ঢাকা রবিবার, ০৬ জুলাই ২০২৫

জামায়াতের বিচারসহ ৪ দাবি

প্রধান বিচারপতিকে স্মারকলিপি দিল ঘাতক দালাল নির্মূল কমিটি

প্রধান বিচারপতিকে স্মারকলিপি দিল ঘাতক দালাল নির্মূল কমিটি

ছবি: সমকাল

সমকাল প্রতিবেদক

প্রকাশ: ২৪ জানুয়ারি ২০২৪ | ২২:২৪ | আপডেট: ২৪ জানুয়ারি ২০২৪ | ২২:২৮

মুক্তিযুদ্ধের সময় মানবতাবিরোধী অপরাধের বিচারের জন্য স্থাপিত আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে দ্বিতীয় বেঞ্চ চালুসহ চারটি দাবি নিয়ে প্রধান বিচারপতি ওবায়দুল হাসানের কাছে স্মারকলিপি দিয়েছে একাত্তরের ঘাতক দালাল নির্মুল কমিটির নেতারা। বুধবার সংগঠনের সভাপতি শাহরিয়ার কবিরের নেতৃত্বে সাত সদস্যের প্রতিনিধি দল প্রধান বিচারপতির সঙ্গে তাঁর কার্যালয়ে সাক্ষাত করে এ দাবি জানানো হয়।

প্রতিনিধি দলের অপর সদস্যরা হলেন-ঘাতক দালাল নির্মুল কমিটির উপদেষ্টা অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতি এএইচএম শামসুদ্দিন চৌধুরী মানিক, প্রফেসর মাহফুজা খানম, সহ-সভাপতি অধ্যাপক মুনতাসীর মামুন, সাবেক এমপি কেন্দ্রীয় নেতা আরমা দত্ত, আইটি সেলের প্রধান আসিফ মুনীর তন্ময়, সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক কাজী মুকুল। একই দাবি নিয়ে আইনমন্ত্রী আনিসুল হকের কাছে স্মারকলিপি গতকালই হস্তান্তর করা হয়েছে বলে সাংবাদিকদের জানান তারা। এদিন দুপুর ২টা থেকে আড়াইটা পর্যন্ত সুপ্রিমকোর্টে প্রধান বিচারপতির কার্যালয়ে তাদের সাক্ষাত অনুষ্ঠিত হয়।

স্মারকলিপিতে বলা হয়, শীর্ষস্থানীয় গণহত্যাকারী ও মানবতার বিরুদ্ধে অপরাধীর বিচার করলেও এখন পর্যন্ত গণহত্যা ও যুদ্ধাপরাধের জন্য দায়ী সংগঠনসমুহ এবং ৭১-এ পাকিস্তানি হাইকমান্ডের বিচার কার্যক্রম শুরু হয়নি। চারটি দাবি হচ্ছে (১) সাবেক প্রধান বিচারপতি এস কে সিনহার সময়ে স্থগিত আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের দ্বিতীয় বেঞ্চ দ্রুত পুনরুজ্জীবিত করার উদ্যোগ নেওয়া, (২) আপিলের জটিলতা নিরসনের জন্য আপিল বিভাগে আরও বিচারপতি নিয়োগের উদ্যোগ গ্রহণের পাশাপাশি অপেক্ষমাণ মামলাগুলো দ্রুত শুনানির ব্যবস্থা করা, (৩) কম্বোডিয়া ও অন্যান্য কয়েকটি দেশে যুদ্ধাপরাধের মামলায় আপিল বিভাগের একটি বেঞ্চ ট্রাইব্যুনালে গিয়ে আপিল শুনানি নিস্পত্তি করেন। বাংলাদেশের মতো কোথাও এসব ট্রাইব্যুনালের মামলার আপিল শুনানির জন্য সুপ্রিমকোর্টে যেতে হয় না। আমরা মনে করি বাংলাদেশের ক্ষেত্রে কম্বোডিয়ার মতো আপিলের ব্যবস্থা করা হবে। ট্রাইব্যুনালের মামলাগুলো দ্রুত নিস্পত্তি করা যাবে এবং (৪) পুরনো হাইকোর্ট ভবনে ট্রাইব্যুনালের কার্যক্রম শুরু হওয়ার পর আমরা এই বিচার কার্যক্রমের ঐতিহাসিক গুরুত্ব বিবেচনা করে সরকার এবং সুপ্রিমকোর্টের প্রতি আবেদন করেছিলাম- মামলার সকল কার্যবিবরণী ও দলিলপত্র যথাযথভাবে সংরক্ষণ করার জন্য। যাতে করে বিচারকার্য শেষ হওয়ার পর নুরেমবার্গ ট্রাইব্যুনালের প্যালেস অব জাস্টিসের মতো আমাদের ট্রাইব্যুনালের বর্তমান ভবনটি জাদুঘর ও আর্কাইভে রূপান্তরিত করা যায়। এর ফলে আগামী প্রজন্ম এবং বিশ্ববাসী ৭১-এর গণহত্যা ও যুদ্ধাপরাধের ব্যাপকতা ও ভয়াবহতার পাশাপাশি জানতে পারবে কী ধরনের প্রতিকুলতার ভেতর ৪০-৫০ বছর পরও সাফল্যের সঙ্গে বিচার কার্যক্রম সম্পন্ন হয়েছে।

প্রধান বিচারপতির সঙ্গে সাক্ষাত শেষে সংগঠনের সভাপতি শাহরিয়ার কবির সাংবাদিকদের বলেন, ‘অপরাধী সংগঠন হিসেবে জামায়াত ইসলামীর বিচার দ্রুত শুরু করার দাবি করেছি। দীর্ঘদিন বিচার না পেয়ে শহীদ পরিবারের অনেক সদস্য ও যুদ্ধাপরাধীরা মারা যাচ্ছে। প্রধান বিচারপতি আমাদের দাবিগুলো মনোযোগ দিয়ে শুনেছেন। তিনি আশ্বস্ত করেছেন, প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে এ বিষয়ে আলোচনা করা হবে। তিনি বলেন, আমরা আশা করবো মুক্তিযুদ্ধের ৩০ লাখ শহীদ পরিবার এবং বিচারপ্রত্যাশী গোটা জাতির স্বার্থে আমাদের এ আবেদন বিবেচনা করা হবে।’

আরও পড়ুন

×