন্য ২০০৭ সালে আইন করে। নবায়নযোগ্য বিদ্যুৎ উৎপাদনকারী কোম্পানির কাছ থেকে বিদ্যুৎ ক্রয় বাধ্যতামূলক করা হয়। এতে উৎসাহী হয়ে বিনিয়োগ বাড়ে। দেশটিতে এত বিদ্যুৎ উৎপাদন হচ্ছে যে, কীভাবে তা সংরক্ষণ করে পরে ব্যবহার করা যায়, সে বিষয়ে গবেষণা চলছে।

বাংলাদেশে চীনা কোম্পানি চিন্ট সোলার-বাংলাদেশ যৌথ বিনিয়োগে সৌর বিদ্যুৎকেন্দ্র স্থাপন হয়েছে। কোম্পানির কর্মকর্তা রং হাই জানান, বাংলাদেশে সোলার রেডিয়েশন বেশ ভালো মাত্রায় পাওয়া যায়। ফলে সৌর বিদ্যুৎ উৎপাদনের ব্যাপক সুযোগ আছে। তবে এতে প্রধান সমস্যা হলো জমির স্বল্পতা ও দাম। অন্য দেশে এ ধরনের প্রকল্প বাস্তবায়নে জমি ক্রয় ও উন্নয়নে যেখানে মাত্র ৫ শতাংশ খরচ হয়, এখানে তা ৩০ শতাংশের বেশি। পাশাপাশি প্রকল্প অনুমোদনে আমলাতান্ত্রিক জটিলতা তো আছেই।

চীনের রাষ্ট্রদূত ইয়াও ওয়েন বলেন, ২০৪১ সালের উন্নত ও স্মার্ট বাংলাদেশ গড়ার স্বপ্ন বাস্তবায়নে বাংলাদেশের নবায়নযোগ্য জ্বালানি খাতের উন্নয়নে প্রযুক্তিগত সহায়তা ও বিনিয়োগে প্রস্তুত আছে চীন।

জাতীয় সংসদের বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজসম্পদ মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত স্থায়ী কমিটির সদস্য বেগম ওয়াসিকা আয়শা খান বলেন, এটা ঠিক, আমলাতান্ত্রিক জটিলতা আছে। তবে তা সমাধানযোগ্য। নবায়নযোগ্য খাতে বড় অঙ্কের বিদেশি বিনিয়োগ দরকার। শুধু বিনিয়োগ নয়, আমাদের প্রযুক্তিও দরকার। 

বিশিষ্ট ব্যবসায়ী ও সাবেক তত্ত্বাবধায়ক সরকারের উপদেষ্টা  সৈয়দ মনজুর এলাহী বলেন, বিনিয়োগ আকর্ষণে জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের কর্মকর্তাদের মানসিকতা আগে পরিবর্তন করতে হবে। আগে ঠিক করতে হবে, রাজস্বকেন্দ্রিক নাকি বিনিয়োগকেন্দ্রিক বাজেট হবে। চীনের উন্নয়নের দিকে তাকালে দেখা যাবে, তাদের উন্নয়ন হয়েছে বিদেশি বিনিয়োগ দিয়ে। এখন তারা নিজেরা অন্য দেশে বিনিয়োগ করছে। বিদেশি বিনিয়োগ নিয়ে থাইল্যান্ড ও তাইওয়ান উন্নতি করছে।  বাংলাদেশে বিনিয়োগে অনেক সমস্যা আছে। কিন্তু এমন কোনো সমস্যা নেই, যার সমাধান নেই। পরিবেশ অনুকূল থাকলে সবাই এগিয়ে আসবে।

খোন্দকার গোলাম মোয়াজ্জেম বলেন, নবায়নযোগ্য জ্বালানির প্রশ্নে চীনের সব সরকারি অফিস সমন্বিতভাবে কাজ করেছে। প্রথম দিকে ভর্তুকি দিলেও এখন তা লাগছে না। কারণ নবায়নযোগ্য জ্বালানি এখন অন্য জ্বালানির তুলনায় সাশ্রয়ী। বাংলাদেশের নীতিনির্ধারকরা এ বিষয়ে ভাবতে পারেন।

আরও পড়ুন

×