দক্ষিণ এশিয়ায় জলবায়ু অর্থায়ন বাড়ানোর দাবি

প্রতীকী ছবি
আবু সালেহ রনি
প্রকাশ: ০৭ ডিসেম্বর ২০২৩ | ০৪:৫৩ | আপডেট: ১২ ডিসেম্বর ২০২৩ | ১৫:৩২
জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাবে দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলো ব্যাপক ক্ষতির সম্মুখীন হচ্ছে। প্রতি বছরই একাধিকবার ঝড়, জলোচ্ছ্বাস ও ভূমিকম্প মোকাবিলা করছে বাংলাদেশসহ দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলো। অথচ জলবায়ু পরিবর্তনের জন্য দায়ী উন্নত বিশ্বের কার্বন নিঃসরণ। কিন্তু এখনও পর্যন্ত ক্ষয়ক্ষতি কাটিয়ে উঠতে উন্নত দেশগুলোর কাছ থেকে সহায়তা প্রাপ্তির অভাব রয়েছে। তাই এ লক্ষ্যে দক্ষিণ এশিয়ার জন্য পৃথক ‘লস অ্যান্ড ড্যামেজ ফান্ড’ গঠন করে পর্যাপ্ত সহায়তা বাড়ানোর দাবি উঠেছে বিশ্ব জলবায়ু সম্মেলনে (কপ২৮)।
দুবাইয়ে চলমান এই সম্মেলনে গতকাল বুধবার সপ্তম দিনের সভায় জীবাশ্ম জ্বালানি তথা কার্বন নির্গমনকারী জ্বালানি তেলের ব্যবহার বন্ধের ব্যাপারে চাপের মুখে পড়েন বিশ্ব নেতারা। উন্নত বিশ্বের কাছে বরাদ্দ বৃদ্ধির দাবি জানিয়ে সম্মেলনের সাইড লাইনে পৃথক সমাবেশ ও আলোচনা সভাও অনুষ্ঠিত হয়। কপ২৮-এর প্রেসিডেন্ট আহমেদ আল জাবের এ দিন জানান, জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবিলায় সম্মেলনের প্রথম পাঁচ দিনে ৮৩ বিলিয়ন ডলারেরও বেশি জমা হয়েছে। জলবায়ু সচেতনতা কর্মে এটি একটি নতুন গতি স্থাপন করছে। একই সময়ে ১১টি বিষয়ে অঙ্গীকার বা চুক্তি সম্পন্ন হয়েছে, যা এবারের সম্মেলনকে সার্থক করবে।
গতকাল আলোচনা শুরুর সঙ্গে সঙ্গে বিজ্ঞানীরা জীবাশ্ম জ্বালানি থেকে রেকর্ড কার্বন নির্গমনের নতুন রিপোর্ট দিয়ে সতর্ক করেন। তারা জানান, কার্বন নির্গমন পরিস্থিতি গত দুই বছরে আরও অবনতি হয়েছে। নির্গমনের পরিমাণ এ বছর ৪০.৯ গিগাটনে গিয়ে পৌঁছাবে। এ ছাড়া এ দিন ক্লাব অব রোমের ৭৫ জন বিজ্ঞানী কপ নেতাদের উদ্দেশে এক খোলা চিঠি দিয়েছেন। তারাও কপ প্রেসিডেন্টের সাম্প্রতিক বক্তব্যের বিরোধিতা করে এর প্রতিবাদ জানিয়েছেন। বাংলাদেশের পরিবেশবাদীরাও জীবাশ্ম জ্বালানি নিয়ে কপ প্রেসিডেন্টের বক্তব্যের বিরোধিতা করছেন।
দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলোর জন্য বরাদ্দ দাবি
লস অ্যান্ড ড্যামেজ ফান্ড থেকে দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলোর জন্য পর্যাপ্ত বরাদ্দ দেওয়ার দাবি জানিয়েছেন মালদ্বীপের জলবায়ু পরিবর্তন, পরিবেশ ও জ্বালানিমন্ত্রী তরিক ইব্রাহিম। সাউথ এশিয়ান ক্লাইমেট চেঞ্জ জার্নালিস্টস ফোরামের সঙ্গে সম্মেলনে ব্লু জোনের ৩৩ নম্বর কক্ষে এক মতবিনিময় সভায় তিনি এ দাবি করেন। সংগঠনের সভাপতি আশিস গুপ্তার সভাপতিত্বে এবং মহাসচিব আসাদুজ্জামান সম্রাটের সঞ্চালনায় মতবিনিময় সভায় আরও বক্তব্য দেন সংগঠনের নির্বাহী সভাপতি কেরামত উল্লাহ বিপ্লব, সহসভাপতি রাবনেওয়াজ চৌধুরী ও শ্রীরাম সুবেদী।
অভিযোজনে আরও অর্থ বরাদ্দ দাবি
স্থানীয় পর্যায়ে জলবায়ু সংকট মোকাবিলায় অভিযোজনে জোরালো ভূমিকা রাখতে আরও অর্থ বরাদ্দের দাবি জানিয়েছে জলবায়ু বিষয়ে গ্লোবাল সাউথে কর্মরত সংস্থাগুলো। গত মঙ্গলবার কপ২৮ সম্মেলনের সাইড ইভেন্টে ব্র্যাক আয়োজিত এক আলোচনায় এ দাবি উঠে আসে। আন্তর্জাতিক দাতা সংস্থার প্রতিনিধিরাও এতে উপস্থিত ছিলেন।
বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রীর পরিবেশ ও জলবায়ুবিষয়ক বিশেষ দূত সাবের হোসেন চৌধুরী বলেন, ‘যুগ যুগ ধরে আমাদের মানুষরা জলবায়ু-সংকট অভিযোজনের চর্চা করে এসেছে। সহনশীলতার সীমায় পৌঁছার আগেই আমাদের এই চর্চার সুবিধা গ্রহণ করতে হবে।’
ব্র্যাকের হেড অব পলিসি ইনিশিয়েটিভস ইসাবেল হুইসনের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য দেন ক্লাইমেট অ্যাকশন নেটওয়ার্ক সাউথ এশিয়ার পরিচালক সঞ্জয় বশিস্ট, ক্লাইমেট ব্রিজ ফান্ড সেক্রেটারিয়েটের প্রধান ড. গোলাম রব্বানী, এফসিডিওর অ্যাডাপ্টেশন অ্যান্ড রিজিলিয়েন্স হেড পিটার বেন্টলি, জেনেভায় জাতিসংঘের স্থায়ী মিশনের ফার্স্ট সেক্রেটারি রেনে ব্যাপ্টিস্ট, আইসিসিসিএডির এমডি সাকিব হক, ঘানা উন্নয়ন কেন্দ্রের সমন্বয়ক সুবির কুমার সাহা এবং একুমেনের ডেভেলপমেন্ট অ্যান্ড পার্টনারশিপ ম্যানেজার জয়া শাবির সিদ্দিকী প্রমুখ।
- বিষয় :
- কপ২৮
- বিশ্ব জলবায়ু সম্মেলন