ঢাকা শনিবার, ০৫ জুলাই ২০২৫

সিগারেট বিক্রিতে এমআরপি না মানায় তামাক কোম্পানির শাস্তি দাবি

সিগারেট বিক্রিতে এমআরপি না মানায় তামাক কোম্পানির শাস্তি দাবি

ছবি: সংগৃহীত

সমকাল ডেস্ক

প্রকাশ: ০৩ এপ্রিল ২০২৪ | ০৪:৩৫ | আপডেট: ০৩ এপ্রিল ২০২৪ | ১৫:১৭

জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর) চলতি অর্থবছরের বাজেটে সর্বোচ্চ খুচরা মূল্যে সিগারেট বিক্রি নিশ্চিতের বিধান রাখলেও তামাক কোম্পানি তা অবজ্ঞা করে সরকারের কোটি কোটি টাকা রাজস্ব ফাঁকি দিয়ে আসছে। গত জুনে এ বিষয়ে প্রজ্ঞাপন জারি হলেও এখনো সর্বোচ্চ খুচরা মূল্যের চেয়ে বেশি দামেই সিগারেট বিক্রি করা হচ্ছে। সরকারের নীতি অমান্য করে এমআরপির চেয়ে বেশি দামে সিগারেট বিক্রি করে রাজস্ব ফাঁকি অব্যাহত রাখায় তামাক কোম্পানিকে শাস্তির আওতায় নিয়ে আসতে হবে। একইসঙ্গে আইন অমান্য করে যতদিন রাজস্ব ফাঁকি দিয়ে এসেছে সেই টাকাও আদায় করতে হবে।

মঙ্গলবার ‘তামাকজাত দ্রব্যের মূল্য বৃদ্ধিতে সর্বোচ্চ খুচরা মূল্য বাস্তবায়নের প্রয়োজনীয়তা’ শীর্ষক এক ওয়েবিনারে বক্তারা এ দাবি করেন। বাংলাদেশ নেটওয়ার্ক ফর টোব্যাকো ট্যাক্স পলিসি (বিএনটিটিপি) এ ওয়েবিনারের আয়োজন করে।

ওয়েবিনারে সভাপতিত্ব করেন ন্যাশনাল হার্ট ফাউন্ডেশনের রোগতত্ত্ব ও গবেষণা বিভাগের বিভাগীয় প্রধান এবং বিএনটিটিপির টেকনিকাল কমিটির সদস্য অধ্যাপক ডা. সোহেল রেজা চৌধুরী।

এতে প্যানেল আলোচক হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ ক্যান্সার সোসাইটির সভাপতি ও বিএনটিটিপির টেকনিকাল কমিটির সদস্য বিশিষ্ট ক্যান্সার বিশেষজ্ঞ অধ্যাপক ডা. গোলাম মহিউদ্দিন ফারুক, জনস্বাস্থ্য আইন বিশেষজ্ঞ ও নীতি বিশ্লেষক অ্যাডভোকেট সৈয়দ মাহবুবুল আলম তাহিন এবং একাত্তর টেলিভিশনের বিশেষ প্রতিনিধি ও তামাক নিয়ন্ত্রণ বিষয়ক গবেষক সুশান্ত সিনহা।

ওয়েবিনারে মূল বক্তব্য উপস্থাপন করেন বিএনটিটিপি’র সচিবালয় ব্যবস্থাপক হামিদুল ইসলাম হিল্লোল এবং সঞ্চালনা করেন বিএনটিটিপি’র প্রজেক্ট অফিসার ইব্রাহীম খলিল।

বক্তারা বলেন, শুধু ক্ষুদ্র বিক্রেতারা নয়, দেশের সুপারশপগুলোও নির্ধারিত সর্বোচ্চ খুচরা মূল্যের চেয়ে বেশি দামে সিগারেট বিক্রি করছে। অন্য সব পণ্য তারা নির্ধারিত দামে বিক্রি করলেও সিগারেটের ক্ষেত্রে তারা আইন অমান্য করছে। এর পেছনে তামাক কোম্পানির প্ররোচনা রয়েছে বলে বক্তারা মনে করেন।

বক্তারা বলেন, এমআরপির চেয়ে বেশি দামে বিক্রি করে তামাক কোম্পানি যেভাবে আয় করছে সেটা অপ্রদর্শিত থাকছে। তাদের এ অপ্রদর্শিত আয় অর্থনীতিতে কালো টাকা হিসেবে গণ্য করা হয়। এমআরপিতে সিগারেট বিক্রি নিশ্চিত করা না গেলে তাদের কালো টাকা আরও বেড়ে যাবে। ফলে তাদেরকে শাস্তির আওতায় নিয়ে আসার পাশাপাশি এমআরপি নিশ্চিতে এনবিআর ও জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরকে দ্রুত পদক্ষেপ নিতে হবে।

তারা আরও বলেন, তামাকজাত দ্রব্যের ওপর করারোপে বর্তমানে প্রচলিত অ্যাড ভেলোরেম পদ্ধতি জটিল ও ত্রুটিপূর্ণ। বাজেট প্রস্তাবে তদূর্ধ্ব’ শব্দের ব্যবহার করে বহুস্তরভিত্তিক কর কাঠামোকে আরও বহুস্তরে নিয়ে যাওয়ার সুযোগ দেয়া হচ্ছে। একইসঙ্গে তদূর্ধ্ব শব্দের কারণে খুচরা শলাকায় সিগারেট বিক্রিতে আরও বেশি দাম নেয়া হচ্ছে। যার ফলে তামাকজাত দ্রব্যের দাম বাড়লেও তামাক ব্যবহারকারীর সংখ্যা কাঙ্ক্ষিত হারে কমছে না বিপরীতে ঠিকই কোম্পানি লাভবান হচ্ছে। ফলে জনস্বাস্থ্য সুরক্ষায় ও রাজস্ব ফাঁকি বন্ধে আসন্ন অর্থবছরে বাজেট প্রস্তাব থেকে তদূর্ধ্ব শব্দটি বাতিল করতে হবে। 

তামাক রপ্তানিতে ২৫ শতাংশ শুল্ক পুনর্বহাল প্রসঙ্গে বক্তারা বলেন, সিগারেট ও তামাক রপ্তানিতে একসময় ২৫ শতাংশ শুল্ক কার্যকর ছিল। কিন্তু সেটা ২৫ শতাংশ থেকে ১৫ শতাংশ এবং পরে শূন্য শতাংশ করা হয়। এ থেকে গত অর্থবছরে সরকার প্রায় ৪০০ কোটি টাকা রাজস্ব পেতে পারতো। যা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের একবছরের বাজেটের সমান। ফলে জনস্বাস্থ্য সুরক্ষায় তামাক রপ্তানির শুল্ক ২৫ শতাংশে পুনর্বহাল করা জরুরি। 

আরও পড়ুন

×