ঢাকা রবিবার, ০৬ জুলাই ২০২৫

সৈয়দ শামসুল হকের লেখনী প্রজন্মের চেতনা জাগ্রত করেছে

পাঠচক্রে বিশিষ্টজন

সৈয়দ শামসুল হকের লেখনী প্রজন্মের চেতনা জাগ্রত করেছে

সমকালের সভাকক্ষে সোমবার সব্যসাচী লেখক সৈয়দ শামসুল হকের ‘নিষিদ্ধ লোবান’ বইয়ের ওপর পাঠচক্রে বিশিষ্টজনের সঙ্গে অংশগ্রহণকারীরা সমকাল

সমকাল প্রতিবেদক

প্রকাশ: ০১ এপ্রিল ২০২৪ | ২৩:৩৮ | আপডেট: ০৩ এপ্রিল ২০২৪ | ১৪:৫৪

সৈয়দ শামসুল হক সব পরিস্থিতিতে তাঁর লেখা চালিয়ে গেছেন। বাঙালির বিভিন্ন আন্দোলন-সংগ্রামের সব ঘটনা তিনি লিপিবদ্ধ করে গেছেন। তিনি লেখনীর মাধ্যমে তরুণ প্রজন্মের মধ্যে মুক্তিযুদ্ধের চেতনা জাগ্রত করতে পেরেছেন। গতকাল সোমবার দৈনিক সমকালের সভাকক্ষে সব্যসাচী লেখক সৈয়দ শামসুল হকের ‘নিষিদ্ধ লোবান’ বইয়ের ওপর আয়োজিত এক পাঠচক্রে বিশিষ্টজন এসব কথা বলেন। সমকাল সুহৃদ সমাবেশ এর আয়োজন করে।

সমকালের উপদেষ্টা সম্পাদক আবু সাঈদ খানের সভাপতিত্বে এবং সিনিয়র সাব-এডিটর মো. আসাদুজ্জামানের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্য দেন সৈয়দ শামসুল হকের স্ত্রী কথাসাহিত্যিক ও মনোরোগ বিশেষজ্ঞ আনোয়ারা সৈয়দ হক। অন্যদের মধ্যে বক্তব্য দেন সমকালের উপসম্পাদক মাহবুব আজীজ, সহযোগী সম্পাদক শেখ রোকন, হেড অব ইভেন্টস হাসান জাকির প্রমুখ। পাঠ প্রতিক্রিয়ায় অংশ নেন অতীশ দীপঙ্কর বিশ্ববিদ্যালয়ের সহকারী অধ্যাপক শারমিন আক্তার, লেখক সাগর মল্লিক, কুশম তাহেরা, সমকালের সহ-সম্পদাক রিক্তা রিচি, ঢাকা কেন্দ্রীয় কমিটির সুহৃদ আকবর আলী ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সুহৃদ রিফতি আল জাবেদ। এছাড়া আলোচনায় যুক্ত হন প্যারা অলিম্পিয়াড কোচ মো. সোহেল, ঢাকা ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটির শিক্ষক নবনীতা চক্রবর্তীসহ সুহৃদ সমাবেশের বিভিন্ন ইউনিটের সদস্যরা।

অনুষ্ঠানে আনোয়ারা সৈয়দ হক বিভিন্ন সময় সংঘটিত আন্দোলন-সংগ্রামের স্মৃতিচারণ করেন। তিনি বলেন, ‘সৈয়দ শামসুল হকের প্রতিটি বই-ই একেকটি উপাখ্যান। প্রতিটি বই যেন একেকটি তোরণদ্বার। সেখানে প্রবেশ করে মণি-মুক্তা আহরণ করা যায়। যে কোনো পরিস্থিতিতে তিনি ক্রমাগত লিখে গেছেন।’ তিনি তরুণ প্রজন্মকে ক্রমাগতভাবে লেখালেখির পরামর্শ দেন।

আনোয়ারা সৈয়দ হক আরও বলেন, ‘আমি পাকিস্তান এবং পরবর্তী সময়ে বাংলাদেশের মিলিটারিতে কাজ করেছি। আমরা মুক্তিযুদ্ধের আগে, মুক্তিযুদ্ধের সময় এবং পরবর্তী সময়ে এ দেশে সামরিক শাসনের ভয়াবহ অবস্থা পার করেছি। ১৯৭১ সালের ২৫ মার্চ থেকে ২২ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত আমি আর সৈয়দ শামসুল হক একসঙ্গে ছিলাম। এই সময়কার প্রতিটি ঘটনা তিনি ডকুমেন্টেড করেছেন। তাঁর যত উপন্যাস রয়েছে, এর মধ্যে নিষিদ্ধ লোবান অন্যতম শ্রেষ্ঠ উপন্যাস। তিনি বইয়ের মাধ্যমে তরুণ প্রজন্মের মধ্যে মুক্তিযুদ্ধের চেতনা জাগ্রত করতে পেরেছেন।’

মাহবুব আজীজ বলেন, ‘সৈয়দ শামসুল হকের মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক লেখনী অনেক গুরুত্বপূর্ণ। তাঁর লেখার মাধ্যমে নতুন প্রজন্ম মুক্তিযুদ্ধ সম্পর্কে আরও গভীরভাবে জানতে পারবে।’

শেখ রোকন বলেন, ‘সৈয়দ শামসুল হক তাঁর বইয়ে পাঠকের জন্য চিন্তা করার জায়গা রাখেন। তিনি নিষিদ্ধ লোবান বইয়ে গল্পের আড়ালে মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস তুলে ধরেছেন।’

হাসান জাকির বলেন, ‘স্বাধীনতা আনতে এ দেশের মানুষ কী পরিমাণ ত্যাগ-তিতিক্ষা করেছেন, তা স্বল্প পরিসরে নিষিদ্ধ লোবান বইয়ে সৈয়দ শামসুল হক তুলে ধরেছেন।’

আবু সাঈদ খান বলেন, ‘নিষিদ্ধ লোবান বইটি একাত্তর পৃষ্ঠার। এই একাত্তর পৃষ্ঠা যেভাবে আমার চেতনাকে নাড়া দিয়েছে, তা লিখতে গেলে আরও ১৯০০ পৃষ্ঠা হবে। সৈয়দ শামসুল হক নিষিদ্ধ লোবান বইয়ে বিলকিস এবং প্রদীপ চরিত্রের মধ্য দিয়ে মুক্তিযুদ্ধের মতো একটি জনযুদ্ধের চরিত্রকে ফুটিয়ে তোলার চেষ্টা করেছেন।’

আরও পড়ুন

×