‘আবার হাঁটতে পারব স্বপ্নেও ভাবিনি’

কোলাজ
আব্দুল হামিদ
প্রকাশ: ২২ মার্চ ২০২৪ | ১৯:১২
চার শিশুসন্তান ও পঙ্গু স্ত্রী সালমা আক্তারকে নিয়ে জীবনযুদ্ধে চালিয়ে যাওয়া শফিকুল ইসলামের পরিবারে এখন খুশির আবহ। কৃত্রিম পা লাগানোর পর সালমার চোখেমুখে এখন হাসির ঝিলিক। সমাজকল্যাণ মন্ত্রণালয়ের উদ্যোগে তিনি আবার চলাফেরা করতে পারছেন। সালমা বলেন, ‘আবার হাঁটতে পারব, স্বপ্নেও ভাবিনি। অনেক ভালো লাগছে। বিশ্বাসই করতে পারছি না ক্রাচে ভর ছাড়া হাঁটতে পারব।’
গত ১৩ ফেব্রুয়ারি ‘চার শিশুপুত্র, পঙ্গু স্ত্রী নিয়ে অথৈ সাগরে শফিকুল’ শীর্ষক প্রতিবেদনটি সমকালে প্রকাশিত হয়। প্রতিবেদনটি সমাজকল্যাণমন্ত্রী ডা. দীপু মনির নজরে এলে তিনি জাতীয় প্রতিবন্ধী উন্নয়ন ফাউন্ডেশনকে এ বিষয়ে ব্যবস্থা নেওয়ার নির্দেশ দেন। সর্বশেষ গতকাল বৃহস্পতিবার মিরপুর জাতীয় প্রতিবন্ধী উন্নয়ন ফাউন্ডেশনের কার্যালয়ে সালমার পরিবার সমাজকল্যাণমন্ত্রীর সঙ্গে দেখা করে। সেখানে তাঁকে শারীরিক প্রতিবন্ধীদের বৃত্তিমূলক প্রশিক্ষণ ও পুনর্বাসন কেন্দ্র (ইআরসিপিএইচ) থেকে তৈরি কৃত্রিম পা দেওয়া হয়। দুপুর ১২টার দিকে জাতীয় প্রতিবন্ধী উন্নয়ন ফাউন্ডেশন কার্যালয়ে মন্ত্রী সালমাকে বুকে টেনে নেন। সেখানে তাঁর পরিবার ও সন্তানের খোঁজখবর নেন। এ ছাড়া পরিবারটিকে ১০ হাজার টাকা নগদ অর্থও দেন।
সালমা বলেন, ‘আনন্দে চোখে পানি আসছে। সমকালের কাছে কৃতজ্ঞতা। তারাই আমাদের দুর্বিষহ জীবনের গল্প তুলে ধরেছে। এ কৃত্রিম পা দিয়ে আবার স্বাভাবিক জীবনে ফিরতে পারব, কাজ করতে পারব, সন্তানদের নিয়ে চলাফেরা করতে পারব– এসব কিছু অবিশ্বাস্য লাগছে।’
আট মাস আগে নয়াপল্টন এলাকায় রাস্তার পার হওয়ার সময় প্রাইভেটকারের ধাক্কায় ডান পা ভেঙে যায় সালমার। পরে চিকিৎসকের পরামর্শে সেই পা কেটে ফেলতে হয়। একটা স্বাভাবিক জীবন থেকে পঙ্গু জীবনের যন্ত্রণা কাউকে বোঝানো যাবে না। এটা অনেক কষ্টের। দিন আনা দিন খাওয়া সংসারে স্বামী শরিফুলের ওপর যেন পাহাড় চেপে বসে। আমার সুস্থতার জন্য তিনি ৩ লাখ টাকা ঋণ করেছেন, এখনও শোধ করতে পারেননি।
তাঁর স্বামী শফিকুল বলেন, তাঁর স্ত্রী সালমা আগে বাসাবাড়িতে কাজ করতেন। মন্ত্রী মহোদয় কৃত্রিম পা দিয়েছেন। তিনি রিকশা চালান। স্ত্রীকে স্বাভাবিক জীবনে ফিরতে সহযোগিতা করায় সবার কাছে তিনি ঋণী।
- বিষয় :
- সমাজকল্যাণ মন্ত্রণালয়